বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ‘বঞ্চিত’ করে 
এম ফিলে নিজের পড়ুয়াকে সুযোগ যাদবপুরের

অর্পণ সেনগুপ্ত, কলকাতা: জায়গা দিতে হবে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। তাই মেধার সঙ্গে আপস করেই এম ফিলের আসন ভর্তি করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এমন অভিযোগে সরগরম দেশের প্রথম সারির এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অন্দরমহল। সংস্কৃতের এম ফিল কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে বিষয়টি সামনে এসেছে। তবে অন্যান্য বিষয়েও এরকম ঘটনা ঘটেছে বলে অধ্যাপকদের একাংশের দাবি।
এখানে এম ফিলে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তফসিলি ছাত্রী। কাকদ্বীপের প্রত্যন্ত এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারের ওই ছাত্রী অত্যন্ত মেধাবী। ইউজিসি নেট উত্তীর্ণ হয়ে ন্যাশনাল ফেলোশিপ ফর শিডিউলড কাস্ট (এনএফএসসি) বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এম ফিল বা পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হলে মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকার বৃত্তি তাঁকে দিতে শুরু করবে ইউজিসি। অভাবের পরিবারে সেই টাকা অনেক। এদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম ফিল কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি তখনও না বেরনোয় যাদবপুরে আবেদন করেন তিনি। লিখিত পরীক্ষা দারুণভাবে দিয়ে ২২.৫ স্কোর করেন। ডাক পান ইন্টারভিউয়েও। তবে চূড়ান্ত তালিকায় তিনি স্থান পাননি। তাঁর পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে লিখিত পরীক্ষায় ১১ পাওয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মাস্টার ডিগ্রির ছাত্রকে। তিনিও ওই জাতীয় স্কলারশিপ পেয়েছেন।
বঞ্চিত ওই ছাত্রী ক্যাম্পাসে গিয়ে জানতে পারেন, যাদবপুর এনএফএসসি স্কলারশিপের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত নিজেদের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এই নিয়মের কথা আগে কেন জানানো হয়নি তা জানতে চেয়ে কোনও সদুত্তর পাননি ওই ছাত্রী। বাছাই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এক অধ্যাপক বলেন, সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাদবপুরের কোনও ছাত্র-ছাত্রী যদি এনএফএসসি পেয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে ফেরানো হবে না। তাই এই কয়েকজনকে সিট বাড়িয়ে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। মূল মেধাতালিকায় এঁরা কেউই জায়গা পাননি, অভিযোগকারী ছাত্রীও নয়। তবে এটা ঠিকই, মেধার প্রশ্নে ওই ছাত্রী আপত্তি জানাতে পারেন। সিট বাড়িয়ে যদি ভর্তি নেওয়া হয় তাহলে তিনি কেন সুযোগ পেলেন না, এই প্রশ্ন ওঠা অসঙ্গত নয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো এবং লোকবল সীমিত। তাই নিজের ছাত্রকেই বেছে নিয়েছে। যে-কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ই তা করে এবং তাই হওয়া উচিত।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বা জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, এই ঘটনার কথা শুনেছি। তবে এর জন্য মূল দায়ী ইউজিসি। কারণ এম ফিলের সুপারভাইজার হিসেবে খুব অল্প সংখ্যক গবেষক নেওয়ার কোটা বেঁধে দিয়েছে তারা। প্রফেসররা তিনজন, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসররা দু’জন এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসররা একজন এম ফিল পড়ুয়ার তত্ত্বাবধান করতে পারবেন। এই কোটা আরও বাড়ানো হলে ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হবেন না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ দেখার একটা প্রবণতা রয়েছে। এটা একদিকে যেমন ভালো তবে যোগ্য কাউকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। মাস্টার ডিগ্রিতে থাকলেও, এম ফিল বা পিএইচডির মতো কোর্সে কিন্তু নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য কোনও কোটা নেই। এক্ষেত্রে একমাত্র বিবেচ্য মেধা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অন্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের এনএফএসিতে সুযোগ দেওয়া হয়। না-হলে যতদিন বাদে তাঁরা এধরনের কোর্সে যুক্ত হবেন ততদিনের বৃত্তি পাওয়া থেকে তাঁরা বঞ্চিত হবেন। মোট প্রাপ্য থেকে তা বাদ যাবে। গরিব বাড়ির ছেলেমেয়েদের কাছে সেটা বড় ক্ষতি।

15th     January,   2022
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ