বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

তিন বেলা সাফাই, নাগরিক
পরিষেবায় সন্তুষ্ট ভবানীপুর

রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: দৃশ্য ১: সকাল ১০টা ২০ মিনিট। ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজার তখন জমজমাট। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে স্বাভাবিক জনজীবনের প্রতিচ্ছবি। সেখানে পুরসভার সাফাই কর্মীরা হাজির গাড়ি নিয়ে। নোংরা, আবর্জনা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
দৃশ্য ২: এবারও ঘটনাস্থল যদুবাবুর বাজার। বেলা তখন ১টা বেজে ৫৭ মিনিট। রাস্তার ধারে পড়ে থাকা প্লাস্টিক, সব্জি ও ফলের খোসা একত্রিত করে গাড়িতে তুলছেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা।
দু’টি ছবিই বলে দিচ্ছে, ভবানীপুরের প্রাণকেন্দ্র যদুবাবুর বাজারে প্রতিদিন নিয়ম করেই সাফাইয়ের কাজ হয়। এর সঙ্গে সংযোজিত তিন নম্বর ছবিটিও। সময় তখন দুপুর ২টা বেজে ৪০ মিনিট। দেবেন্দ্র ঘোষ রোডে সাফাইয়ের কাজে ব্যস্ত একদল পুরকর্মী। ‌আরও একটু এগিয়ে হাজরা মোড় সংলগ্ন অংশ বা পরবর্তীতে কালীঘাট মন্দিরে প্রবেশের অংশে সাফাই কর্মীদের কর্মব্যস্ততার ছবি চোখে পড়েছে।
‘কেমন আছে আপনার শহর। আর আপনিই বা কেমন আছেন?’— ভবানীপুর থানার উল্টোদিকে এক প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান থেকে বেরনো কাছারিপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব স্বস্তি আগরওয়ালকে প্রশ্ন করলে উত্তর এল, ‘আমি ভালো আছি, তাই তুমিও থাকবে ভালো।’ তুমিটা কে? এবার জবাব, ‘যারা পুর পরিষেবা দিচ্ছে তারা।’ পুরভোটের প্রাক লগ্নে ‘তুমি’ শব্দটা যে রাজ্যের শাসকপক্ষকে উদ্দেশ্য করেই, বুঝিয়ে দিলেন ওই ব্যক্তি।
ভবানীপুরের অলিগলি ঘুরলেই টের পাওয়া যাচ্ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। দেওয়াল লিখন, পোস্টার, হোর্ডিং, ফ্লেক্স, ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছে ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড। তৃণমূল কংগ্রেস প্রচারে যে অনেকটাই এগিয়ে, তা জানান দিচ্ছে দেওয়ালগুলি। এমনকী রাখাল মুখার্জি রোডের ঠিক মুখে ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের এসইউসিআই প্রার্থী দেবু সাউয়ের দেওয়াল লিখনও চোখে পড়েছে। কিন্তু ভবানীপুরের গোটা তল্লাটে ‘পদ্ম’ শিবিরের দেওয়াল লিখন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে সিপিএম প্রার্থীদের দেওয়াল লিখন ও পোস্টার জানান দিচ্ছে, তারাও পুরভোটের লড়াইয়ে রয়েছে। দেওয়াল লিখন যে নেই, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী ইন্দ্রজিৎ খটিক। তাঁর দাবি, কয়েকদিন পর আমরা হোর্ডিং লাগাব। আর তৃণমূল বলছে, কিছুদিন আগেই ভবানীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে বিজেপি’র উপর মানুষের আর আস্থা নেই।
দু’পক্ষের লড়াইয়ে রাজনৈতিক দিক থেকে তৃণমূলের কাছে স্বস্তির ঘটনা ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায় কো-অর্ডিনেটর রতন মালাকারের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার। এদিকে, ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর ‘এসো হে’ স্লোগান দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া একটি ব্যানার এখনও জ্বলজ্বল করছে। তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার অনাস্থা নেই।
উন্নয়নের ছাপ স্পষ্ট গোটা ভবানীপুরে। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, আলো, নিকাশি, সৌন্দর্যায়নে কলকাতা পুরসভা যে কাজ করেছে, তা জানাতে ভুললেন না স্থানীয়রা। কালীঘাট মন্দিরে স্কাইওয়াকের কাজ চলছে। সেটা আরেকটু দ্রুতগতিতে হোক, চাইছেন মন্দিরে আসা সময় কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্নাদেবী।
আর একটি বিষয় এলাকাবাসী তুলে ধরেছেন, ভারী বৃষ্টিপাত হলে কিছু এলাকায় জল জমে। আলিপুর বডিগার্ড লাইনে জমা জল সরাতে সেখানে পাম্পিং স্টেশনের ব্যবস্থা করছে পুরসভা। অভিযোগ, জাস্টিস চন্দ্র মাধব রোড, রমেশ মিত্র রোড, রূপচাঁদ মুখার্জি লেন, নন্দন রোডে ভারী বৃষ্টি হলে জল জমে। যদিও বিদায়ী ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের দাবি, ভারী বৃষ্টিতে জল জমলেও তা ঘণ্টাখানেকের মধ্যে নেমে যায়। এখানেই ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অসীম বসু বলেছেন, যে কোনও সময় এক ফোনে পাওয়া যায় আমাদের। করোনা হোক বা উম-পুন— তার প্রমাণ মিলেছে বারবার। অন্য দলের কাউকে তো পাওয়াই যায় না। দেওয়ালের ভাষাও বলে দিচ্ছে বিরোধীরা নেই? যদিও ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী বরুণ দাস বলছেন, উন্নত নাগরিক পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারে একমাত্র বামফ্রন্টই।
কমিউনিটি হল ‘জয়হিন্দ ভবন’ যে বিপুল উপকার করেছে, তা জানাতে ভুললেন না এলাকাবাসী। তাঁরা চাইছেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির আরও একটু আধুনিকীকরণ। তার সঙ্গে সেজে উঠুক ছোট পার্কগুলি। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভবানীপুর মিনি ভারতবর্ষ। সবাই মিলেই শহরকে আরও সুন্দর করে তুলব।

6th     December,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ