বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

জনপ্রিয় প্রধান শিক্ষকের বদলিতে
স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ
বসিরহাট

সংবাদদাতা, বসিরহাট: ‘ভালোবাসার অত্যাচার’ বোধ হয় একেই বলে! কিন্তু যাঁর প্রতি ভালোবাসার এই প্রকাশ, তিনি নয়, ‘অত্যাচার’ সহ্য করলেন অন্যরা। এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জনপ্রিয় প্রধান শিক্ষকের বদলির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শিশুদের সঙ্গে নিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন স্কুলের গেটে। ভিতরে আটকা পড়লেন অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষিকারা। শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে বসিরহাটের দক্ষিণ পিফা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অবশেষে অভিভাবকদের দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন স্কুলের বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষিকারা। সেই প্রতিশ্রুতি পেয়ে গেটের তালা খুলে নেওয়া হয়। বসিরহাট নতুন চক্রের এসআই সুকন্যা গুহ বলেন, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অন্যত্র বদলির নির্দেশ আসায় তিনি চলেও গিয়েছেন। অভিভাবক ও পড়ুয়াদের আবেগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
২০১৪ সাল থেকে বসিরহাটের এক নম্বর ব্লকের দক্ষিণ পিফা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন মধুসূদন সানা। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মধুসূদনবাবুর হাত ধরেই এই স্কুলের যাবতীয় উন্নতি হয়েছে। পরিকাঠামো থেকে শুরু করে পঠনপাঠন—সবেতেই তাঁর সময়ে নজর কাড়ে স্কুলটি। দোতলা বিদ্যালয় ভবন, পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়। একদিন কোনও পড়ুয়া ক্লাসে না এলে তিনি তার বাড়িতে পৌঁছে যেতেন বা স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে ফোন করতেন অভিভাবকদের। কয়ালবাড়ি, কাঠাখালি, পিফা, রাঘবপুর, নতুন আবাদ সহ আরও কয়েকটি গ্রামের প্রায় ২২৮ জন ছাত্রছাত্রী এখন এই বিদ্যালয়ে পড়ে। একজন পার্শ্বশিক্ষক সহ মোট আটজন শিক্ষক, শিক্ষিকা রয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, এসবই সম্ভব হয়েছে প্রধান শিক্ষকের জন্য। এমন একজন শিক্ষককে হঠাৎ বদলি করে দেওয়ার খবর চাউর হতেই এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ ছেলেমেয়েদের নিয়ে অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে ফিরিয়ে আনার দাবিতে সোচ্চার হন। প্ল্যাকার্ডে দাবি লিখে তাঁরা স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। মিড-ডে-মিলের খাবার দিতে এদিনও স্কুলে এসেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরা ভিতরে আটকা পড়েন। স্কুলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন স্যারকে বদলি করা হল, সে বিষয়ে আমরা পুরোপুরি অন্ধকারে। মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন। আমরাও চাই, প্রিয় প্রধান শিক্ষক যেন তাঁর পূরনো স্থানেই ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে যাঁকে নিয়ে এতো হইচই, সেই মধুসূদনবাবু বলেন, আমাকে বাদুড়িয়ার একটি স্কুলে বদলি করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশে ইতিমধ্যে ওই স্কুলে যুক্ত হয়েছি। বদলির কারণ জানতে চাইলে আমাকে বলা হয়, উৎসশ্রীতে আমিই নাকি বদলির আবেদন করেছিলাম। এ কথা ঠিক নয়।
স্কুলের শিক্ষিকা টগরী মণ্ডল বলেন, মধুসূদনবাবু ছিলেন আমাদের সকলের অত্যন্ত কাছের মানুষ। তিনি ফিরে এলে আনন্দ পাব। বিক্ষোভকারী শম্পা সাহা, অসীমা সাহা, ফুলজান বিবিরা বলেন, যেভাবে দপ্তরে দপ্তরে ছুটে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা ছাত্রছাত্রীদের পাইয়ে দিতেন প্রধান শিক্ষক, তাতে আমরা অভিভূত। মিড-ডে-মিলের রান্নার গুণমানের দিকেও তাঁর নজর থাকত। পড়ুয়াদের খেতে দেওয়ার আগে নিজেই খেয়ে দেখতেন তা। আমরা চাই, সরকার ওঁকে ফের এই স্কুলেই পাঠাক। 

28th     November,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ