নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: একেই বলে গ্রহের ফের! কাশী মিত্র রোডে ‘ক্লায়েন্ট’-এর বাড়ি থেকে ফেরার পথে পরপর দু’বার দুষ্কৃতীর খপ্পরে পড়ে দু’টি মোবাইল ফোন, সোনার হার, তিনটি আংটি, নগদ সাত হাজার টাকা খোয়ালেন এক শখের জ্যোতিষী। শুক্রবার রাতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে চিৎপুর থানার ১১০ নম্বর কাশীপুর রোডে।
সৌরভ চক্রবর্তী নামে ওই জ্যোতিষীর কথায়,  ঘড়িতে তখন সাড়ে ছ’টা থেকে পৌনে সাতটা বাজে। রাস্তার মাঝে হঠাৎ এক ব্যক্তি হন্তদন্ত হয়ে এসে জানাল, তার মোবাইল ছিনতাই হয়ে গিয়েছে। ফোন করার নাম করে সে আমার ফোনটা চাইল।  ফোনটা হাতে দিতেই এক দৌড়ে বেপাত্তা সেই লোক!
ঠিক এই সময়, বাইকে চেপে দুই যুবক ঘটনাস্থলে আসে। পুলিসে অভিযোগ জানানোর জন্য আমাকে বাইকে চেপে থানার যাওয়ার পরামর্শ দেয় তারা। আমি তাদের কথায় বিশ্বাস করে বাইকে উঠে বসি। কিন্তু আমার হেলমেট নেই, এই যুক্তিতে তারা সরাসরি থানায় নিয়ে যেতে চায়নি। আমাকে বলা হয়, ওদের বাড়ি থেকে হেলমেট নিয়ে তারা আমাকে চিৎপুর থানায় নিয়ে যাবে।   
এই হেলমেট নেওয়ার নাম করে বাড়ি যাওয়ার অছিলায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ঢুকিয়ে হাত বেঁধে, বুকে ছুরি ধরে আমার গলা থেকে সোনার হার,  তিনটি সোনার আংটি, মোবাইল ফোন  এবং নগদ সাত হাজার টাকা কেড়ে নেয়। এমনকী ওই অবস্থায় আমাকে দাঁড় করিয়ে একটা ভিডিও করা হয়। যাতে আমাকে দিয়ে জোর করিয়ে বলিয়ে নেওয়া হয়, আমি আমার সব সামগ্রী স্বেচ্ছায় তাদের হাতে তুলে দিলাম।  দুষ্কৃতীদের খপ্পর থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রাতেই ওই জ্যোতিষী চিৎপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে চিৎপুর থানার পুলিস। 
দুষ্কৃতীদের বিবরণ শুনে পুলিসের মনে সন্দেহ হয়। তারা ওই তল্লাটের কয়েকজন পরিচিত দুষ্কৃতীর ছবি দেখান জ্যোতিষীকে। সেই ছবি দেখে  সাহেব দাস নামে একজনকে চিহ্নিত করে ওই জ্যোতিষী। এরপর শুক্রবার রাতেই চিৎপুর থানার পুলিস সাহেবকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কৃষ্ণ খাঁড়া নামে অপর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিসের দাবি, সাহেব ডাকাতির মামলায় সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে।  
এদিকে, ধৃতদের শনিবার দুপুরে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে আদালত ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, ধৃতদের  চিহ্নিত করার জন্য টিআই প্যারেডের আবেদন মঞ্জুর করেছে।