বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

পরপর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা
জেলার দেড়শোর বেশি স্কুলের অবস্থা বেহাল
নদীগর্ভে তলিয়ে গেল সাগরের স্কুল

সৌম্যজিৎ সাহা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ঘূর্ণিঝড় যশ এবং তার পরবর্তীকালে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন ব্লকগুলি ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাড়িঘর, খেত-খামার থেকে জল নামার পর নতুন করে জীবন শুরু করেছে এই অঞ্চলের মানুষ। বেশ কিছু জায়গায় মেরামতও হয়েছে বাড়িঘর। তবে সর্বত্রই ভেঙেচুরে একশেষ স্কুলগুলি। গত দেড় বছরের উপর সেভাবে ক্লাস হয়নি স্কুলে। ফলে ভাঙাচোরা অংশ সারানোর তেমন উদ্যোগও ছিল না প্রশাসনের তরফে। এই অবস্থায় যদি স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে সেইসব স্কুলে আর যাই হোক, পড়াশোনার পরিবেশ গড়ে তোলা যাবে না। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এমন স্কুলের সংখ্যা দেড়শো থেকে দু’শো। এদিকে, প্রশাসন অবশ্য স্কুল মেরামতের জন্য কিছু টাকা ইতিমধ্যেই বরাদ্দ করেছে, তবে তা যে পর্যাপ্ত নয়, শিক্ষকদের একাংশের কথাতেই স্পষ্ট।
গত বছর উম-পুনের পর এবছর যশ, দু’টি বড় মাপের ঘূর্ণিঝড় বয়ে গিয়েছে এই অঞ্চলের উপর দিয়ে। তার সঙ্গে দোসর হয়েছে একের পর এক নিম্নচাপ। ফলে প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু স্কুল। এই জেলায় কাকদ্বীপ ও ক্যানিং মহকুমায় সব থেকে বেশি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। কোথাও ছাদ ভেঙে পড়েছে, কোথাও আবার ফাটল ধরেছে দেওয়ালে। কোনও স্কুলে শোচনীয় অবস্থায় পড়ে রয়েছে শৌচালয়। ক্লাসরুমের হালও তথৈবচ। জানা গিয়েছে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ১০০টি নতুন ক্লাসরুম নির্মাণের প্রস্তাব পাঠিয়েছে শিক্ষাদপ্তরে।
এদিকে, বুধবার ভরা কোটালে সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপে নদীগর্ভে তলিয়ে গেল একটি আস্ত স্কুল। এদিন সকালে হুগলি নদীর পাড় ধসে নিশ্চিহ্ন হয়েছে খাসিমারা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়টি। এই স্কুলে জনা সত্তর পড়ুয়া রয়েছে। আতান্তরে পড়েছে তারা। গোড়া থেকে গাছ কেটে ফেলার পর গুঁড়ির শেষাংশ যেভাবে পড়ে থাকে, সেভাবেই শুধু জেগে রয়েছে স্কুলঘরের ভিতটি। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, কাছেপিঠে কোনও উঁচু জায়গায় নতুন করে স্কুল গড়ার চিন্তাভাবনা চলছে।  
দেড়শোরও বেশি স্কুলে বড়সড় মেরামতি দরকার। এমনটাই মনে করছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অজিত নায়েক। তাঁর কথায়, জেলার সর্বত্র না হলেও সুন্দরবনের ব্লকগুলিতে যেমন নামখানা, কাকদ্বীপ, সাগর, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা ইত্যাদি জায়গায় বহু স্কুলের অবস্থা খুব খারাপ। সেগুলি মেরামতির জন্য শিক্ষাদপ্তর যে অর্থ বরাদ্দ করেছে, তা পর্যাপ্ত নয়। আরও বেশি টাকা চাওয়া হয়েছে। এই জেলায় দীর্ঘ উপকূল রয়েছে। দুর্যোগের প্রভাব সব থেকে বেশি পড়েছে এই উপকূল অংশে। ফলে ক্ষতির বহরও অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি। তবে এ কারণে যাতে পঠনপাঠন আটকে না যায়, সে ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
ফাঁপরে পড়েছে প্রাথমিক স্কুলগুলি। কারণ হাইস্কুলের নিজস্ব একটি তহবিল থাকে। সেই টাকা বিভিন্ন খাতে খরচ করা যায়। অনেক স্কুল ওই তহবিলের টাকায় ছোটখাট মেরামতির কাজ করিয়ে নিয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলগুলির হাতে টাকা না থাকায় তাদের বিল্ডিংগুলি ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এখন ভরসা সরকার। তারা অনুদান দিলে তবেই সংস্কার হবে স্কুলগুলির। জেলার যে সব স্কুলের আমূল সংস্কার দরকার, তারা বসে রয়েছে টাকা আসার অপেক্ষায়। অজিতবাবু বলেন, আশা করছি তাড়াতাড়ি টাকা এসে যাবে।

21st     October,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ