বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

গড়িয়াহাটে জোড়া খুন
লরি রেখে সিসি ক্যামেরা
আড়াল, নেপথ্যে কারা?

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে যে বাড়িতে সুবীর চাকি খুন হয়েছেন, সেই বাড়ির সামনে এমনভাবে একটি লরি দাঁড় করানো ছিল, যাতে ঢাকা পড়েছে উল্টোদিকের বাড়িতে থাকা সিসি ক্যামেরা। তাহলে কি ইচ্ছা করেই ক্যামেরাকে আড়াল করতে লরি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারী অফিসাররা। এটা নিছক কাকতালীয়, নাকি এর পিছনেও রয়েছে ঠান্ডা মাথার পরিকল্পনা, সেই রহস্যেরও উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে। আশপাশের সিসিটিভি’র ফুটেজের উপর ভরসা করেই তদন্ত চালাতে হচ্ছে তাঁদের। পাশাপাশি আততায়ীর সংখ্যা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে।
জোড়া খুনের তদন্তে সিসিটিভি’র ফুটেজ এবং মোবাইল ফোনের কল ডিটেলসই এখন ভরসা তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, সুবীরবাবু ও তাঁর গাড়িচালক রবীন মণ্ডলের কল লিস্ট ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছেন তাঁরা। রবিবার যে ব্যক্তি ওই গাড়িচালককে ফোন করেছিলেন, কল লিস্টের সূত্র ধরেই তাঁর পরিচয় জেনেছে পুলিস। তিনি গড়িয়াহাট এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁকে আটক করে কথা বলেছেন অফিসাররা। তদন্তে উঠে এসেছে, বাড়ি বিক্রির জন্য ক্রেতা খোঁজার দায়িত্ব ছিল রবীনের উপর। তিনিই বিভিন্ন দালাল ও ডেভেলপারদের সঙ্গে কথা বলতেন। সেকারণে প্রায়ই গাড়ি নিয়ে কাঁকুলিয়ার বাড়িতে আসতেন। কী কথা হতো, গাড়িচালক তা জানাতেন সুবীরবাবুকে। জানা গিয়েছে, এই বাড়ি বিক্রির ব্যাপারে কয়েকজন স্থানীয় দালালের সঙ্গে কথা বলেছিলেন রবীনবাবু। এই বাড়ি কিনতে চেয়ে গত দু’মাসে কারা কারা ফোন করেছিলেন, তার মধ্যে কার কার সঙ্গে কতক্ষণ কথা বলা হয়েছিল, তার বিশদ তথ্য জোগাড় করেছেন অফিসাররা। এর মধ্যে দালাল ক’জন আর ডেভেলপার কতজন, তা বাছাই করার কাজ শুরু হয়েছে। তদন্তে উঠে আসছে, সুবীরবাবুর সঙ্গে অনেকে কথা বললেও শেষ অবধি দরদামে পোষায়নি। তিনি বাড়ির দাম কমাতে রাজি ছিলেন না। সুবীরবাবুর এক কথা, কথাবার্তা চূড়ান্ত হলে তবেই জমির কাগজপত্র দেখাবেন। রবিবার তিনি কাগজ নিয়েই নিউটাউনের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সেগুলি সঙ্গে থাকলেও, আততায়ী তাতে হাত দেয়নি। অফিসারদের সন্দেহ, সম্ভবত সেই কাগজ হাতবদল ও নগদ লেনদেন হওয়ার কথা ছিল। এই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিস জানতে পেরেছে, আড়াই কাঠা জমির উপর এই বাড়িটির জন্য দেড় কোটি দর দিয়েছিলেন সুবীরবাবু। একাধিক দালাল ও প্রোমোটার দেখতে এসেছিলেন। যদিও দিন কয়েক আগেই ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় রফা হয় একজনের সঙ্গে। সূত্রের খবর, এই টাকার একটা অংশ অগ্রিম পান সুবীরবাবু। পুলিসের অনুমান, অগ্রিম বাবদ সুবীরবাবু যে টাকাপয়সা পেয়েছেন, তা জানতেন চালকও। রবীনবাবু গল্পের ছলে হয়তো কাউকে তা বলে ফেলেছিলেন। তেমন কেউ এই খুনে জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিস মনে করছে। তবে পুলিস প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত, সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছ’টার মধ্যেই খুন হয়েছে। আর পরিচিত হওয়ার সুবাদেই সুবীরবাবুকে খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে আততায়ীরা রবীনবাবুকেও খুন করেছে। পাশাপাশি পুলিসের বক্তব্য, বাড়ি কেনাবেচার ক্ষেত্রে সাধারণত একাধিক দালাল থাকে। এক্ষেত্রেও একাধিক দালালের উপস্থিতি ছিল বলে জানা যাচ্ছে। তবে খুনের সময় তাদের মধ্যে কেউ ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে।
সুবীরবাবু ও চালক রবীন বাদে এই বাড়িতে রবিবার আর কে কে এসেছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর পেলেই তদন্তের কিনারা করা সহজ হয়ে 
যাবে। আততায়ীরা সংখ্যায় কতজন ছিল, সেই ধারণাও পাওয়া যাবে। সেকারণে সিসিটিভি’র ফুটেজই এখন ভরসা তদন্তকারীদের। এই বাড়ির আশপাশে বেশ কয়েকটি বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। একেবারে সামনের বাড়িতেও রয়েছে একই ক্যামেরা। সেই সব সিসিটিভি’র ছবি বিশ্লেষণের কাজ চলছে। ঠিক উল্টোদিকের বাড়ির ক্যামেরা অবশ্য আড়াল হয়ে গিয়েছে একটি লরি দাঁড়িয়ে থাকায়। সুবীরবাবুর মার্সিডিজ গাড়ির সামনেই সেই লরিটি পার্ক করা হয়েছে। ফলে ওই নির্দিষ্ট ক্যামেরার ছবি স্পষ্ট কোনও ধারণা দিতে পারছে না। ওই ছবি দেখে বোঝা যাচ্ছে না, বাড়িতে কে ঢুকল বা বেরল। এখন প্রশ্ন, ওই লরিটি কে এনে দাঁড় করাল? এটি কি প্রতিদিনই এখানে পার্ক করা হয়, নাকি ওইদিনই হঠাৎ করে পার্ক করা হয়েছিল? 

19th     October,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ