বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

জ্ঞানেশ্বরী নাশকতায় দাদাকে নিহত দেখিয়ে
১০ বছর চাকরি, সিবিআইয়ের জালে বোন

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস নাশকতা। সেদিনের কথা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠেন নিহত যাত্রী-পরিজনরা। ১৪৮ জনেরও বেশি মৃতের তালিকায় নাম ছিল কলকাতার অমৃতাভ চৌধুরীর। তিনি আজও জীবিত। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা থেকে ফায়দা তুলতে আটঘাট বেঁধেই নেমেছিলেন জোড়াবাগান এলাকার এই বাসিন্দা। জাল ডিএনএ রিপোর্ট দাখিল করে জ্ঞানেশ্বরীকাণ্ডে মৃতদের তালিকায় নাম ঢোকান অমৃতাভ। সরকারি চাকরি ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ পায় তাঁর পরিবার। রেলের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি পান অমৃতাভের বোন মহুয়া পাঠক। গত ১০ বছর ধরে তিনি সেই পদে কর্মরত। কিন্তু, শেষরক্ষা হল না। রেলের অভ্যন্তরীণ তদন্তে ফাঁস হয়ে গেল এই জালিয়াতির ঘটনা। রেলের পক্ষ থেকে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়।  তার ভিত্তিতে প্রতারণা, ষড়যন্ত্র এবং দুর্নীতি দমন আইনে মামলা রুজু করেছে তারা। শনিবার সিবিআই আধিকারিকরা অমৃতাভের বাড়িতে যেতেই গোটা ঘটনা স্পষ্ট হয়ে যায়। আটক করা হয় অমৃতাভ, মহুয়া এবং তাঁদের বাবা-মাকে।
তদন্তে নেমে প্রথমে রেলের ভিজিল্যান্স দপ্তরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাতে বলা হয়েছিল, অমৃতাভ চৌধুরী এখনও জীবিত। জালিয়াতি করা হয়েছে ভারত সরকারের সঙ্গে। রেলের তরফে করা লিখিত  অভিযোগে বলা হয়, গত ২০১০ সালের ২৮ মে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে ‘দুর্ঘটনা’ ঘটে। মৃতদের পরিবারকে সরকারি চাকরি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রেল। নির্দেশে বলা হয়েছিল, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে ডিএনএ-র নমুনা মিলবে, এমন পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে।  ক্ষতিপূরণ পেতে মৃত ব্যক্তির ডেথ সার্টিফিকেটও জমা দিতে বলা হয়। অভিযোগ, এখানে কারচুপি করেন অমৃতাভ। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট জমা দেয় পরিবার। বাবা মিহির চৌধুরী ও মা অর্চনা দেবী সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করে ৪ লক্ষ টাকা পান। ভুয়ো ডিএনএ রিপোর্ট দেখিয়ে অমৃতাভের বোন মহুয়া রেলে চাকরি জোটান। বর্তমানে শিয়ালদহ ডিভিশনে কর্মরত।
এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শনিবার তাঁদের বাড়িতে যান সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁরা দেখেন, রেলের অভিযোগ সঠিক। অমৃতাভ চৌধুরী জীবিত। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। নিজেকে অমৃতাভ নয় বলেও দাবি করেন। পরে বয়ান বদল করে এও জানান যে মিহির ও অর্চনা চৌধুরী তাঁর বাবা-মা নন। তাঁরা অন্যত্র রয়েছেন। সেই সংক্রান্ত নথি আনতে বলা হলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন অমৃতাভ। তাঁর বোন অবশ্য সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে জাল নথি জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নেন। পরিবারের চার সদস্যকেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
২০১০ সালে রাতে মাওবাদী নাশকতায় ঝাড়গ্রামের সরডিহার কাছে লাইনচ্যুত হয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। সেই সময়ে ডাউন লাইনে উল্টোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে ট্রেনটির ১৪৮ জনেরও বেশি যাত্রী মারা গিয়েছিলেন। অনেকের দেহই শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তদন্তকারীদের ধারণা, সম্ভবত সেই সুযোগকেই কাজে লাগান অমৃতাভ। এর পিছনে আরও ব্যক্তিদের জড়িত থাকার কথা সন্দেহ করা হচ্ছে। -ফাইল চিত্র

20th     June,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ