বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

বাবা, মা, বোন ও ঠাকুমাকে
খুন করে পুঁতে দিয়েছিল ভাই
দাদার অভিযোগে চারমাস পরে উদ্ধার দেহ

নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, মালদহ: চারমাস আগে মা, বাবা, ছোট বোন ও ঠাকুমাকে খুন করে মাটিতে দেহ পুঁতে রেখেছিল ছোটছেলে বলে অভিযোগ। তারপর চারমাস ধরে সেই বাড়িতেই বাস করছিল অভিযুক্ত ছোটছেলে ১৯ বছরের আসিফ মহম্মদ। শনিবার মাটি খুঁড়ে পুলিস উদ্ধার করে সেই চার মৃতদেহ। এদিন সকালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মালদহের কালিয়াচক থানার পুরানো ১৬ মাইল এলাকার গুরুটোলা গ্রাম তো বটেই, স্তম্ভিত সারা রাজ্যের মানুষও। তবে গ্রেপ্তারের পর প্রায় নির্লিপ্ত দেখিয়েছে এখনও পর্যন্ত ঘটনার একমাত্র অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদকে। তার হেফাজত থেকে উদ্ধার হয়েছে কয়েক লক্ষ নগদ টাকা এবং প্রচুর ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটস। তার দাদা আরিফ মহম্মদ ওরফে রাহুলের সূত্রেই এই নৃশংস খুনের ঘটনা চারমাস বাদে জানাজানি হলেও বিষয়টি এতদিন অন্তরালে রাখার কারণে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস। 
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, যে চারজনের দেহ এদিন উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন জাওয়াদ আলি (৫৩), তাঁর স্ত্রী ইরা বিবি (৩৮), তাঁদের মেয়ে রিমা খাতুন (১৬) এবং জাওয়াদের মা আলেকনুর বেওয়া (৭২)। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে প্রথমে তাঁদেরকে ঠাণ্ডা পানীয়ের সঙ্গে কড়া মাদক মিশিয়ে খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিস। পরে তাঁরা অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁদের হাত পা বেঁধে মুখে সেলোটেপ দিয়ে আগে থেকে খুঁড়ে রাখা একটি সুড়ঙ্গ দিয়ে পাশের নিচু ঘরে নিয়ে গিয়ে জলে ডুবিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে পুঁতে দেওয়া হয়।  চারমাসে অনেকটাই বিকৃত হয়ে যাওয়া মৃতদেহগুলি এদিন পুলিস সুপার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উদ্ধার করা হয়। 
পুরো ঘটনাটি আসিফ একাই ঘটায় বলে অভিযোগে প্রকাশ। সে তার বাবার কাছ থেকে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য প্রায়ই চাপ দিত বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। দাদা আরিফকেও সে খুনের চেষ্টা করলেও ধস্তাধস্তি করে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে পুলিসকে জানিয়েছে সে।  এরপরই জীবনহানির আশঙ্কায় বাড়ি ও গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় পালায় সে। এমনই দাবি করেছে আরিফ পুলিসের কাছে।  
কিছুদিন আগে বিপুল পৈতৃক সম্পত্তির কিছুটা অংশ বিক্রি করার লক্ষ্যে ফের দাদার সাথে যোগাযোগ করে আসিফ। সুযোগ বুঝে গ্রামে ফিরে শুক্রবার তাঁর কাকা নৌসাদ মহম্মদকে সব কিছু জানায় দাদা আরিফ। বাবা, মা সহ পরিবারের চার সদস্যকে ভাই আসিফই চার মাস আগেই খুন করে ফেলেছে বলে কাকাকে জানায় আরিফ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পুরো বিষয়টি পুলিসের গোচরে আনে। এরপরেই বীভৎস এই ঘটনার কথা জানাজানি হয়ে যায়। আসিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরে তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলেও যান পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া সহ জেলা পুলিসের শীর্ষ কর্তারা। ঠিক হয় মাঠি খুঁড়ে দেখা হবে। শুরু হয় খোঁড়াখুড়ির কাজ। তারপরেই একে একে চারটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিস কর্তারা। 
পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, গুরুটোলা গ্রামে মা, বাবা, বোন ও ঠাকুমাকে খুনের অভিযোগ রয়েছে আসিফ মহম্মদের নামে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। ওই ব্যক্তির দাদাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারণ ঘটনার প্রায় চারমাস পরে সে বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে। ঘটনাটি জানতে পেরে রাতেই পুলিস রাতেই ঘটনাস্থলে ঘুরে এসেছিল। মার্চ মাসে আসিফের সন্দেহজনক অবস্থান দেখে তাকে একবার থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু তখনও তেমন কিছু বোঝা যায়নি। ফলে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিস। ধৃতকে হেফাজতে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চালানোর চেষ্টা হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিস সুপার।       এদিন গুরুটোলা গ্রামে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন,  নজিরবিহীন ওই নৃশংসতার নিন্দার ভাষা নেই। অভিযুক্ত কঠোরতম সাজা পাক।

20th     June,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ