বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

ভস্মীভূত তিন গাড়ি...। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে চাঁদনি চক এলাকার ম্যাডন স্ট্রিটে। প্রথমে একটি গাড়ির বনেট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। নিমেষে সেটি দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। সেটি থেকে বাকি দু’টি গাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নেভায়। যান্ত্রিক গোলযোগ ও তীব্র গরমের জন্যই এই ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান দমকলের। -নিজস্ব চিত্র

সল্টলেককে গ্রাস করেছে
মাস্কহীন থাকার সংক্রামক ব্যাধি

স্বার্ণিক দাস, কলকাতা: একশো, দু’শো নয়। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশোর গণ্ডি পেরিয়েছে। এখনও করোনাবিধি মানতে উদাসীন সল্টলেক। তবে বছরভর করোনাকাল চললেও রাস্তায় বেরলে মাস্ক পরাকে এখনও অভ্যাসে পরিণত করতে পারেনি সল্টলেকবাসী। সেই ‘ব্যাধি’ করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়। 
রাজ্যে প্রতিদিন আক্রান্তের নিরিখে নিজেকে টেক্কা দিচ্ছে এই ভাইরাস। গত এক বছর ধরেই চিকিৎসকরা মাস্ক পরাকে বাধ্যতামূলক করার কথা বলছেন। কিন্তু সেই পরামর্শকে পাত্তা দিচ্ছে কে! সল্টলেক চত্বর ঘুরে দেখা গেল, এখনও হুঁশ ফেরেনি বাসিন্দাদের। ব্লকের রাস্তা হোক কিংবা জনবহুল বাজার, প্রতি দশজনের মধ্যে অন্তত তিন-চারজন মাস্কহীন। বাকিদেরও সম্পূর্ণভাবে নাক, মুখ ঢাকার প্রবণতা নেই। যাঁরা মুখে মাস্ক ঝুলিয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগেরই মাস্কের অবস্থান থুতনিতে। অনেকে আবার দিব্যি মাস্ক খুলে আড্ডায় ব্যস্ত। এঁদের দেখে মনে হবে, করোনাকে যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তাঁরা। 
খাস সল্টলেকের অন্যতম বড় বাজার বিডি মার্কেট। সাতসকালে বাজারের বাইরে বাঁধানো জায়গায় আড্ডা বসেছে। সেখানে সাতজন থাকলেও মাস্ক রয়েছে দু’জনের মুখে। বাজারের ভিতরেও ভয়ঙ্কর ছবি। ব্লকের এক প্রৌঢ়ের সঙ্গে গল্পে মত্ত আরেক ব্যক্তি। বয়স্ক মানুষটি মাস্ক খুলে ধূমপান করছেন। পাশের জনের মুখও ফাঁকা। ‘মাস্ক কোথায়?’— প্রশ্ন করতেই তিনি খানিকটা ভ্যাবাচাকা খেয়ে বললেন, ‘আনতে ভুলে গিয়েছি।’ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখে দোকান থেকে মাস্ক কিনলেন তিনি। আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের টিপ্পনি, ‘মাস্কটাও আনেননি দাদা!’ যাঁরা এই খোঁটা দিলেন, তাঁরাও কিন্তু বিনা মাস্কেই গল্পে মশগুল।
সল্টলেকের সিকে মার্কেট। সেখানেও উদাসীনতার ছবি। বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কার্তিক দাস। এক হাতে আলু-পেঁয়াজের থলে, অন্য হাতে সার্জিক্যাল মাস্ক। ‘মাস্ক হাতে কেন?’ জিজ্ঞাসা করতেই এক অবিশ্বাস্য উত্তর দিলেন তিনি। বললেন, ‘পরেই তো ছিলাম। একজনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তাই খুলে কথা বলছিলাম। আবার পরে নিচ্ছি।’ সিকে মার্কেটের মাছ-মাংসের দোকানে বিক্রেতাদের অধিকাংশের গলায় মাস্ক ঝুলতে দেখা গিয়েছে। কারওর অজুহাত, ‘গরম লাগছে’, কেউ আবার ক্যামেরা দেখার পর অন্যদের সাবধান করছেন। এই উদাসীনতা নিয়ে অবশ্য ভাবিত নন ক্রেতারা। মাস্ক না পরে জিনিস বিক্রি করলেও ক্রেতাদের কাউকেই প্রতিবাদ করতে দেখা গেল না। ৬৩ বছরের শুকদেব সরকারকে দু’টি মাস্ক পরে ওই বাজারে মাছ কিনতে দেখা গেল। তবে বিক্রেতা ছিলেন মাস্কহীন, একইসঙ্গে বিকারহীন। বাজারের ভিতরের তুলনায় বাইরে ভিড় আরও বেশি। চায়ের দোকান কিংবা সংলগ্ন বাড়ির চাতালে মাস্ক ছাড়াই অনেককে গল্প-গুজবে ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে।
বৈশাখী বাজার যেন সংক্রমণের আঁতুরঘর। আর পাঁচটা বাজারের থেকে সেখানে জমায়েত বেশি। একইসঙ্গে উদাসীনতার মাত্রাও চরমে। দেখা গেল, প্রায় প্রত্যেক ব্যবসায়ীই মাস্কহীন। ক্রেতারাও মাস্ক নামিয়ে শাক-সব্জি, মাছ-মাংস কিনছেন। স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ নস্করের গলায় মাস্ক ঝুলছে। তাঁর যুক্তি, ‘কেউ কী আর ইচ্ছে করে নামিয়ে রাখে, মাস্কটা নিজে থেকেই নেমে যাচ্ছে।’ রাজ্যে যেখানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, সেখানে করোনা বিধি লঙ্ঘন করেও বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই গোবিন্দবাবুর মতো অসচেতনদের। সল্টলেকের সচেতন মানুষ ও চিকিৎসকদের মতে, উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ ও প্রশাসনিক নজরদারির প্রয়োজন। ভালো কথায় চিঁড়ে ভেজে না অনেক সময়। তখন অন্য পথ নিতে হয়। সেই ব্যবস্থা না নিলে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
চার-পাঁচদিন ধরে এই চিত্র ধরা পড়েছে সল্টলেকের বিভিন্ন এলাকা ও বাজারে। -নিজস্ব চিত্র

5th     May,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ