বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

ভস্মীভূত তিন গাড়ি...। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে চাঁদনি চক এলাকার ম্যাডন স্ট্রিটে। প্রথমে একটি গাড়ির বনেট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। নিমেষে সেটি দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। সেটি থেকে বাকি দু’টি গাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নেভায়। যান্ত্রিক গোলযোগ ও তীব্র গরমের জন্যই এই ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান দমকলের। -নিজস্ব চিত্র

ভরসা রাখুন সব করে দেব, বাগবাজারের
বস্তিবাসীদের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগের অবস্থা ফিরিয়ে দেব।  বাগবাজারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হাজারি বস্তির অসহায় মানুষদেরকে এইভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা নাগাদ তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ করেন।  সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, পৌরবোর্ডের সদস্য অতীন ঘোষ ও পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা। সব দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভরসা রাখুন সব করে দেব। যার যেখানে যেমন ঘর ছিল, ঠিক তেমনই আবার তৈরি করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি  সকলকে ৫ কেজি করে চাল, ডাল আলু দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য দুধ ও বিস্কুটও দেওয়া হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, খাবারের পাশাপাশি মেয়েদের শাড়ি ও ছেলেদের জামাকাপড় এমনকী সকলকে কম্বলও দেওয়া হবে। এদিন ববি হাকিম ও শশী পাঁজাকে পুরো বিষয়টি তদারকির দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাগবাজার মহিলা কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।  ‌আজ ও আগামীকাল শুক্রবার অগ্নিদগ্ধ এলাকাটির সাফাইয়ের কাজ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি বাসিন্দারা। অন্যদিকে আজ হাজারি বস্তিবাসীদের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন কার্যালয়ের মহারাজদের সঙ্গেও কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল, বাগবাজারে বিধ্বংসী আগুনে ছারখার হয়ে যায় হাজারি বস্তির প্রায় ১০০ ঘর। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গোটা এলাকায় ত্রাহি ত্রাহি রব। কান ফাটানো আওয়াজে একের পর এক ফেটেছে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার। অন্যদিকে, মকর সংক্রান্তির দোরগোড়ায় উত্তুরে হাওয়ার বেগ থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। যার জেরে প্রাথমিক অবস্থায় আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে দমকলকে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগবাজারে রামকৃষ্ণ মিশনের ‘উদ্বোধন’ পত্রিকার অফিসের পিছনের অংশ। দমকল যথাসময়ে এলেও কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপাতে দেরি করেছেন বলে অভিযোগ। এনিয়ে স্থানীয় মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। কারণ পাশেই রয়েছে বহুতল। ঠিক উল্টোদিকে আবার পেট্রল পাম্প। বহুতলের বাসিন্দারা প্রাণের ভয়ে দুরদার করে নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। দমকল কর্মীদের কাছে এই আগুন নেভানো ছিল রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন আগুনকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদিন রাতেই গঙ্গাসাগর থেকে তড়িঘড়ি ফিরে বাগবাজারে আসেন পুর ও নগরোন্নন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হঠাৎ আগুন লাগে বাগবাজার ব্রিজ লাগোয়া বস্তিতে। নিমেষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেই আগুন। বস্তির একের পর এক ঘর চলে যায় আগুনের গ্রাসে। উত্তুরে হাওয়ার তোড়ে আরও বেসামাল হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে দমকল। ধাপে ধাপে বাড়ানো হয় ইঞ্জিনের সংখ্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লেও দমকল কর্মীদের মধ্যে প্রথম দিকে তৎপরতা দেখা যায়নি। যদিও দমকলের ব্যাখ্যা, একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ চিন্তা বাড়িয়েছিল তাদের কর্মীদের। অসমর্থিত সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ১৭-১৮টি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেছে। যার জেরে আগুনের লেলিহান শিখা ৪০-৫০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উঠেছে। এই কারণেই আগুন নেভাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় দমকলকে।
অগ্নিকাণ্ডের জেরে ওই অঞ্চলে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। গিরিশ পার্ক থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ— গোটা রাস্তাই বন্ধ ছিল। যার জেরে চিৎপুর লকগেট ফ্লাইওভার, এপিসি রায় রোড সহ উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে যানজট তৈরি হয়। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন দমকলের ডিজি জগমোহন, কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য অতীন ঘোষ, উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটররা। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল সহ অন্যান্যদের অভিযোগ, মঠের দিক থেকে আগুন লেগেছে।
দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। দমকলের ডিজি জগমোহন জানিয়েছেন, মায়ের বাড়ি অক্ষত আছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে। তিন-চারজন দমকল কর্মী আহত হয়েছেন। তবে কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। দমকলের পাশাপাশি কলকাতা পুলিসের শীর্ষকর্তারাও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। উত্তর কলকাতার সমস্ত থানা থেকে পুলিস নিয়ে আসা হয়। ডিসি নর্থ জয়িতা বসু, জয়েন্ট সিপি (১) অশেষ বিশ্বাস, ডিসি আরএফ সুখেন্দু হীরা, জয়েন্ট সিপি ট্রাফিক সন্তোষ সহ অন্যান্য পুলিস আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আগুনের গ্রাসে প্রচুর মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভা গৃহহীনদের থাকার জন্য এলাকার স্কুল এবং কমিউনিটি হল খুলে দিয়েছে। সব মিলিয়ে তিন-চারটি জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের কম্বল ও খাবারের ব্যবস্থাও করেছে পুরসভা।
এদিন বেলায় মানিকতলার বড়তলা থানা এলাকায় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডে একটি ব্যাটারি কারখানা আগুন লাগে। দমকলের আটটি ইঞ্জিন আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় ওই আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনে।

14th     January,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ