নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গোরু ও কয়লা পাচার কাণ্ডে তৃণমূল যুব নেতা বিনয় মিশ্রর ভাই বিকাশ মিশ্রকে তলব করল সিবিআই। বুধবার নোটিস গিয়েছে তাঁর কাছে। আগামী ১৫ তারিখ তাঁকে হাজির হতে বলা হয়েছে নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দপ্তরে। বিনয়ের কাছেও ফের নোটিস পাঠানো হয়েছে। এরপরেও যদি তিনি না আসেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সেক্ষেত্রে আদালতের দ্বারস্থ হবে সিবিআই। এর সঙ্গেই বিনয় ঘনিষ্ঠ অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে পলাতক হিসেবে ঘোষণা করেছে আসানসোল আদালত। সিবিআই এই আর্জি জানিয়েছিল আদালতে। তাঁর বাড়ি সহ বিভিন্ন ঠিকানায় ছবি সহ নোটিস সাঁটিয়ে দেবে সিবিআই। এই আদেশ বলে তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পথও প্রশস্ত হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। নোটিস পাঠানো নিয়ে বিকাশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা আইনি পথেই এগবেন।
কেন বিকাশ মিশ্রকে ডাকা হল? বিনয়কে দু’বার ডাকা হলেও তিনি হাজির হননি। সিবিআই কর্তারা মনে করছেন, ১৫ তারিখ তিনি আসবেন না। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে টাকা পাচারের গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। সেই সঙ্গে বিদেশে তাঁর সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এ বিষয়ে বিনয়ের বক্তব্য জানা জরুরি। কয়লার টাকা কোন রুটে কলকাতায় আসে এবং কীভাবে ওই কালো টাকা সাদা করা হয়, সে সম্পর্কে ওই তৃণমূল যুব নেতার ভাইয়ের বক্তব্য জানতে চাইছেন অফিসাররা। এছাড়াও বিনয়ের দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে কারা আসতেন এবং কারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, তা জানা প্রয়োজন। আগন্তুকদের মধ্যে কোনও পুলিস কর্তা থাকতেন কি না, বিকাশকে তা নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি বিনয় দুবাইয়ের কোথায় রয়েছেন, সেই ডেরার খোঁজও জরুরি। এই বিষয়ে বিকাশ কতটা জানেন, তা জানতে চান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। আসলে বিনয়ের উপর চাপ বাড়াতেই তাঁর ভাইকে তলব করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে কয়লা কাণ্ডে ইডি’র আধিকারিকরা টাকা পাচারের যে নথি পেয়েছেন, তা নিয়ে সিবিআই কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দু’টি সংস্থাই অভিযুক্তের জমি ও বাড়ি সংক্রান্ত কাগজপত্র নিজেদের মধ্যে আদানপ্রদান করেছে। তার ভিত্তিতে বিনয় ও এনামুলের সম্পত্তির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কালো টাকায় করা এই সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য ইডি আদালতের দ্বারস্থ হবে বলে জানা যাচ্ছে।