শরীর ও স্বাস্থ্য

বাবা-মায়ের কোন কোন অসুখ সন্তানেরও হতে পারে?

জিনগত অসুখ হতে পারে মিউটেশনের কারণে। জিনে এক বা একাধিক মিউটেশন ঘটে দেখা দিতে পারে অসুখ। আবার আমাদের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। ২২ জোড়া অটোজোম এবং ২৩ তম জোড়া হল এক্স এবং ওয়াই ক্রোমোজোম। মহিলাদের দু’টি এক্স ক্রোমোজোম থাকে। এবং পুরুষের থাকে এক্স এবং ওয়াই ক্রোমোজোম।
ক্রোমোজোমে মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য ধরা থাকে। ক্রোমোজোমের একএকটি অংশ কিছু পরবর্তী প্রজন্মে নির্দিষ্ট প্রোটিন প্রেরণ করার জন্য স্থির থাকে। এই একএকটা প্রোটিন  শরীরের কোনও না কোনও অংশের গঠন ও কাজের জন্য নির্দিষ্ট।
ফলে ক্রোমোজোমের কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গার প্রোটিনে মিউটেশন ঘটে গেলে তার প্রতিলিপি তৈরি সময় ওই নতুন প্রোটিনেও মিউটেশন থেকে যাবে। ওই প্রোটিনে খুঁত থেকে গেলে তখন নতুন প্রোটিনেও ত্রুটি রয়ে যাবে বা সন্তানের ক্রোমোজোমেও থেকে যাবে ত্রুটি।
বাবা-মায়ের কাছ থেকে কীভাবে আসছে অসুখ
স্পার্ম ও ওভাম— উভয়ের জিনের মিলমিশে তৈরি হচ্ছে নতুন জীব। ফলে মাতা বা পিতার থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোমগুলির মধ্যে মধ্যে যদি একটিতে ত্রুটিপূর্ণ জিন থাকে তাহলে সেই ত্রুটি সন্তানের মধ্যেও চলে আসতে পারে। তবে তা অসুখে পরিণত নাও হতে পারে। অটোজোমাল ডিজঅর্ডার বা বাবা ও মায়ের ত্রুটিপূর্ণ জিন থেকে প্রাপ্ত অসুখ তখনই হয় যখন পিতা ও মাতার একই অটোজমে একই ধরনের ত্রুটি থাকে। এই ধরনের জিনগত অসুখকে অটোজোমাল রিসেসিভ ডিজঅর্ডার বলে। উদাহরণ হিসেবে সিস্টিক ফাইব্রোসিস, সিকল সেল অ্যানিমিয়া, টে স্যাকস ডিজিজ ইত্যাদি। 
তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে যে কোনও একটি অটোজম ত্রুটিপূর্ণ হলেও অসুখ প্রকাশ পেতে পারে এবং তখন তাকে বলে অটোজোমাল ডমিনেন্ট ডিজঅর্ডার।  এই ধরনের অসুখের উদাহরণ হল অ্যাকোনড্রোপ্লাসিয়া, গিলবার্টস রোগ, বংশগত হেমোরেজিক টেলাঞ্জিয়েক্টাসিয়া, হান্টিংটনস ডিজিজ, ইডিওপ্যাথিক হাইপোপ্যারাথাইরয়েডিজম ইত্যাদি। এছাড়া রয়েছে এক্স-লিংকড ডিজঅর্ডার। উদাহরণ হিসেবে লাল-সবুজ রং চেনার অপারগতা, হিমোফিলিয়া এ ইত্যাদি অসুখের কথা বলা যায়। 
অসুখের ভাগ
প্রায় ৬ হাজারের উপর এমন জিনগত অসুখ রয়েছে। এদের মধ্যে আবার ৫০০ টি অসুখের বোলবোলা বেশি। এই রকম অতিপরিচিত অসুখের মধ্যে থাকবে সিকল সেল অ্যানিমিয়া, থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি।
নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতি ৫০ জনে ১জন জিনগত অসুখে ভোগে। তবে যেহেতু বাবা- ও মা উভয়ের জিনগত অসুখ থাকলে তবেই রোগটি সন্তানের মধ্যে ফুটে ওঠে তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ সুস্থ হয়ে বাঁচার সুযোগ পায়। কারণ বাবা অথবা মা যে কোনও একজনের জিনে সমস্যাটি না থাকলেই রোগটি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। 
কী করে বুঝবেন আপনি জিনগত অসুখে আক্রান্ত?
বাবা, মা বা দাদুর হয়তো কোনও অসুখ ছিল, তা পরবর্তী কালে ওই পরিবারের নবীন সদস্যের মধ্যে দেখা দিতে পারে। আবার কিছু অসুখ নবন সদস্য প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও হতে পারে যেমন হান্টিংটন ডিজিজ!
জিন থেরাপির ভূমিকা
সঠিকভাবে জিন পরীক্ষা করে জিনের ত্রুটি নির্ণয় করতে পারলে ও তারপর সঠিক জিন শরীরে প্রবেশ করাতে পারলে ওই জিন শরীরে ত্রুটিপূর্ণ জিনকে প্রতিস্থাপন করতে পারে। তাহলেই অসুখ হওয়ার আশঙ্কাও দূর হতে পারে। জিন থেরাপি করে অনেক অসুখই সারানো যাচ্ছে। তাই কোনও জটিল অসুখ হলে অবশ্যই ওই রোগের পারিবারিক ইতিহাস জানতে হবে।
প্রেগন্যান্সি ও জিনগত সমস্যা
প্রেগন্যান্সির সময় আলট্রাসাউন্ড করানোর সময়েই চিকিৎসক অনেকসময় জিনগত কিছু অসুখ সম্পর্কে সন্দেহ করতে পারেন। এক্ষেত্রে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড স্টাডি করে বোঝা যায় বাচ্চার জেনেটিক ত্রুটি হতে চলেছে কি না। যদি সমস্যা নিরাময়ের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তা নেওয়া হয়। কারণ ইউটেরাসের মধ্যেই জিনের ত্রুটি সংসশোধনের চিকিৎসা করা যায়।
আর যখন বোঝা যায় সমস্যার নিরসন সম্ভব নয় তাহলে অ্যাবরশনের ব্যবস্থা করেন কেউ কেউ।
সাধারণ অসুখ ও বংশগতি
• টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে পারিবারিক সংযোগ রয়েছে। দেখা গিয়েছে বাবা কিংবা মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানের সুগার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকী  বাবা অথবা মায়ের মধ্যে যে কোনও একজনের ডায়াবেটিস থাকলেও সন্তানের উচিত কম বয়স থেকেই বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিসের চেক আপ করানো।
• হার্ট ডিজিজ-এর ক্ষেত্রেই পারিবারিক সংযোগ অস্বীকার করা যায় না।
• বেশ কিছু ক্যান্সার যেমন ব্লাডার ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, ওভারিয়ান ক্যান্সার, রক্তের ক্যান্সার ইত্যাদি ক্ষেত্রে জিনগত যোগাযোগ মিলেছে।
প্রতিরোধ
অটোজোমাল রিসেসিভ অসুখ যেমন থ্যালাসেমিয়া হতে পারে পিতা-মাতা উভয়ের জিনে ত্রুটি থাকলে। তাই এমন কিছু অসুখ প্রতিরোধে বিয়ের আগে ম্যারেজ কাউন্সেলিং করানো ও রক্ত পরীক্ষা করানো যেতে পারে জরুরি। তাতে অতিপরিচিত অটোজোমাল রিসেসিভ ডিজঅর্ডার সম্পর্কে জানা যাবে ও আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।রোগ প্রতিরোধও করা যাবে।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
9Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

যে কোনও কাজকর্মে সকালের দিকে বিশেষ উন্নতির যোগ। বিকেলের দিকে অবশ্য কিছু বাধা আসতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৭৩ টাকা৮৫.৪৭ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮৫ টাকা১০৯.৬১ টাকা
ইউরো৮৭.৮২ টাকা৯১.২১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
1st     December,   2024
দিন পঞ্জিকা