অমৃতকথা

আলোর দেবতা! কোথায় তুমি!

শ্রীঠাকুর সত্যানন্দদেব তখন বরানগরের আশ্রমে। আমি নৈহাটি থেকে ঠাকুরের কাছে যাতায়াত করতাম। খুব ভোরে রওনা হতাম। আশ্রমের গেটের কাছে এসে শুনতে পেতাম আশ্রম-প্রাঙ্গণে আশ্রমের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোর ছাত্রদের সমবেত কণ্ঠে প্রার্থনা-মন্ত্রোচ্চারণ—‘অসতো মা সদ্গময় তমসো মা জ্যোতির্গময়...’ ইত্যাদি। আশ্রমের পবিত্র পরিবেশে এই বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ-ধ্বনি শোনা মাত্র আমার অন্তরও প্রার্থনা-ব্যাকুল হয়ে ব’লে উঠত—হে ঠাকুর, আমাকেও অসৎ থেকে সতে নিয়ে চল, অন্তরের অন্ধকার দূর ক’রে নিয়ে চল আলোর পথে। এমনিতর প্রার্থনাময় মন নিয়ে ঠাকুরকে দর্শন করার জন্য উপস্থিত হতাম গঙ্গার ধারের বারান্দায়। দেখতাম চারদিক আলো ক’রে সেখানে নিজের আসনে বসে আছেন আলোর দেবতা আমাদের ঠাকুর শ্রীসত্যানন্দদেব।
ঠাকুরের সকালের অধিবেশনে নিত্য পাঠ হত ‘শ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত’। পাঠের পর কথামৃতের বাণীর অপূর্ব দিব্য আলোচনা করতেন শ্রীঠাকুর। ঠাকুরের শ্রীমুখের সেসব দিব্যমধুর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা নিবিষ্ট মনে শুনতেন ভক্তরা। আমার কাছেও খুবই আকর্ষণীয় ছিল ঠাকুরের আলোচনা। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই দেখতাম, আমার মন সবচেয়ে বেশী আকর্ষিত হয়ে পড়ত শ্রীঠাকুরের দেবতনুর ভুবনভোলান দিব্য রূপে। ফলে, ঠাকুর যা আলোচনা করতেন আমার কাছ থেকে তার অনেক কিছুই যেত হারিয়ে। আমি তন্ময় হয়ে প্রায় অপলক নয়নে উপভোগ করতাম ঠাকুরের দেবতনুর দিব্যজ্যোতির্ময় রূপ। সে কি অনির্বচনীয় দিব্য রূপ! সেই অনিন্দ্যসুন্দর দিব্যরূপ দর্শন করতে করতে আমি বিভোর হয়ে যেতাম। তারই ফলে বেশিরভাগ সময় ঠিকভাবে কিছু শোনা হত না তাঁর শ্রীমুখের আলোচনা। ঠাকুরের রূপদর্শনে বিভোর মন বসে বসে ভাবতো—ঠাকুর, তোমার এই যে রূপ এখন দর্শন করছি, এটাই কি সবচেয়ে সুন্দর রূপ, নাকি আরও—আরও সুন্দর রূপ তোমার আছে! আশ্চর্য্য, ততই আলোময় হয়ে প্রকট হত অন্তর্যামী শ্রীঠাকুরের দিব্যরূপ। ঠাকুরের দেবতনুর এই দিব্য জ্যোতির্ময় রূপ প্রসঙ্গেই আমার সতীর্থ বন্ধুবর পশুপতিদা (শ্রীপশুপতি সেনগুপ্ত) একদিন বললেন—ঠাকুরের যদি আরও সুন্দর রূপ দেখতে চাও, তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ে তোমায় প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে। তাঁর কাছেই জেনেছিলাম কখন কোথায় কিভাবে ঠাকুরের সেই অপরূপ রূপের দর্শন পেতে পারি। ঠাকুরের প্রধান পার্ষদ স্বামী নির্বেদানন্দজী, যাঁর সম্বন্ধে ঠাকুর বলতেন, ‘মানিক আমার বুকের পাঁজর’, আমাদের সেই প্রিয় মানিকজ্যাঠার জন্যই শুধু নির্দিষ্ট ছিল ঐ সময়টি। ঠিক ঝাঁকি দর্শনের মত একটি মুহূর্তের দর্শন দিতেন প্রতিদিন ভোর চারটের সময়। ঠাকুরের এই ক্ষণিক দর্শনটি পাবার জন্য এই মহাতপস্বী প্রতিদিন প্রায় রাত দুটো থেকে নিজের শয্যায় বসে জপ ধ্যান করতেন।
স্বামী হীরানন্দের ‘আলোর দেবতা সত্যানন্দ’ থেকে
22d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা