অমৃতকথা

ধর্ম

ধর্মের নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতার প্রকাশ পরিদৃষ্ট হয় ধর্মের অনুশাসনে। ধর্মের পথ সততার পথ। ধর্মের পথে অর্জিত ঐশ্বর্য্য ও তার নীতিসম্মত ভোগের মাধ্যমে ক্রমে কামনার পরিপূর্তি ঘটে এবং নিঃশ্রেয়স লাভের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়।
ধর্মের এই নিয়ন্ত্রণ বা অনুশাসন শুধুমাত্র ব্যক্তিজীবনকে মোক্ষের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে না, সমাজের পক্ষেও বিরাট কল্যাণের কারণ হয়। ধর্মের পথ সত্যনিষ্ঠা এবং ত্যাগরূপী সাধনার পথ।
ধর্মের এই নিয়ন্ত্রণ বা অনুশাসনের প্রসঙ্গ যখন আলোচিত হচ্ছে, তখন সেটা স্পষ্ট করে বলে রাখা দরকার যে, এই ধর্ম হচ্ছে সনাতন শাশ্বত ‘হিন্দুধর্ম’, ভারতে উদ্ভূত সব ধর্মই যার অন্তর্ভুক্ত। ভারতীয় ধর্মে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা, বিভিন্ন অবতার মহাপুরুষ, অনন্ত শাস্ত্রগ্রন্থ এবং আচার অনুষ্ঠান রয়েছে। এগুলির মধ্যে শত-বৈচিত্র্য সত্ত্বেও রয়েছে এক অবিচ্ছিন্ন মৌলিক ঐক্য। ধর্মের কথা আলোচনা করতে গিয়ে আমরা হিন্দুধর্মের কথাই মূলতঃ বলবো, সেমেটিক religion বা মতাদর্শের কথা নয়। কারণ, হিন্দুধর্ম চরিত্রগত ভাবেই universal অর্থাৎ বিশ্বজনীন এবং অসাম্প্রদায়িক। জাতিধর্ম নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষের কল্যাণই হিন্দুধর্মের অভিপ্রেত।
যে কথা বলছিলাম, হিন্দুধর্ম মানুষকে ত্যাগের জন্য উদ্বুদ্ধ করে। উপনিষদ্‌ বলছেন—
“ঈশা বাস্যমিদং সর্বং যৎ কিঞ্চ জগত্যাং জগৎ।
তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্য স্বিদ্ধনম্‌।।”
“পরমেশ্বর কর্তৃক বিশ্বচরাচর আচ্ছাদিত বা আবরিত, অর্থাৎ তিনিই সৃষ্টির সবকিছুর মধ্যে অনুস্যুত হয়ে রয়েছেন। তাই ভোগ-সর্বস্ব না হ’য়ে, ত্যাগের প্রবৃত্তিকে মূল ক’রে সংযত ভাবে ভোগ করতে হবে, অপরের ধনে লোভের দৃষ্টি যেন না পড়ে।” ভাগবতে বলা হয়েছে—
“যাবৎ ভ্রিয়তে জঠরং তাবৎ স্বত্বং হি দেহিনাম্‌।
অধিকং যো অভিমন্যেত সঃ স্তেনো দণ্ডমর্হতি।।”
জীবন ধারণের জন্য যে পরিমাণ দ্রব্য একান্ত প্রয়োজনীয়, মানুষের অধিকার শুধু সেইটুকুতেই। তার অধিক যে অভিলাষ করে বা সঞ্চয় করে সে চোর এবং শাস্তির যোগ্য। এর চেয়ে বড় সাম্যবাদ আর কি হতে পারে?
অতএব হিন্দুধর্মের অনুশাসন মানুষকে বলে সততা ও ত্যাগের মাধ্যমে লোভ নামক বৃত্তিকে দমন করতে, নির্মূল করতে। লোভ হচ্ছে সব রকম অন্যায়ের মূল। ব্যক্তি জীবনে লোভের সংযম আচরিত হ’লে সেটা সমাজ জীবনেও আপনিই প্রতিফলিত হয়। কেউ তার জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অতিরিক্ত যদি না নেয়, তাহ’লে সামগ্রিক সম্পদের সমবণ্টন স্বাভাবিক ভাবেই হ’য়ে যায়। ধর্মের দ্বারা প্রবর্তিত এই নীতিগুলি মানলে অন্য কোনও আইনেরও দরকার হয় না। কারণ, ধর্ম মানুষের মধ্যে বিবেকবোধকে জাগিয়ে দেয়। এই বিবেকবোধ মনরূপী চঞ্চল ঘোড়াকে অসৎ পথে, লোভের পথে, দুর্নীতির পথে ছুটতে দেয় না। বিবেক হচ্ছে সৎ অসৎ বিচার। জীবনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই করতে হয় সৎ-অসৎ বিচার। জীবনের চরম উদ্দেশ্য ভগবৎলাভ অর্থাৎ সেই পরম সত্যস্বরূপ পরমাত্মতত্ত্বকে পাওয়া। এই পাওয়ার অর্থ, তাঁর স্বরূপ হ’য়ে যাওয়া—“ব্রহ্মৈব সন্‌ ব্রহ্মাপ্যেতি।” তাঁর স্বরূপ হলে তবেই তাঁকে পূর্ণরূপে পাওয়া যায়। সত্যস্বরূপের পথে এগোতে হ’লে চাই সত্যের অবলম্বন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের কথায়—ঈশ্বরই বস্তু, আর সব অবস্তু। বস্তু কিনা নিত্য, অবস্তু কিনা অনিত্য। 
স্বামী মৃগানন্দের ‘ধর্মের রহস্য’ থেকে
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশা ও ব্যবসায় উন্নতির বড় কোনও সুযোগ প্রাপ্তি। ধর্মভাব শুভ। স্বাস্থ্য গড়বড় করতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৯.৩৫ টাকা১১২.৯২ টাকা
ইউরো৯১.৯২ টাকা৯৫.১২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা