শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
ঝাড়গ্ৰাম রাজ পরিবারের এই পুজো আনুমানিক চারশো বছরের পুরনো। রাজ পরিবারের তথ্য মতে, মল্লদেব বংশের আদিপুরুষ সর্বেশ্বর এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। প্রথা মেনে সেই পুজো আজও হয়ে চলেছে। শহরের পুরাতন ঝাড়গ্ৰামে কুলদেবী সাবিত্রী দেবীর মন্দির রয়েছে। কুলদেবীকে দুর্গার ধ্যানমন্ত্রে নিত্যপুজো করা হয়। মন্দিরের ভিতরে পৃথক চণ্ডীমণ্ডপ রয়েছে। সেখানেই দেবীকে ঘট সহকারে পটে পুজো করা হয়। আগের প্রাচীন পট শালপাতার ঝালরের উপর আঁকা ছিল। সেই পটেই পুজো হতো। বর্তমানে চণ্ডীমণ্ডপের বেদির সামনের দেওয়ালে চিত্রিত পটের পুজো হয়। সাধারণ মানুষের কাছে দেবী পটেশ্বরী নামে পরিচিত। গত বুধবার রাতে কৃষ্ণপক্ষের জিতাষ্টমী তিথিতে সাবিত্রী মন্দিরের সামনে বেলগাছের তলায় মঙ্গলঘট স্থাপন কর হয়েছে। একে অধিবাস বলা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে দীর্ঘ ঐতিহ্য মেনে অস্ত্রপুজোর মধ্যে দিয়ে রাজ পরিবারের পুজোর সূচনা হয়। বিজয়া দশমী পর্যন্ত মন্দিরে পুজো, হোম, চণ্ডীপাঠ হবে। মহাষষ্ঠীর দিন মন্দিরের সামনে বেলগাছের তলায় আবার আচার মেনে মঙ্গলঘট স্থাপিত হবে। সপ্তমীর দিন সকালে রাজবাড়ি থেকে শোভাযাত্রা করে খড়্গ, শালগ্ৰাম শিলা ও ঘট দুর্গামন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। অষ্টমীতে হবে বলি। দশমির দিন বিশেষ ‘পাটাবিঁধা’ অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে সূর্যোদয়ের আগে বলি দেওয়া ছাগের রক্ত মানুষের অবয়ব দেওয়া শিমুল গাছের পাটায় মাখানো হয়। দশমীর পুজো ও বিসর্জন শেষ হওয়ার পর রক্তমাখা পাটাটিকে মন্দিরের সামনে রাখা হয়। পাটার উপর জ্বলন্ত প্রদীপ রেখে রাজবাড়ির পুরোহিত পাটাটিকে পুজো করেন। প্রথা মেনে তিনি কিছুটা দূর থেকে পাটাটিকে লক্ষ্য করে প্রথম তির ছোড়েন। তারপর রাজ পরিবারের সদস্যরা তির ছোড়েন। পরবর্তীতে সাধারণ মানুষ তির ছোড়ায় অংশগ্রহণ করেন। পাটায় লক্ষ্যভেদ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাটার মাথার অংশটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলাদা করা হয়। তারপর জলাশয়ে পাটাটিকে বিসর্জন দেওয়া হয়। জনসাধারণের পক্ষ থেকে যিনি পাটায় প্রথম লক্ষ্যভেদ করেন তাঁকে রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়। রাজ পরিবারের উত্তরসূরী দূর্গেশ মল্লদেব এদিন বলেন, প্রথা মেনে এদিন অস্ত্রপুজোর মধ্যে দিয়ে রাজ পরিবারের দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে। বিজয়া দশমী পর্যন্ত দুর্গামন্দিরে পুজো, হোম ও চণ্ডীপাঠ হবে। দশমির দিন নিয়ম মেনেই ‘পাটাবিঁধা’ হবে। -নিজস্ব চিত্র