শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
এই পরিবার রাজস্থানের লক্ষণ সিংহের বংশধর। সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে লক্ষণ সিংহের পুত্র রাঘব রাম সিংহ বাংলায় নিয়ে আসেন নাড়ুগোপাল ও শালগ্রাম শিলা। দুই দেবতার এখনও পুজো হয় এই বাড়িতে। এর পাশাপাশি পুজো হয় জগদ্ধাত্রীরূপী দুর্গার। দশমীতে মহিলাদের পরিবর্তে দেবীকে বরণ করে বিদায় দেন পুরুষরা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬৫৮-১৭০৭ সালের মধ্যে ঔরঙ্গজেবের আমলে হিন্দু দেবদেবীদের মন্দির ভাঙা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় এই এলাকার জমিদার রায়রা। তাঁদের দুর্গাপুজো করার নির্দেশ দেন বর্ধমানের রাজা। উদ্দেশ্য ছিল, এই পুজোর মাধ্যমে হিন্দুরা সঙ্ঘবদ্ধ ও আরও ধর্মপ্রাণ হবে। রক্ষা পাবে হিন্দু দেবদেবীর মন্দির। মহারাজের নির্দেশ অনুযায়ী, জমিদার বাড়িতে বৈশাখ মাসে প্রথমে শুরু হয় কালীপুজো। তারপর দুর্গাপুজো শুরু হয়।
প্রথমে সিংহ এরপর সিংহরায়, তারপর রায়চৌধুরী এবং সবশেষে রায় পদবী পায় এই পরিবার। এখনও জমিদার আমলের প্রবেশদ্বারের ভগ্নাংশ ও রাসমঞ্চটি রয়েছে। নতুন দুর্গামণ্ডপ তৈরি হয়েছিল ২০০৯ সালে। পরিবারের সদস্য ধ্যানব্রত রায় জানান, পরিবারের কুলদেবতা গোপাল। রাস, দোল, জন্মাষ্টমীতে পুজো হয় তাঁর। আর দুর্গার কাঠামো পুজো হয় রথের দিন। দেবীর চার হাতে খড়্গ, গদা, সাপ ও শঙ্খ থাকে। জগদ্ধাত্রী রূপের দুর্গা। সাদা রঙের সিংহের কেশর করাতের মত। নাম করাতি সিংহ। মহিষাসুরের রং সবুজ। দুর্গার পাশে কৃষ্ণমূর্তি। সন্ধিক্ষণের সময় নির্ধারণে একসময় জলঘড়ি ব্যবহার হতো। বংশ-পরম্পরায় পুজো করছেন পুরোহিতরা, মৃৎশিল্পী, ঢাকি, মালাকাররা দেবীর সেবা করে আসছেন। কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে বোধন হয়। তখন থেকেই চলে চণ্ডীপাঠ। আগে মোষ বলি হতো। বর্তমানে সপ্তমী থেকে নবমী পাঁঠা বলি হয়। এক কিলোমিটার দূরে এই পরিবারের আর একজন দেবী রয়েছেন। তাঁর নাম বনবিবি। বনের মধ্যে নবমীর দিন বিশেষ পুজোর আয়োজন হয় সেখানে। দশমীতে বিসর্জনের আগে পরিবারের শিব মন্দিরে বিশেষ পুজো অর্চনা হয়। দেবীর কৈলাস গমনের বার্তা দেওয়া হয় মহাদেবকে। আগে বন্দুকের গুলি ছোড়া হতো। বর্তমানে তা বন্ধ। এই বাড়ির পুজোর আরও একটি বিশেষত্ব, দশমীতে মহিলাদের পরিবর্তে বরণ করেন পুরুষরা। মেয়েরা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ দেবীদর্শনে ছুটে আসেন।