শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
একাদশ শতকে সেন বংশের রাজত্বে কনৌজ থেকে আসা পাঁচ ক্ষত্রিয় বংশের মধ্যে অন্যতম দত্ত চৌধুরী। সুলতানি শাসনকালে এই পরিবার চৌধুরী উপাধি পায়। এই বংশের পূর্বপুরুষরা বালি গ্রাম থেকে স্থানান্তরিত হয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন আনন্দধূলিতে। সেই আনন্দধূলিই আজকের আন্দুল। শোনা যায়, আনুমানিক ১৫৫৭ সাল নাগাদ দত্ত চৌধুরী বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন রামশরণ দত্ত চৌধুরী। চার শতাব্দী প্রাচীন এই বাড়িতে দুর্গা মহিষাসুরমর্দিনী রূপে পূজিতা হলেও পরিবারের কাছে তিনি উমা। ষষ্ঠীতে তাঁকে সবুজ ওড়না পরিয়ে দেন বাড়ির মহিলারা। দশমীতে সেই ওড়না পাল্টে হয় লাল। দেবীপক্ষে বংশের কুমারী মেয়েদের হাতে ওঠে শাঁখা। তবে পলা বা নোয়া পরা যায় না। পরিবার থেকে অশুভ ছায়া দূরে রাখতে শতাব্দী প্রাচীন এই দু’টি প্রথা চলে আসছে এ বাড়িতে। নবমীর সকালে প্রতিমার সামনে কালো রঙের প্রদীপে আরতি করেন পুরোহিত। ২৮ প্রদীপ নিয়ে আরতির পর তা উল্টে ফেলে নিভিয়ে দেওয়ার রীতি। পাশাপাশি চালের পিটুলি দিয়ে মানব আকৃতির পুতুল তৈরি করে শত্রু বলি দেওয়ারও রীতি রয়েছে।
অবশ্য কালের নিয়মে হারিয়ে গেছে অনেক প্রথা। সন্ধিপুজোর সময় কামান দাগার শব্দ শোনা যায় না এখন। দশমীতে নীলকণ্ঠ পাখিও ওড়ানো হয় না। বহু বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে পাঁঠাবলি। নবমীর দিন কুমারী পুজো ও ধুনো পোড়ানো হয় নিষ্ঠা ভরে। এ বাড়ির পুজোর ভোগ সাজানো হয় পুরী থেকে নিয়ে আসা জিভেগজা ও খাজা দিয়ে। সঙ্গে মহা নৈবেদ্যতে থাকে নারকেল নাড়ু, চন্দ্রপুলি, ক্ষীরের ছাঁচ, মনোহরা ও আগমণ্ডা। অন্নভোগে থাকে পোলাও ও খিচুড়ি। পরিবারের সদস্যদের কাছে জানা গিয়েছে, ভোগ পরিবেশনের সময় ‘রামশরণের কড়াই ধর’ কথাটি উচ্চারণ করতে হয়। একবার শরিকি বিবাদে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল দত্ত চৌধুরী পরিবার। রামশরণের উত্তর প্রজন্মের হেঁসেলে যাতে অনটন প্রবেশ না করে সে জন্য উচ্চারণ করা হয় ওই তিন শব্দ। বাড়ির একাদশতম প্রজন্মের বর্তমান সদস্য ধ্রুব দত্ত চৌধুরী বলেন, ‘এই বংশের আত্মীয়রা এখন বহু পরিবারে বিভক্ত। তবে পুজোর চার দিন সবাই মিলে একসঙ্গে হলে গমগম করে ওঠে দুর্গা দালান।’