আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
নতুন বছরের প্রথম দিনে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের জমায়েত হয়। এখানে দেবী সর্বমঙ্গলা রূপে পূজিতা হন। এই মন্দির ঘিরে অনেক কাহিনিও শোনা যায়। রাজা তেজচন্দ্রের আমলে মন্দিরটির সূচনা হয়। তার আগে জেলেবাড়ির মেছেনিরা এই মূর্তির উপর গুগলি, শামুক ভাঙতেন বলে শোনা যায়। স্বয়ং রামকৃষ্ণ এই মন্দিরে এসেছেন বলেও কথিত আছে। কোভিড আবহের কারণে টানা ছ’মাস মন্দিরের গেটে তালা পড়েছিল। আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে সব কিছু স্বাভাবিক হতেই কোভিড নির্দেশিকা মেনে মন্দিরের ফটক খুলে গিয়েছে। তবে কোভিডের ফাঁড়া এখনও কাটেনি। তাই মন্দির চত্বরে কড়া সতর্কতা রয়েছে। সংক্রমণ এড়াতে তৈরি করা হয়েছে স্যানিটাইজার টানেল। মাস্ক ছাড়া মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি নেই কারও। ‘স্বাস্থ্য আগে, শাস্ত্র পরে’ নীতি নিয়েই এবারের নববর্ষের উৎসব করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্য জয়দেব মুখোপাধ্যায় বলেন, এবার কোভিড বিধি মেনেই ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার মিলবে।
এছাড়া শহরের বীরহাটার বড়মা কালীমন্দিরেও পুজো দেওয়ার জন্য ভিড় জমান ভক্ত। জেলার কাটোয়া মহকুমার কড়ুইয়ের হর-গোরী মন্দিরেও ধুমধামে পয়লা বৈশাখের বিশেষ পুজো হবে। কালনার সিদ্ধশ্বরী মন্দিরেও এই বিশেষ দিনে ভক্তদের সমাগম হয়।
গ্রাম বাংলায় গাজন চড়ক উৎসবের পরের দিনই মন্দিরে পুজো দিয়ে বছরের শুরু করেন পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দারাও। এবারও যার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। দুর্গাপুর শহরের মানুষ ভোর রাত থেকে পুজো দেওয়ার জন্য লাইন দেন ভিড়িঙ্গি কালী মন্দিরে। ভোর থেকে শুরু হয়ে সারাদিন পেরিয়ে রাত পর্যন্ত চলে মায়ের পুজো। এবারও রীতি মেনে পুজো হবে। মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, রাত আড়াইটার সময় মন্দির খোলা হবে। তখন থেকেই মন্দির চত্বরে পুজো দেবেন ভক্তরা। দুপুরে মায়ের বিশেষ অন্নভোগ হবে। ভাত, সাত রকমের ভাজা, দু’রকমের সব্জি, ডাল, মাছ আমের চাটনি, পায়েস সহযোগে দুপুর ১২টায় মাকে ভোগ দেওয়া হবে। শুধু মায়ের পুজোই নয়, এদিনই বহু বাঙালি হালখাতা পুজো করান। এবার সেই পুজোও অন্যবারের মতো হবে বলে জানা গিয়েছে। গত বছর দেশজুড়ে লকডাউনে মন্দিরে ভক্তদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবারও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কড়া হাতে হাল না ধরায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। যদিও মন্দিরের প্রধান সেবাইত সাধন রায় বলেন, যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজো হবে।
পুজো হবে মা কল্যাণেশ্বরী মন্দিরেও। ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা এই মন্দিরে এবার ভিড় কিছুটা কম হবে। এর কারণ ভিন রাজ্য ঝাড়খণ্ডে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। তাই ওই রাজ্য থেকে আসা লোকজনের এবার নাও দেখা মিলতে পারে। কিন্তু যেভাবে সকাল থেকে নিত্যপুজো দিয়ে মায়ের পুজো হয়, সেভাবেই পুজো হবে। মন্দিরের সেবাইত দিলীপ দেওঘড়িয়া বলেন, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বিধি মানার জন্য মানুষকে সচেতন করা হবে।
পুজো হবে আসানসোলর কালিপাহাড়ির কাছে ঘাঘরবুড়ি মন্দিরেও। ভোরে আলো ফোটার আগেই আসানসোলের বহু বাসিন্দা হাজির হন এই মন্দিরে। সকাল থেকে নববর্ষের পুজার্চনা করেন সাধারণ মানুষ। গত বছর করোনা বিধি নিষেধের জন্য পুজো হয়নি। এবার পুজো হচ্ছে। কাঁকসা থানার আড়া শিব মন্দিরে দু’দিন ধরে চলছে গাজন উৎসব। পয়লা বৈশাখ সকাল থেকে নববর্ষের পুজো হবে এখানেও। আসানসোলের চন্দ্রচূড় শিব মন্দিরেও পুজো হবে বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটি।