পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, বর্তমান হাড়ি বাড়ির সদস্যদের ঊর্ধ্বতন নবম পুরুষ একদা রাতে মা কালীর স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে তিনি বলেন, সামান্য থোড়ের নৈবেদ্য ও চাল কলা দিয়ে পুজো দিলেই আমি সন্তুষ্ট হব। মাটির মূর্তি গড়ে আমার পুজো কর। তবেই পরিবার ও এলাকাবাসী সুখে শান্তিতে থাকবে। সেই বছরেই কার্তিক মাসে দীপাবলিতে শুরু হয় হাড়ি বাড়ির প্রথম কালীপুজো। আজও তান্ত্রিক মতে এই পুজো হয়ে আসছে। পাটুলির এক মৃৎশিল্পীকে দিয়ে প্রথম মাটির কালী প্রতিমা গড়া হয়। এসটিকেকে রোডে ছাতনি মোড় থেকে জামালপুর রোডে জল ট্যাঙ্কের পাশে কালী মায়ের স্থায়ী মন্দির হয়েছে। পুজোর দিন হাড়ি বাড়ির প্রাপ্তবয়স্করা উপবাস থাকেন। পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুজো পরিচালনার জন্য একটি কমিটি তৈরি করেছে। হাড়ি বাড়ির সেবাইতদের সামনে রেখে মূলত তারাই এই প্রাচীন কালীপুজো পরিচালনা করেন।
নিমদহ গ্রামের মনোজ বিশ্বাস, বলরাম ভট্টাচার্য, ভোলানাথ ঘোষ সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেন, এই বাড়ির কালীপুজো এলাকার প্রাচীন পুজো হিসেবে পরিচিত। কালীপুজো উপলক্ষে কলকাতার অপেরা দলের যাত্রাপালা পরিবেশিত হয়। মায়ের পুজোয় দেওয়া ভক্তদের প্রণামি থেকে বাকি অনুষ্ঠান ও বিনামূল্যে যাত্রাপালা দেখানো হয়। কয়েক হাজার ভক্তকে ভোগপ্রসাদ বিতরণ হয়।
হাড়ি বাড়িতে কালীপুজোর সূচনা থেকেই প্রতিমা গড়েন পাটুলির এক মৃৎশল্পী পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের পরিবারের কোনও এক সদস্যকে প্রতিবছর নিমদহে এসে মূর্তি গড়তে হয়। এবার মাটির প্রতিমা গড়ছেন ওই পরিবারে চিত্তরঞ্জন পাল। প্রতিমার উচ্চতা হয় ৮ ফুট। শোলার সাজে সজ্জিত হয় প্রতিমা। চিত্তরঞ্জনবাবু বলেন, আমাদের বংশ পরম্পরায় এই প্রতিমা গড়তে হয়। কোনও বছর তার ব্যতিক্রম হবে না। অন্যদিকে হাড়ি বাড়ির এই কালী প্রতিমা গড়ার ব্যয় ভার বহন করার জন্য ভক্তদের মধ্যেও লাইন পড়ে যায়। পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা মনোজ বিশ্বাস বলেন, মাটির প্রতিমা গড়ার এবং শোলার সাজের জন্য আলাদা খরচ হয়। দু’ভাগে এই খরচের জোগান দেন ভক্তরা। আগামী ১৫ বছর পর্যন্ত এই খরচ জোগাবে বলে এক একজন ভক্ত আগাম নাম নথিভুক্ত করে রেখেছে।
হাড়ি পরিবারের বর্তমান সদস্য সুধীর হাজরা, মানিক হাজরা, দিলীপ হাজরা, শিশির হাজরা ও অসিত হাজরা বলেন, প্রাচীন প্রথা মেনে আজও ধুমধাম করে পুজো হয়। এবারও আমাদের পরিবারের তরফে আগে দু’টি পাঁঠা বলি হবে। তারপর মানত পূরণে পাঁঠা বলি হবে। আখ, কলাও বলি হয়। গ্রামবাসীরা আমাদের এই পারিবারিক পুজোয় যুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁরাই কালীপুজোর যাবতীয় তদারকি করেন। ওই পরিবারের এক গৃহবধূ কল্পনা হাজরা বলেন, পুজোর দিন আমাদের পরিবারের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা উপবাস থাকেন।