বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
আর, এটা এমন কিছু কঠিন ব্যাপারও নয়। কারণ, এখন দেখতে দেখতে আইআইটি-র সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩টি। সেই সঙ্গে বেড়েছে আসন সংখ্যাও। প্রশ্ন উঠতেই পারে প্রতিযোগীর সংখ্যাও তো বেড়েছে। অবশ্যই, তবে তফসিলি জাতি-উপজাতিদের ক্ষেত্রেও অন্ততপক্ষে নির্দিষ্ট নম্বর পেতে হয় আইআইটি-তে তালিকাভুক্ত হতে হলে।
প্রসঙ্গক্রমে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে আইআইটি ছাড়া এনআইটি এবং আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যগুলিকে তেমন ধর্তব্যের মধ্যেই ধরে না ছাত্র-অভিভাবকরা। যেমন এ বছর রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে দশ শতাংশ আসনও ভরাতে পারেনি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বেশিরভাগ। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে এমন দশা কেন? উত্তর বহু।
তবে, খড়ের গাদায় ছুঁচ খুঁজতে না গিয়ে একটা মজার চলতি রম্য ঘটনা বলা যাক। এক ভদ্রলোক ছেলেকে নিয়ে এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গিয়েছেন যাচাই পরখ করতে। গেটের দারোয়ানকে প্রথম প্রশ্ন করলেন— আচ্ছা ভাই কলেজটা কেমন? উত্তর এল— ভালোই তো। প্লেসমেন্ট হয়? বলল, হ্যাঁ হয় তো। আমিই তো এই কলেজ থেকে বি টেক করেছি।
আইআইএসটি (শিবপুর), যাদবপুর ছাড়া দু-একটি সরকারি-বেসরকারি কলেজে জায়গা পেলে ভালো, না হলে জেনারেল লাইন। এখন সবাই মোটামুটি বুঝে গেছে যে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লেই, গাছ থেকে টপ করে চাকরি পড়ার দিন শেষ। এমনকী, বেশকিছু আইআইটি-তেও ইঞ্জিনিয়াররা প্রত্যাশা মতো প্যাকেজ তো দূরের কথা, চাকরিই পাচ্ছে না।
এরপর চলে আসছে সবচেয়ে গুরুতর প্রশ্ন, দ্বাদশের পর ছাত্র-ছাত্রীরা যদি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পছন্দমতো জায়গা বা শাখা না পায় তাহলে কী করবে।
মনোমতো উত্তরটা হল ভালো কলেজ থেকে তিন বছরের ডিগ্রি পড়া, সায়েন্সের ক্ষেত্র নিয়েই আজ যখন আলোচনা হচ্ছে তখন ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথামেটিক্স বা বায়োলজি নিয়ে ডিগ্রি পড়া উচিত। কলেজ নামজাদা না হোক, দেখে নিতে হবে পরিবেশ শান্তিপূর্ণ কিনা আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকরা কেমন। বাড়তি প্রাইভেট টিউশন তো নিতেই হয়। শুধু এই শহর বা রাজ্যে নয়, রাজ্যের বাইরে কোন কলেজে কোন বিষয়ে ভালো তা খোঁজা আজকাল মোটেই শক্ত নয়।
যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হয়, সেগুলির দিকে নজর রাখতে হবে আগে থেকেই— যেমন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, সিমবায়োসিস ইত্যাদি। এখান থেকে ডিগ্রি করে আইআইটি-তে ‘জ্যাম’ অর্থাৎ জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর এমএসসি-তে আবেদন করা যায়। এখন অধিকাংশ আইআইটি-তে গ্র্যাজুয়েশনের পর এমএসসি, ইন্টিগ্রেটেড পিএইচডি সহ বহু কোর্স চালু রয়েছে। এমনকী বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে ভর্তি হওয়া যায় ‘জ্যাম’ উত্তীর্ণ হয়ে। আর, যাঁরা একটু অন্য ধরনের পেশার দিকে এগতে চায় তাদের জন্য অ্যাপ্লায়েড জিওলজি, অ্যাপ্লায়েড জিওফিজিক্স-এর মতো বিষয়ও রয়েছে।
এ তো গেল বিজ্ঞানে মেধাবী ছাত্রছাত্রীর কথা। কিন্তু, যারা মধ্য মেধার? তাদের জন্য এ সপ্তাহে দু’টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করে রাখছি, যেগুলি নিয়ে আমরা পরের কোনও সপ্তাহে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব। প্রথমটি হল হোটেল ম্যানেজমেন্ট, দ্বিতীয়টি হল ফিজিওথেরাপি। এই দুই পেশার কি অপার সুযোগ তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা না করলে বোধগম্য হবে না।