বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
তবে, আনকোরা প্রার্থীদের জন্য সনাতনী পদ্ধতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যাকে আমরা চলতি কথায় বলি ‘এন্ট্রি লেভেল রিক্রুটমেন্ট’। এখানে সেই গতে বাঁধা পদ্ধতি। কিন্তু, প্রতিযোগিতার চরমে যেখানে গ্রুপ ‘ডি’ পদের জন্য একজন পিএইচডি করা প্রার্থী আবেদন করছেন, তখন সহজেই অনুমেয় ইন্টারভিউয়ের গুরুত্ব কতখানি। এখন ইন্টারভিউকে আর সিলেকশন পদ্ধতি বলা হয় না। বলা হয় রিজেকশন পদ্ধতি। অর্থাৎ ছাঁটাই প্রক্রিয়া। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ল একটি ঘটনা। তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় চাকরির তখন রমরমা বাজার। রাজ্যের এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এসেছে বহুজাতিক এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা।
রাজ্যে কোনও বেসরকারি কলেজ থেকে সেটাই তাদের প্রথম নিয়োগ। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের আরও কয়েকটি কলেজের চতুর্থবর্ষের ছেলেমেয়েদেরও সুযোগ দিয়েছিল সংস্থাটি। সকাল সকাল কলেজ ক্যাম্পাসে এসে তো থ। শয়ে শয়ে চাকরিপ্রার্থী একজন করে ইন্টারভিউ নিলে তো হয়েছে! শেষমেশ ঠিক হল তাড়াতাড়ি কাজ গোটাতে হবে। আর, প্রত্যেক পড়ুয়ার হাতে একটি সাদা কাগজ ধরিয়ে জানতে চাওয়া হল প্রার্থীরা যে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় যোগ দেওয়ার জন্য জড়ো হয়েছে সেই সংস্থার সর্বময় কর্তা কে এবং সংস্থার সদর দপ্তর কোথায়? সঙ্গে প্রার্থীরা যেন নিজেদের নাম লিখে দেন। মিনিট দশেকের মধ্যে উত্তর লেখা কাগজ জমা নেওয়া হয়। ঠিক-ভুল বাছতে আধ ঘণ্টা। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল মাত্র পাঁচ শতাংশ প্রার্থী ঠিক উত্তর দিয়েছে। সেই পাঁচ শতাংশ ছাত্রছাত্রী নিয়ে ইন্টারভিউ পর্ব সারতে তেমন সময় লাগল না। এখানে ইন্টারভিউয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তার আগের পর্বটি। না সেখানে দেখা হল প্রার্থীর টেকনিক্যাল বা থিওরিটিক্যাল জ্ঞান, না কমিউনিকেশন স্কিল। যা দেখা হল তা হল প্রার্থীর ‘কমন সেন্স’। অর্থাৎ যে সংস্থায় কাজের জন্য তাদের তুমুল উৎসাহ, সেই সংস্থা সম্বন্ধে তাদের আদৌ কোনও জ্ঞান আছে কি না।
তাই প্রতি সেমেস্টারের রকমারি নম্বর, টাই-এর ‘নট’ টা ঠিক মতো বাঁধা হয়েছে কি না এই সমস্ত বিষয় যেমন দরকারি তেমনই দরকার পুঁথিগত বুদ্ধির বাইরের জ্ঞানও। বিশেষত যে কোম্পানিতে কাজ করতে আগ্রহী সেই কোম্পানি সম্পর্কে ভালোমতো জ্ঞান রাখাও জরুরি। আজকাল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নিউজ পেপার পড়তে বা নিউজ চ্যানেল দেখতে একেবারেই আগ্রহী নয়। মোবাইলের দৌলতে দু’-একটি নিউজ অ্যাপই তাদের সবেধন নীলমণি। আর, স্কুল থেকেই অভিভাবকরা তাদের বুঝিয়ে এসেছে নিউজ পেপার পড়া মানে সময় নষ্ট। সিলেবাসে নেই এমন জিনিস পড়ার কোনও অর্থ নেই। কিন্তু, উপরোক্ত যে ইন্টারভিউয়ের নমুনা দেওয়া হল সেখানেই পরিষ্কার এগুলির গুরুত্ব কতটা।