পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পলাশপুলির ফুলচাষি মহাদেব দত্ত বলেন, ফুল সকলেই ভালোবাসেন। শীত পড়লেই মরশুমি ফুল চারা বসানোর হিড়িক পড়ে যায়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে এবার অনেক শৌখিন মানুষই ফুলের চারা সংগ্রহ করতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। এছাড়া জিআরপি ট্রেনের কামরায় ফুলচারার ঝুড়ি নিয়ে উঠতে দিচ্ছে না। দূরের বাসিন্দারাই বেশি মূল্য দিতেন। সড়কপথে বেশি দূরে যাওয়া যায় না। বাসের মাথায় চারাগাছ নেওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এইসব কারণে আমাদের চারা বিক্রি এবার কমেছে। আশাকরি, মাস খানেকের মধ্যে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে। তারপর হয়তো আমাদের বিক্রি বাড়তে পারে। মরশুমি ফুলচাষে পূর্ব বর্ধমান সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে পূর্বস্থলী। ১২০টি সরকারি নথিভুক্ত নার্সারি ছাড়াও কয়েক হাজার বিঘা কৃষিজমিতে ফুলের চাষ হয়। পলাশপুলি, বেলগাছি, শিবতলা, ফলেয়া, মেড়তলা, নিমদহ, বিশ্বরম্ভা, জাহান্নগর, প্রভৃতি মৌজায় জমিতে মরশুমি ফুলের চারা দেখা যায়। ওই চারা বিক্রিতে যুক্ত হাজার খানেক যুবক। তাঁরা ট্রেনে দূরদূরান্তে চারা নিয়ে যান। অধিকাংশই নবদ্বীপ বা কাটোয়া থেকে এক্সপ্রেস ট্রেন ধরেন। দীর্ঘদিন ট্রেন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি চালু হয়েছে। কিন্তু জিআরপি কোনও হকারকে ট্রেনে উঠতে দিচ্ছে না। পাণ্ডবপাড়ার এক ফুলচারা বিক্রেতা ক্যাবল শেখ বলেন, আগে মালদহ, বালুরঘাট, কিষাণগঞ্জ এলাকায় গিয়ে ফুলের চারা বিক্রি করতাম। দুর্গাপুর, আসানসোলে গিয়েও বিক্রি করেছি। ওই দিকে ফুল গাছের ভালো দাম পাওয়া যায়। কিন্তু এবার ফুলের ঝাঁকা নিয়ে আমাদের ট্রেনে উঠেতে দেওয়া হচ্ছে না। ৩০-৪০ কিমি দূরে গিয়ে বিক্রি করছি। তেমন লাভ হচ্ছে না। অনেকে করোনার ভয়ে ফুলের চারা কিনতে চাইছেন না। আমাদের লাভের হার কমেছে।
জানা গিয়েছে, বর্ষাকাল বিদায় নিলেই মরশুমি ফুলের বীজ রোপণ শুরু হয়। পূর্বস্থলীতে বেশি চাষ হয় গাঁদা প্রজাতির চারা। রেডব্রুকেট, হ্যানিকাম, কাশী গাঁদা, থোপা গাঁদা, ইনকা প্রভৃতি চাষ হয়। তারপর চন্দ্রমল্লিকা, স্নোবল ও ডালিয়ারও কদর রয়েছে। এছাড়া এবছর ক্যালেনডুলা, অ্যাসট্রা, প্যানজি, বেবিডল, দ্যানথ্রাস, চেরি, পপি, ফ্লক্স, জারবেরা, সুইটউইলিয়াম, কসমস, সূর্যমুখী প্রভৃতি মরশুমি ফুল চারার বিপুল পরিমাণে চাষ হয়েছে। পূর্বস্থলীর এক চাষি বিমল শীল বলেন, ১৪ বিঘা জমিতে মরশুমি ফুলের চারা বসিয়েছি। এবার ক্রেতার সংখ্যা কম। তাই অর্ধেক দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।