গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
একাঙ্গীর ফুল সুগন্ধযুক্ত এবং তা থেকে সুগন্ধী তেল প্রস্তুত করা যায়। এছাড়া পাতা ও মূল(কন্দ) নানান কাজে ব্যবহৃত হয়। শ্লেষ্মানাশক হিসেবে পাতা ব্যবহার করা হয়। একাঙ্গীর কন্দমূল বেটে চর্মরোগে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। যারা বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করেন তাঁরা একাঙ্গীর গন্ধের সঙ্গে পরিচিত। মাছ শিকারে ‘চার’ তৈরিতে একাঙ্গীর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। একাঙ্গীর মূল সংগ্রহ করার পর টুকরো করে কেটে আদা-হলুদের মতো সংরক্ষণ করা যায়। কোথাও কোথাও একাঙ্গির মূল শুকিয়ে তরকারিতে সুগন্ধী মশলা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সর্দি, মাথার খুসকি, উকুন দূর করতে ও বাতজ্বরে এটির ব্যবহার বেশ কাজে দেয়। বিশ্ববাজারে ব্যাপক চাহিদার কারণে একাঙ্গী সুগন্ধী মশলা বা ভেষজ হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় অনেক দেশেই। এর দামও বেশ ভালো।
সাধারণত এপ্রিলের মধ্য সপ্তাহ থেকে শেষ সপ্তাহের মধ্যে এর কন্দ বসাতে হয়। নির্দিষ্টভাবে তৈরি জলনিকাশি ব্যবস্থা যুক্ত জমিতেই একাঙ্গীর চাষ করা উচিত। একর প্রতি ৩৫০-৪০০কেজি শোধিত বীজ কন্দের প্রয়োজন। একাঙ্গীর সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে লঙ্কা, পেঁয়াজ কিংবা লালশাকের চাষ করা যায়। নাকাশিপাড়া ব্লক কৃষি অধিকর্তা কুসুমকোমল মজুমদার বলেন, উপযুক্তভাবে কন্দ শোধন করে নিলে এবং নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে এই ফসলের যথাযথ ফলন পাওয়া যায়। সাধারণত ২০-২৫গ্রামের বীজ কন্দকে ম্যানকোজেব (৩গ্রাম/লিটার) কিংবা মেটাল্যাক্সিল ৩৫ ডব্লুএস (0.5 গ্রাম/লিটার) জলে গুলে শোধন করে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। কারণ বর্ষার সময় এই ফসলে কন্দ পচা এবং উইল্ট নামক দু’টি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। জল যাতে জমতে না পারে সেই ব্যবস্থা রাখতেই হবে এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব ৪০-৪৫সেমি রাখতে হবে। দু’টি গাছের মাঝে ব্যবধান ২০-২৫ সেমি থাকা উচিত। মাটিতে প্রচুর জৈব সার এবং মুরগির খামারের অর্ধশুষ্ক বর্জ্য দিলে একাঙ্গীর ফলন ভালো হয়। তেহট্ট-১ ব্লকের কৃষি অধিকর্তা আনন্দকুমার মিত্র বলেন, এই চাষ লাভজনক। সাথী ফসল হিসেবেই এর গুরুত্ব রয়েছে। এই চাষ ক্রমশ বাড়ছে।
নাকাশিপাড়ার ব্লকের কৃষক জিয়ার মণ্ডল বলেন, এটা লাভজনক ফসল। তবে ঢলে পড়ে মরে যাওয়াটা একটা সমস্যা। না হলে বিঘা প্রতি এক বছরে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। খুব সাধারণ মানের ফলন হলেও তার বাজার মূল্য কোনও কোনও সময় ৮৫ হাজার থেকে এক লক্ষ পর্যন্ত উঠে যায়। নিজস্ব চিত্র