পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) কাজলকুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, উমপুনের জেরে জেলায় কৃষিতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে, সাগরদ্বীপ, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, কুলতলি, গোসাবা, বাসন্তী এলাকার। যে সব জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে চাষের জমিতে জল ঢুকে গিয়েছিল, সেইসব এলাকায় বিনামূল্যে দেওয়া হবে লুনাস্বর্ণ প্রজাতির ধানের বীজ। আমনে এই ধান চাষ করে কৃষকরা হেক্টরে ৫ থেকে ৬ টন ফলন পাবেন।
বীজতলা তৈরি করতে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। বারুইপুর ও গোসাবার মন্মথনগর কৃষি ফার্মে লুনাস্বর্ণ প্রজাতির ধানের সার্টিফায়েড বীজ মজুত আছে। চাষিদের তা পেতে দেরি হবে না। তবে যে সমস্ত চাষি সব্জি চাষ করতে চান, তাঁরা প্রথমে শাক ফলিয়ে নেবেন। তাতে জমির লবণ অনেকটা কেটে যাবে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা ( বিশ্বব্যাঙ্ক) সুবলকুমার দাস জানিয়েছেন, এখানে হিঙ্গলগঞ্জের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। একের পর এক নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে চাষের জমি। এখানে লুনাসুবর্ণ প্রজাতির ধান চাষ করতে বলা হচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জ ও মিনাখার কৃষি ফার্মে সার্টিফায়েড বীজ আছে। কৃষক বিনামূল্যে পাবেন।
হেক্টর প্রতি চার থেকে ছয় টন ফলন পাওয়া যাবে। কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বর্ষা এসে গিয়েছে। বৃষ্টিতে জমির উপরে জমে থাকা নুন কিছুটা ধুয়ে যাবে। তারপর চাষের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বীজতলা করতে হবে যথাসম্ভব উঁচু জায়গায়।
বহু জায়গাতেই চাষের জমিতে এখনও নোনা জল দাঁড়িয়ে আছে। ওইসব এলাকায় আমনের মরশুমে চাষের জন্য নুন সহ্যকারী লুনাসুবর্ণ প্রজাতির ধানের বীজ দেওয়া হবে। একবার ভালমতো বৃষ্টি হয়ে গেলে জমির উপরিভাগ থেকে কিছুটা নুন ধুয়ে যাবে। তারপর ধৈঞ্চা বুনে দিতে হবে। পরে জমিতেই মিশিয়ে দিতে সেটি। এতে জমির কিছুটা উর্বরতা ফিরবে। ফলে রাসায়নিক সার কম দিতে হবে। যাঁরা সুন্দরবন অঞ্চলে সব্জি চাষ করতে চান, তাঁরা উঁচু জমিতে কাঁচালঙ্কা, উচ্ছে, ঝিঙে চাষ করতে পারেন। লাভজনক টম্যাটো চাষ করা যেতে পারে। তবে একই জমিতে বারবার একই সব্জি চাষ করা উচিত নয়। এতে উৎপাদন কমবে। সুন্দরবন এলাকায় যাঁদের একেবারে নিচু জমি, তাঁরা হামাই প্রজাতির ধান চাষ করতে পারেন। ৮৫ দিনে ফলন পাওয়া যাবে। দুধেশ্বর ধানটিও সুন্দরবনের জন্য উপযুক্ত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ কৃষ্ণেন্দু রায় জানিয়েছেন, সুন্দরবনের নোনা জমির জন্য তাঁরা জাতীয় ধান্য গবেষণা কেন্দ্র থেকে বেশ কয়েকটি প্রজাতি আনিয়েছেন। এছাড়া কিছু দেশি সহনশীল ধানের জাত রয়েছে। কৃষকরা তা বিনামূল্যে পাবেন। চাষের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। উৎপাদনের পর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র চাষিদের কাছ থেকে দাম দিয়ে ওইসব ধানের বীজ কিনে নেবে।