কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
আমাদের রাজ্যে মূলতঃ ১৪টি জেলায় পাট চাষ হয়। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাট ফলানো। রাজ্যের কৃষি কর্তারা বলছেন, গত বছরের মতোই উৎপাদন হবে। উমপুন ঘূর্ণিঝড়ে কিছু জায়গায় বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনায় পাট গাছের ক্ষতি হলেও ফলনে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে উমপুনের জেরে অনেক জমিতে জল জমে যাওয়ায় পাটে কিছু রোগপোকা দেখা দিয়েছে। এখন সেগুলি দমনেই কৃষকদের বিশেষ নজর দিতে বলছেন কৃষি আধিকারিকরা।
ক্রাইজাফের নির্দেশক ড. গৌরাঙ্গ কর বলেছেন, মুক্তভাবে প্রবাহিত জলকে ধরে রেখে পাট পচানোর একটি বিকল্প পন্থা আমরা উদ্ভাবন করেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি মন্ত্রকের আর্থিক অনুদানে ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যে মডেলের মাধ্যমে পাটচাষি তাঁর নিজের জমিতেই ছোট একটি পুকুর খনন করে সেখানে পাট পচাতে পারবেন। এতে কৃষকের যেমন খরচ কমবে, তেমনই পাটের আঁশের মান উন্নত হবে। আর উন্নতমানের আঁশ পাওয়া মানেই পাটের দাম ভাল পাওয়া।
কিন্তু কম জলে পাট পচানোর সেই প্রযুক্তি ঠিক কেমন?
ক্রাইজাফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষক তাঁর জমির ঢালু দিকে এককোণে একটি পুকুর কাটবেন। যেটি লম্বায় হবে ৪০ ফুট, চওড়ায় ৩০ ফুট এবং গভীরতা হবে ৫ ফুট। এই পুকুরে একবারে অর্ধেক একর জমির পাট পচানো যাবে। পুকুরের জল যাতে চুঁইয়ে মাটির নীচে চলে না যায়, সেজন্য ১৫০-৩০০ মাইক্রনের পলিথিন বিছিয়ে দিতে হবে। একবারে তিনটি জাগ দিতে হবে। প্রতিটি জাগে থাকবে তিনটি করে স্তর। জাগ থেকে নীচে ও উপরে যেন ২০-৩০ সেমি জল থাকে।
এই পদ্ধতিতে সুবিধা কী?
ক্রাইজাফের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এতে কৃষককে পাটের বান্ডিল বহন করে দূরে জলাশয়ে নিয়ে যেতে হবে না। ফলে পরিবহণ খরচ বেঁচে যাবে। জমিতে থাকা পুকুর বর্ষার জলেই ভরে যাবে। ওই পুকুরের জলে ক্রাইজাফ সোনা (পাট পচানোর জন্য জীবাণু মিশ্রণ) প্রয়োগ করলে প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় অনেক কম সময়ে (১২-১৫ দিনের মধ্যে) পচানোর কাজ শেষ করা যাবে। এক একর জমির পাট পচানোর জন্য ১৪ কেজি ক্রাইজাফ সোনা লাগবে। দ্বিতীয়বার ওই জলে পাট পচালে ক্রাইজাফ সোনার পরিমাণ ৫০ শতাংশ কম লাগবে। প্রসঙ্গত, পুকুর তৈরির জন্য কৃষক যদি নিজের শ্রম দেন, তাহলে টাকা খরচের প্রশ্ন নেই। নয়তো পুকুরের জন্য এককালীন খরচ ১২ হাজার টাকা। পলিথিন বাবদ খরচ ১০ হাজার টাকা।