গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
বিষ্ণুপুর মহকুমা কৃষি অধিকর্তা(প্রশাসন) হেমন্ত কুমার নায়ক বলেন, মহকুমা এলাকায় মোট ৩৭হাজার ২০০হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তার প্রায় ২৫শতাংশ এলাকা আক্রান্ত হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ২০শতাংশ জমিতে আলুগাছ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার বিষ্ণুপুর ব্লকে তিন হাজার হেক্টর, জয়পুরে ন’হাজার, কোতুলপুরে ১৬হাজার ৫০০, ইন্দাসে দু’হাজার, পাত্রসায়রে চার হাজার, সোনামুখীতে দু’হাজার ৭০০হেক্টর জমিতে আলু চাষ বয়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশ ব্লকেই নাবিধসা রোগের প্রকোপ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ২০শতাংশ আলু গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। চাষিরা চিন্তায় পড়েছেন। তাই ওই রোগে ব্যাপক ক্ষতি ঠেকাতে কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ সচেতনতামূলক প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই মতো লিফলেট ও মাইকিং করা হচ্ছে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, তাপমাত্রার হের ফের সহ বাতাসে আদ্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিষ্ণুপুর মহকুমাজুড়ে আলু গাছে নাবিধসা রোগের উপদ্রব বেড়েছে। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। গত দু’দিন ধরে মহকুমাজুড়ে ঘন কুয়াশায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। মঙ্গলবারও ভোর থেকে অনেক বেলা পর্যন্ত কুয়াশায় সূর্য ঢাকা পড়েছিল। তাই কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে আলু জমি নিয়মিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ম্যানকোজেব, জিনেব, ক্লোরোথালোনিল, কপার হাইড্রক্সাইড, প্রপিনেব, কপার অক্সিক্লোরাইড, ফেনামিডন প্রভৃতি ছত্রাকনাশক ওষুধের যে কোনও একটি প্রয়োগ করতে হবে। একাধিকবার ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপরের ওষুধগুলি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে প্রতিকার হিসেবে ম্যানকোজেবের সঙ্গে সাইমস্কালিন, মেটালাক্সিল, ফেনামিডন, ডাইমেথোমফ অথবা আইপ্রোভ্যালিকার্বের সঙ্গে প্রপিনেব অথবা সাইমস্কালিনের সঙ্গে ফ্যামোস্কোডোন স্প্রে করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, খুব চড়া রোদে এবং আলু গাছের পাতা শিশির অথবা কুয়াশা ভেজা অবস্থায় ওষুধ স্প্রে করা চলবে না। ৬ থেকে ৭দিন অন্তর ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হবে। তবে, এইসময় কোনও নাইট্রোজেন, অনুখাদ্য, উৎসেচক অথবা হরমোন জাতীয় সার প্রয়োগ করা চলবে না। জমি পরিদর্শনের সময় আলু গাছের পাতার তলার অংশ ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পাতায় দাগ দেখা মাত্রই ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। সব মিলিয়ে বিষ্ণুপুর মহকুমা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে এবিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা জানিয়ে এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। এবিষয়ে লিফলেটও বিলি করা হচ্ছে।
কোতুলপুরের কৃষক দামোদর কুণ্ডু বলেন, আমার চার বিঘা আলু চাষ রয়েছে। গাছের বয়স দেড় মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। ধসা রোগ দেখা দেওয়া মাত্র নানা ধরনের বাজার চলতি ওষুধ প্রয়োগ করছি। কিন্তু কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে রোগ ঠেকানো যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। একই মন্তব্য করেছেন সোনামুখী, বিষ্ণুপুর সহ মহকুমার অন্যান্য ব্লকের চাষিরাও।