পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, বীজের জন্য আলু চাষ করলে খেয়াল রাখতে হবে, অন্য প্লটের দূরত্ব কমপক্ষে যেন ১০ মিটার। একই প্রজাতির কোনও আলুর খেতে যদি অন্য কোনও জাতের আলুর গাছ জন্মায় তা দেখামাত্র তুলে ফেলতে হবে। খাওয়ার আলু চাষের জন্য হেক্টরে ২০০ কেজি নাইট্রোজেন, ১০০ কেজি ফসফেট ও ১০০ কেজি পটাশ সার লাগে। কিন্তু বীজ আলু চাষে এর অর্ধেক অর্থাৎ ১০০ কেজি নাইট্রোজেন, ৭৫ কেজি ফসফেট ও ৭৫ কেজি পটাশ সার লাগবে। মূল জমি তৈরির সময় অর্ধেক নাইট্রোজেন ও ফসফেট এবং পটাশ সারের পুরোটা দিয়ে দিতে হবে। বাকি ৫০ কেজি নাইট্রোজেন ২৫-৩০ দিনের মাথায় চাপানের সঙ্গে দিতে হবে। ৪০ দিন, ৫০ দিন ও ৬০ দিনের মাথায় তিনবার বোরন স্প্রে করা দরকার। মাত্রা এক লিটার জলে ১ গ্রাম। আলু তোলার পর মাঠে ঢিবি করে রাখা হয়। এই সময় ৩ শতাংশ বোরিক অ্যাসিড আলুতে স্প্রে করতে হবে। তার পর শুকিয়ে নিতে হবে ছায়ায়। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলায় শেডনেট হাউসে আলুর বীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি নতুন জাত সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে। এ রাজ্যে গড়ে প্রতি বছর ৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়। ফলন হয় ১০ মিলিয়ন টন।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, আলু যাতে কোনও উপায়ে সরাসরি সূর্যালোকর সংস্পর্শে না আসে, সেজন্য দু’বার গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিয়ে ভেলি করে দিতে হবে। প্রথমবার বীজ বসানোর ২৫-৩০ দিনের মাথায় এবং দ্বিতীয়বার ৪৫-৫০ দিন পর। মাটি ধরানোর আগে চাপান সার দেওয়া দরকার। আলুচাষে ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। সেজন্য আগাছার উপদ্রব বেশি হয়। কমপক্ষে ২ বার হাত নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিস্কার করতে হবে। একবার ১৫-২০ দিনের মাথায়। আর একবার ৩০-৩৫ দিনের মাথায়। জলদি ধসা ও নাবি ধসা সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। জলদি ধসা আক্রমণের প্রথম অবস্থায় ছোপ ছোপ বাদামি দাগ দেখা যায়। গাছের নীচের পাতায় এই দাগ বেশি হয়। দাগগুলি পরে একটার সঙ্গে একটা মিশে গিয়ে ঝলসানোর মতো দেখতে হয়। নাবি ধসায় পাতার কিনারা থেকে বাদামি, কালো দাগ পাতার ভিতরের দিকে প্রবেশ করে। স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় ২-৩ দিনের মধ্যে পাতা পচে যায়। ধসা থেকে রেহাই পেতে বীজ অবশ্যই শোধন করে নিতে হবে। রোগ প্রতিরোধক হিসেবে গাছের ৪০-৪৫ দিন বয়সে ম্যানকোজেব আড়াই গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। রোগের উপসর্গ দেখা দিলে সায়মক্সানিল ও ম্যানকোজেব, ডাইমিথোমরফ ও ম্যানকোজেব কিংবা ফেনামিডন ও ম্যানকোজেব, এর যেকোনও একটি তিন গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করা যেতে পারে। নাবি ধসা দেখা দিলে সেচ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ব্যাকটেরিয়া জনিত ঢলে পড়া রোগ দেখা যায় আলুর জমিতে। প্রথমে গাছের উপরের দিকে পাতা নেতিয়ে পড়ে। ২-১ দিনের মধ্যে গোটা গাছ ঢলে পড়ে। এজন্য প্রথম থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।