বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
রাজ্য প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গদাধর দাশ বলেছেন, জলে কার্বনের উৎস হিসেবে চিটেগুড়, ইউরিয়া, আটা, ধানের কুড়ো, মিনারেল মিশ্রণ প্রয়োজন। সরাসরি পুকুরে বায়োফ্লক তৈরি করা যায়। আবার আলাদা পাত্রে তৈরি করে তা পুকুরে বা কৃত্রিম জলাধারে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কুড়ি লিটার জলে বায়োফ্লক তৈরিতে প্রথম দিন ১.১ গ্রাম ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট ০.১৪ গ্রাম, মাছের খাবার ৪ গ্রাম, ডলোমাইট বা মিনারেল মিশ্রণ ৭ গ্রাম দিতে হবে। বায়োফ্লক তৈরিতে কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। যাতে তাড়াতাড়ি বায়োফ্লক তৈরি হয়ে যায়, সেজন্য সুগার, গ্লুকোজ প্রয়োগ করা যেতে পারে। দ্রবণটি মাঝেমধ্যে ঘেঁটে দিতে হবে। যাতে জমাট না বাঁধে। জমাট বেঁধে গেলে তা থেকে ক্ষতিকর পদার্থ তৈরি হতে পারে। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে ওই মিশ্রণে ৪ গ্রাম করে মাছের খাবার ও ৭ গ্রাম করে মিনারেল যুক্ত করতে হবে। বাজারে মিনারেল মিশ্রণ কিনতে পাওয়া যায়। বায়োফ্লক তৈরির জন্য যে মিশ্রণ করা হবে, তার রং প্রথমে সবুজাভ থাকলেও পরে বাদামি হয়ে যায়। ৬ দিন পর ওই দ্রবণ জলাধারে প্রয়োগ করা যাবে। কেন্দ্রীয় মৎস্য শিক্ষা সংস্থানের (কলকাতা) বিজ্ঞানী ড. বিজয়কালী মহাপাত্র জানিয়েছেন, বায়োফ্লকের সাহায্যে জল ও পুষ্টির পুনর্ব্যবহার করা যায়। ফলে খরচ অনেকটাই কমে। যেসব মাছ ফিল্টার ফিডার অর্থাৎ জল থেকে খাবার বেছে খায়, তাদের জন্য এই প্রযুক্তি বিশেষ উপযোগী। রুই, কাতলা, মৃগেল, কই, শিঙি, মাগুর ও চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে বায়োফ্লক দারুণ কার্যকরী। বায়োফ্লক তৈরির জন্য দশ লিটার জলে ১ কেজি চিটে গুড় এবং ৫০-১০০ গ্রাম প্রোবায়োটিক মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। তার পর তা জলাধারে প্রয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে, যে জলাধারে বায়োফ্লক প্রয়োগ করা হবে সেখানে প্রথমে জল দিতে হবে। এর পর এক লিটার জলে ১ গ্রাম মাত্রায় লবণ মেশাতে হবে। ২৪ ঘণ্টা দেখতে হবে। তার পর পিএইচ মাপতে হবে। যদি দেখা যায় জল আম্লিক রয়েছে, তা হলে প্রয়োজনমতো চুন বা ডলোমাইট প্রয়োগ করতে হবে। তার পর আরও একদিন অপেক্ষা করে মাছ ছাড়তে হবে। যদি দেখা যায় মাছের কোনও সমস্যা হচ্ছে না অর্থাৎ মাছ মারা যাচ্ছে না, তা হলে মাছ ছাড়ার ৬ ঘণ্টা পর থেকে খাবার দেওয়া শুরু করতে হবে। মাছের বর্জ্য থেকে জলে নাইট্রোজেন যোগ হবে। আর প্রোবায়োটিকের সঙ্গে যে গুড় দেওয়া হচ্ছে তাতে রয়েছে কার্বন। এই দুইয়ের উপস্থিতিতে ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়ে উঠবে। এবং জলে মাছের জন্য প্রাকৃতিক খাবার তৈরি হতে শুরু করবে।