পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেক্সিকান সাদা মাছির পোশাকি নাম রুগোজ স্পাইরালিং হোয়াইট ফ্লাই বা পাকখাওয়া সাদা মাছি। এপ্রিল মাসের গোড়ায় বিভিন্ন ব্লকের চাষিদের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে জেলা কৃষি ও উদ্যানপালন বিভাগের। ১৮ এপ্রিল ও ৭ মে পর পর দু’টি বিশেষজ্ঞ দল মেক্সিকান সাদা মাছির ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে জেলায় আসে। রাজ্যের মুখ্য কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞরা এসে কৃষি দপ্তর ও চাষিদের সাদা মাছি ঠেকানোর কিছু পরামর্শ দেন। ওই বিশেষজ্ঞ দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্ডিয়ান কোকোনাট এগ্রিকালচারাল রিসার্চ সংস্থার ‘রুগোজ স্পাইরালিং হোয়াইট ফ্লাই’ বা সাদা মাছি বিশেষজ্ঞ কে সিলভারাজ। তিনি প্রাকৃতিক উপায়ে সাদা মাছি ঠেকানোর জন্য বিশেষ ধরনের পরজীবী ‘এনকারসিয়া’ ও কীটরোগ সৃষ্টিকারী ছত্রাক ‘আইসেরিয়া’ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। কারণ, দক্ষিণ ভারতে এভাবেই সাদা মাছির উপদ্রব কমানো সম্ভব হয়েছে।
চাষিরা বলেন, গত দেড় মাস ধরে প্রথমে নারকেল গাছে বা অন্যান্য আক্রান্ত গাছে এনকারসিয়া প্যারাসাইট বা পরজীবী পোকা প্রয়োগ করেও সাফল্য আসেনি। সাদা মাছি কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষামূলকভাবে প্যারাসাইট পোকার ডিম বিভিন্ন গাছের পাতায় ছেড়ে দেন। এই ডিম ফুটলে সাদা মাছির ডিম নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানিয়েছিলেন। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা বলেন, ৩৫ ডিগ্রির উপর তাপমাত্রা থাকায় প্রচণ্ড গরমে এনকারসিয়া প্যারাসাইট ঠিক কার্যকরী হচ্ছে না। ফলে সাদা মাছি দমন করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। যেখানে অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে এনকারসিয়া নেই, সেখানে আইসেরিয়া নামে এক ধরনের ছত্রাক ৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে আঠা সহযোগে গুলে সন্ধেবেলা স্প্রে করা হচ্ছে। ১৫ দিন পর পর দু’বার প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এখনও সদর্থক কোনও উত্তর চাষিদের কাছ থেকে মেলেনি। এখন কৃষি দপ্তর বর্ষার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। জেলা কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, সাদা মাছির আক্রমণে নারকেল গাছের পাতা সবুজ থেকে ধীরে ধীরে কালো হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। নার্সারিতে ছোট ছোট নারকেল চারা বা বিভিন্ন ধরনের পাম গাছের চারা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। পানের পাতা, কলাগাছের পাতা, আম-জামের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চাষিদের কোনও ধরনের রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করতে নিষেধ করা হয়েছে। পরজীবী বা ছত্রাকের মতো প্রাকৃতিক শত্রুর মাধ্যমে এদের নিয়ন্ত্রণ করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এজন্য বর্ষা নামার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। তবে অন্য ব্লকে বা রাজ্যের অন্যত্র যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য নার্সারিগুলিকে পামজাতীয় বা অন্যান্য ফলের চারা বুপ্রোফেজিন জাতীয় কীটনাশক দিয়ে শোধন করে তবেই বিক্রি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।