গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মারাঠি ছবি ‘মুলশি প্যাটার্ন’-এর রিমেক এই ছবি। তাই গল্প হয়তো অনেকেরই জানা। মূল ছবিতে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মহেশ মঞ্জরেকর। তিনিই এই ছবির পরিচালক। তবে বলিউডের শর্ত মেনে মূল গল্প থেকে ‘অন্তিম’-এর চিত্রনাট্যে অনেকটাই রদবদল ঘটেছে। গল্পের প্রেক্ষাপটে রয়েছে প্রোমোটার ও গ্যাংস্টারদের চাপে মহারাষ্ট্রের কৃষকদের জমি হারানোর আখ্যান। বাবার জমি হাতছাড়া হওয়ার পর রাহুল (আয়ুষ) পুনের এক অপরাধী গ্যাংয়ে শামিল হয়। প্রতিশোধ নিতে সে একসময় শহরের মার্কেট ইয়ার্ড অঞ্চলের নতুন ‘ভাই’ হয়ে ওঠে। পুলিস অফিসার রাজবীর সিং (সলমন) কীভাবে তাঁকে শায়েস্তা করে, তা নিয়েই ছবি।
এর আগে ‘হিরোজ’ ছবিতে সলমনকে শিখ সেনা অফিসারের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল। এবারে তিনি শিখ পুলিস অফিসার। তবে ‘দাবাং’ বা ‘রাধে’র মতো লার্জার-দ্যান-লাইফ ইমেজ রাজবীরের নয়। চরিত্রটা অনেক বেশি বাস্তবসম্মত। শার্ট, পাগড়ি, দাড়ি আর সানগ্লাসে তাঁর লুক মন্দ নয়। তবে সংলাপ থেকে শুরু করে অভিনয়— সলমন সাম্প্রতিক অতীতে যা করে এসেছেন এখানেও সেটাই করেছেন। নতুন কিছু নেই। আয়ুষকে নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। কয়েক বছর আগে ‘লাভযাত্রী’ ছবির হাত ধরে বলিউডে সাদামাটা ডেব্যু হয়েছিল তাঁর। এবার তিনি নিজেকে অনেকটাই ভেঙেছেন। সলমনের মতো অভিনেতাকে টক্কর দেওয়া সহজ নয়। চিত্রনাট্য আয়ুষকে সাহায্য করেছে। শ্যালকের কেরিয়ার ঘোরাতে সলমন নিজেই এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না তা অবশ্য জানা নেই।
ছবির অন্যান্য চরিত্রে শক্তিশালী অভিনেতাদের কাস্ট করেছেন পরিচালক। নানিয়া ভাইয়ের চরিত্রে উপেন্দ্র লিমায়ে, রাহুলের বাবার চরিত্রে শচীন খেড়কর বা সৎ পুলিস অফিসারের চরিত্রে সায়াজি শিণ্ডে— সকলেই প্রত্যাশা মতোই অভিনয় করেছেন। নিকিতিন ধীর, মহিমা মাকওয়ানা সেইভাবে জায়গা পাননি। বাংলা থেকে এই ছবিতে যিশু সেনগুপ্ত রয়েছেন। তিনি বিরোধী গ্যাংয়ের পিট্যা ভাই।
অভিজিৎ দেশপাণ্ডে ও সিদ্ধার্থ সালভির সঙ্গে পরিচালকের লেখা এই ছবির চিত্রনাট্যে বেশ কিছু ফাঁকফোকর রয়েছে। ফলে চরিত্রগুলো সবক্ষেত্রে জীবন্ত হয়ে উঠতে পারেনি। তাদের উত্থান থেকে শুরু করে পরিণতি দর্শকের কাছে চেনা ঠেকে। ছবিটা দেখতে দেখতে ‘বাস্তব’ ছবির কথাও অনেকের মনে পড়তে পারে। উল্লেখ্য, সেই ছবিরও পরিচালক ছিলেন মহেশ। সলমন খানের ছবি মানেই সুপারস্টারের মুখে চটকদার সংলাপ দর্শকদের বাড়তি বিনোদনের খোরাক। তা বলে ‘চিরকাল কিছুই টেকে না, শুধু প্লাস্টিক ছাড়া!’—এহেন সংলাপ ছবিকে অন্তত কোনও বাড়তি সুবিধা দেয়নি। গানগুলোর কোনও প্রয়োজন ছিল না। ‘বিঘ্নহর্তা’ গানে বরুণ ধাওয়ানের গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্সও মাঠে মারা গিয়েছে। ছবির দ্বিতীয়ার্ধ অনেকটাই দীর্ঘ। চেজ সিক্যুয়েন্সগুলোয় কাঁচি চালানো যেত। সলমনের আগমন বা অ্যাকশন দৃশ্যে দক্ষিণী ছবি ‘কেজিএফ-চ্যাপ্টার ওয়ান’ খ্যাত রবি বসরুরের আবহসঙ্গীত বেশ ভালো।
সব মিলিয়ে ‘অন্তিম’ প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ। আপনি সলমনের ফ্যান হলে বড়পর্দায় ভাইজানকে অন্যরূপে দেখার চান্স নিতেই পারেন। অনেকদিন পর নিজের বয়সকে মাথায় রেখে অভিনয় করলেন তিনি। ছবিতে তাঁর কোনও নায়িকা নেই। নেই কোনও নাচ। তাই আগামী দিনে তিনি কীভাবে নিজেকে দর্শকদের সামনে হাজির করবেন তার অপেক্ষায় থাকবেন অনুরাগীরা।