পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
২০ বছর কেটে গেল ইন্ডাস্ট্রিতে। লম্বা সময়। ফিরে দেখতে কেমন লাগছে, ভবিষ্যৎ নিয়েই বা কী ভাবছেন?
আরও অনেক বেশি কাজ করব, এই আশাটাই রাখি মনে মনে। আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চাই। তবে, আমি অতীতচারণায় খুব একটা বিশ্বাস করি না। কারণ, কোনও মানে হয় না। আমার মতে, পিছন দিকে ফিরে না তাকিয়ে সামনে দেখো, যেটা আসছে সেটা নিয়ে ভাব। এটাই আমার দর্শন বলতে পারেন।
তবু অভিনেতা হিসেবে তো পাল্টেছেন? কতটা?
সেটা তো আপনারা বলবেন। আপনারা কীভাবে দেখেন আমায়। দেখুন, নিজেকে গড়েপিটে নেওয়ার কাজটা চলতে থাকে সবসময়ই। যাকে বলে, ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস। নিজেকেও সেভাবেই দেখি। কোনও অভিনেতাই বলতে পারেন না, হ্যাঁ ভাই সব জানা-শেখা হয়ে গিয়েছে। যত দিন এগবে, শেখাও চলবে।
জীবনের প্রথম ওয়েব সিরিজের শুরুটা কীভাবে হল?
বছর দুই আগেকার কথা। ‘মনমর্জিয়াঁ’র কাজ সবে শেষ করেছি। তারপরেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিক্রম মালহোত্রা (প্রযোজক) আর মায়াঙ্ক শর্মা (পরিচালক)। ওঁদের সঙ্গে মিটিং হয়েছিল। ওঁরা সেখানেই গল্পটা বলেছিলেন। এত টানটান প্লট, সঙ্গে সঙ্গেই ভালো লেগে যায়। তখনই হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। ব্যস কাজ শুরু করতেও আর দেরি হয়নি।
ব্রিদ-এ আপনি তো বাবার চরিত্রে যার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। নিজে বাবা হিসেবে কীভাবে দেখেছিলেন চরিত্রটাকে?
দেখুন, এই রকম একটা কিছু ঘটলে যে কোনও বাবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে। অসম্ভব একটা সঙ্কট। সেই আবেগটাই সবচেয়ে জোরালো। বাবা হিসেবে সেটার সঙ্গেই রিলেট করতে পেরেছি।
অমিত সাধ আর চোকড-খ্যাত সায়ামি খেরের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
অমিত অসম্ভব ভালো অভিনেতা। দারুণ কাজ করেছে। সায়ামির রোলটা খুব চ্যালেঞ্জিং। সেও খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে চরিত্রটা। আমার স্ত্রীর চরিত্রে নিত্যা মেননও খুব ভালো কাজ করেছেন। সকলেই প্রচুর পরিশ্রম করেছেন।
কাজ ছাড়া বাকি সব কেমন লাগছে এই মুহূর্তে, বাড়িতে তো সবাই একসঙ্গে?
হ্যাঁ, এই সময়টা ওই একটা দিক থেকেই অসাধারণ। সবাই এভাবে বাড়িতে একসঙ্গে থাকার সুযোগ তো এর আগে পাইনি। টেনশন আছে। বাবা-মায়ের বয়স হয়েছে। মেয়েও ছোট। তবে, তার সঙ্গেই বলব, খুব ভালো কাটছে সময়টা।
‘গুলাবো সিতাবো’ কি সবাই মিলে দেখলেন বাড়ি বসে?
হ্যাঁ, মুক্তির রাতেই সবাই একসঙ্গে দেখলাম। দারুণ লেগেছে। বাড়ির সবারই খুব ভালো লেগেছে। যদিও আমি আগে দেখে ফেলেছিলাম, তখনও ওটা প্রোডাকশনে। বাবা এককথায় জাস্ট ব্রিলিয়ান্ট! আয়ুষ্মানও অসম্ভব সূক্ষ্ম। ঝকঝকে একটা নতুন গল্প। সুজিতদার গল্পে এই প্রত্যাশাটা থাকেই। সবচেয়ে ভালো কথা, দর্শকরা বঞ্চিত হননি, অনলাইনে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখতে পেরেছেন।
‘গুলাবো সিতাবো’র অনলাইন মুক্তির পরে বলা হচ্ছে, ওটিটি রিলিজ তো এখন নিউ নর্মাল। সিনেমার ব্যবসাতেও বদল আসছে। আপনার কি মনে হয়?
আমি একেবারেই একমত। দর্শক আমাদের কাজ দেখার একটা ভালো সুযোগ পাচ্ছেন। এখন যা অবস্থা, তাতে কেউই জানি না, কবে সিনেমা হল খুলবে। বা খুললেও লোকজন আদৌ আসতে ভরসা পাবেন কিনা। তাই এই মাঝখানের সময়টা দর্শকের কাছে এইভাবে পৌঁছনো যাচ্ছে। এটা তো দারুণ পাওনা।
ওটিটি বনাম সিনেমা হল। আপনার পছন্দ কোনটা?
দর্শক আমার কাজ দেখলেই আমি খুশি। তা সে যেভাবেই হোক।
কিন্তু সিনেমা হলের যে অন্য আমেজ, সেটা মিস করছেন না?
অবশ্যই মিস করছি। সিনেমা হলে গিয়েই ছবি দেখতে ভালোবাসি। কিন্তু এখন ওটিটি-তে যে ধরনের কাজ হচ্ছে, সেগুলোও ভালো লাগছে।
কলকাতা জানতে চায় বব বিশ্বাসের কী হল?
এখনও ১২ দিন মতো বাকি আছে শ্যুটিংয়ের। কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে আসতে হল আমাদের। সরকারিভাবে অনুমতি পাওয়ার আগে তো কিছু হবে না। আমাদের কলকাতায় যেতে হবে। তারপরে আবার শ্যুট শুরু হবে। জানুয়ারি থেকে মার্চ, টানা তিন মাস কলকাতায় ছিলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা। খুব ভালো লাগছিল। কবে আবার ফিরে যাব আপনাদের শহরে, এখন সেটাই ভাবছি।
যুবা-র এতদিন পরে আবার কলকাতায় শ্যুটিং। কেমন লাগল?
অসাধারণ। শহর হিসেবে কলকাতাকে ভীষণ ভালোবাসি। এখানকার মানুষকে ভালো লাগে। বব বিশ্বাসের শ্যুটিংয়েও দারুণ সব মুহূর্ত কাটিয়েছি। তাই তো বলছি, তর সইছে না...কবে যে আপনাদের শহরে আবার ফিরব।
কলকাতার আর কী প্রিয়?
মানুষের মধ্যে যে ভালোবাসা, তার কোনও তুলনা হয় না। সত্যিই ‘সিটি অফ জয়’। আর আপনাদের খাবারদাবারও ভীষণ পছন্দ আমার। চুটিয়ে খেয়েদেয়ে দিন কেটেছে।
সবচেয়ে বেশি কী ভালো লেগেছে?
(হাসতে হাসতে পরিষ্কার বাংলায় বললেন) মিষ্টি! সবরকম। শ্যুটিংয়ের সময়ে জলভরা সন্দেশ, রসগোল্লা কিছু বাদ দিইনি। যখন যেমন সুযোগ পেয়েছি, আশ মিটিয়ে খেয়েছি।