কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
আপনি তো দেখছি বেশ ঘন ঘন কলকাতায় আসছেন?
(হেসে) হ্যাঁ, কাজ থাকলে তো আসতেই হয়। তাছাড়া এখানে ‘মেরি পেয়ারি বিন্দু’র শ্যুটিং করেছিলাম। আমার মনে হয় কলকাতা ছোট ও বড় শহরের মিশ্রণ। তাই এই শহরের বৈশিষ্ট্যগুলো বাকি শহরের থেকে আলাদা। আমার পছন্দের শহরগুলোর মধ্যে কলকাতা রয়েছে।
জাতীয় পুরস্কার ঘোষণার দিনটা মনে আছে?
খুব মনে আছে। আমি একটা বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং করছিলাম। শটের পরে দেখলাম আমার ফোনে ১৫টা মিসড কল! রীতিমতো চমকে গিয়েছিলাম। নিজের মনেই ভাবলাম যে কী হল রে বাবা! তখনও আমি জানতাম না যে সাংবাদিক সম্মেলন দূরদর্শনে লাইভ চলছে। মুহূর্তের মধ্যে ফোন ভরে গেল শুভেচ্ছা বার্তায়।
আর আপনি তখনও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে যেন কিছুই হয়নি ভেবে ফ্লোরে চলে গেলেন?
সত্যি বলতে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে বিষয়টা বুঝতে পারি। ভিকি কৌশল আমাকে ফোন করে প্রথম খবরটা জানিয়েছিল।
জাতীয় পুরস্কারের পর একজন অভিনেতা হিসেবে আপনার দায়িত্ব কি আরও বেড়ে গিয়েছে মনে হয়?
সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। কয়েকটা হিট বা বলা উচিত উল্লেখযোগ্য ছবি দর্শকদের উপহার দেওয়ার পর আপনার থেকে তাঁদের প্রত্যাশা আরও বেড়ে যায়। আর এই চাহিদাটা আমি উপভোগ করি। কারণ এই প্রত্যাশার জন্যই কিন্তু দর্শক আপনার ছবির টিকিট কাটেন। পাশাপাশি এটা কিন্তু আপনাকে আরও সাহসী করে তোলে। আরও রিস্ক নেওয়ার ক্ষমতা জোগায়।
সেই জন্যই কি ‘শুভ মঙ্গল...’ এর মতো ছবি করলেন?
বলতে পারেন। আমার জার্নিটাই তো এইভাবে শুরু হয়েছিল। ‘ভিকি ডোনর’ তো ভারতীয় ছবিকে অন্যমাত্রায় সাহস জুগিয়েছিল।
আইপিসি ৩৭৭ এর পর এই ধরনের ছবি কি দর্শকদের মধ্যে আদৌ পরিবর্তন আনতে পারবে?
দেখুন, রাতারাতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো সহজ নয়। যদিও আমার মতে সুপ্রিম কোর্টের এই আইন সাম্প্রতিক সময় দেশের অন্যতম উল্লেখযোগ্য আধুনিক পদক্ষেপ। এই পরিস্থিতিতে এরকম একটা ছবি যা সমকামিতা কেন্দ্রিক, তার কিন্তু প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এই বিষয়ে কোনও সমান্তরাল ছবি তৈরি হলে তার দর্শক সংখ্যা হতো সীমিত। বাণিজ্যিক ছবির ক্ষেত্রে যারা সমকামিতার বিরোধী তাঁরাও কিন্তু আমাদের টার্গেট অডিয়েন্স হয়ে উঠছেন।
এই ছবিতে পুরুষ সহ অভিনেতাকে আপনার চুম্বনের দৃশ্য তো ভাইরাল। কতটা কঠিন ছিল?
(প্রচণ্ড হেসে) একজন অভিনেতার সবরকমের দৃশ্যের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। আমিও সব রকমের দৃশ্যের জন্য প্রস্তুত। কই পর্দায় নায়িকার সঙ্গে চুম্বন অভিজ্ঞতা নিয়ে তো কেউ আমাকে প্রশ্ন করে না! আমি তো সেটাও করেছি। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠছে কেন?
পর পর হিট ছবি। আপনার এই সাফল্যের পিছনে কি কোনও নির্দিষ্ট ফর্মুলা রয়েছে?
(হেসে) ফর্মুলা একটাই যে প্রত্যেকবার আমাকে একটা নতুন কিছু করতে হবে। মোদ্দা কথা ছবির কনসেপ্টটা আলাদা হতে হবে। সেটা কোনও ট্যাবু নিয়ে হতে পারে বা কোনও প্রাসঙ্গিক সামাজিক সমস্যা নিয়ে। আমি সবসময় শিল্পের সঙ্গে বিনোদনকে মিশিয়ে দিতে চাই। আমার ছবি যেন দর্শকের মনে প্রশ্ন তৈরি করতে পারে।
চিত্রনাট্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনি কি সবসময়েই সামাজিক বার্তা খোঁজেন?
ছবিটা দর্শককে দু’ঘণ্টার জন্য আকর্ষণ করবে কিনা সেটাই দেখি। বার্তা বা বিষয়ের সারসংক্ষেপ পরে আসে। সেখানে কোনও বার্তা লুকিয়ে থাকলে ক্ষতি নেই। যেমন, ‘ড্রিম গার্ল’ এর মধ্যেও একটা বার্তা লুকিয়ে রয়েছে যা ‘আর্টিকেল ফিফটিন’ এর থেকে আলাদা।
অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগকে আপনি ‘স্বপ্ন পূরণ’ বলেছিলেন। ‘গুলাবো সিতাবো’তে ওঁর সঙ্গে কাজ করে নতুন কিছু কি শিখলেন?
অনেক কিছু। উনি তো নিজেই একটা পীঠস্থানের সমান। সবথেকে বড় কথা এই বয়সেও তিনি যেন বছর কুড়ির তরুণ তুর্কী। এমনই ওঁর এনার্জি। সব সময় নতুন প্রজন্মের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছেন। প্রযুক্তি তাঁর নখদর্পণে। সব বিষয়ে আপ টু ডেট। আর সেইজন্যই তিনি হয়তো আজকের সবথেকে বড় মেগাস্টার।
সাম্প্রতিক অতীতে বলিউডে আপনি ‘স্টারডম’ শব্দটার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছেন। বড় বাজেট বা বড় স্টারকাস্ট আজকে দর্শক বর্জন করছেন। খানদের জন্য কোনও টিপস দেবেন?
আমি ওঁদের কোনওরকম টিপস দেওয়ার যোগ্য নই। ওঁরা নিজের ভালো বোঝেন। তিন দশক ধরে ওঁরা ইন্ডাস্ট্রি শাসন করছেন। সেই ছোটবেলা থেকে আমি ওঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাই তুলনার কোনও প্রশ্নই নেই। আমাকে এতগুলো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটাতে দিন। তারপর না হয় কিছু বলব।
সাফল্য মানুষের মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু আপনি এখনও নিজেকে মাটির কাছাকাছি রেখেছেন কীভাবে?
হয়তো আমি যে ধরনের ছবি করি সেগুলো আমাকে এটা শিখিয়েছে। এই ছবিগুলো সাধারণ মানুষের কথা বলে। আমিও সাধারণ জীবন যাপন করতেই পছন্দ করি। তাছাড়া মাটিতে পা না থাকলে আমি তো নিজের প্রতি সুবিচার করব না।
প্রত্যাখ্যানকে মেনে নিয়েই তো জীবন এগিয়ে চলে। কেরিয়ারের শুরুতে যাঁরা আপনাকে ‘না’ বলেছিলেন বা আপনার উপর বিশ্বাস রাখতে পারেননি আজকে ফিরে তাকালে তাঁদের কিছু বলতে ইচ্ছে করে?
কারও যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা উচিত নয়। কারণ আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেকটা মানুষের যোগ্যতা অসীম। সেইজন্য দেখবেন আজ পর্যন্ত আমি কারও সমালোচনা করিনি। কারও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। কারণ আজকের সাধারণ মানুষই যে কাল অসাধারণ হয়ে উঠবেন না, সেটা কে বলতে পারে!