কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
কলকাতায় পা রাখার আগে ইনস্টাগ্রামে জোকারের ছবি পোস্ট করলেন। আর সেটা মুহূর্তে ভাইরাল। রহস্যটা কী একটু বলবেন?
কোনও রহস্য নেই ভাই। আমার টিমের একজন ওই ফিল্টারটা দেখাল আর আমিও ছবি তুলে পোস্ট করে দিলাম। এখন ভাইরাল হলে হোক। কী আর করা যাবে। আসলে আমি অত ভেবেচিন্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করি না (হাসি)।
‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’ এর পর বেশ অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। আবার কলকাতায় এসে কেমন লাগছে?
দু’বছর কেটে গিয়েছে। খুবই ভালো লাগছে। আমার তো শুরুটাই এই শহর থেকে হয়েছিল। প্রথমবার যেটুকু প্রচারের আলো পেয়েছিলাম, সেটা তো কলকাতার দৌলতে। কারণ এখানেই আমি ‘গুন্ডে’র শ্যুটিং করেছিলাম। কলকাতা আমার পেশাদার জীবনের মধ্যে গেঁথে রয়েছে।
সেই দিনগুলোর স্মৃতি নিশ্চয়ই এখনও আপনার মনে টাটকা?
অবশ্যই। ওটাই ছিল আমার প্রথম কলকাতা ভ্রমণ। আর এখানে প্রায় পঞ্চাশ দিন কাটানো মানে বুঝতেই পারছেন একরাশ স্মৃতি। তখন অত ক্যামেরা বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কের দাপট ছিল না। আমাদের মানুষ সেইভাবে চিনত না। মনে আছে আমি আর রণবীর (সিং) প্রতিদিন রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম। রণবীরের চোট, ‘তুনে মারি এনট্রি’, কয়লা খনি, এখানকার খাবার— সব মনে রয়েছে। মনে আছে শুধুমাত্র কলকাতার খাবারের জন্য মাঝখানে ছুটি পেয়েও আমি মুম্বই ফিরে যাইনি।
আর সংবাদমাধ্যমের দৌরাত্ম?
(হাসতে হাসতে) বাপরে বাপ! আমাদের যে কোথায় কোথায় ধাওয়া করেছিলেন আপনারা বলে শেষ করতে পারব না। ওই সময়টায় ‘বরফি’র দৌলতে কলকাতা নিয়ে একটা আলাদা উত্তেজনা ছিল। শেষে যখন সাংবাদিক সম্মেলন করলাম ততদিনে দেখলাম আমাদের সব ছবি প্রকাশ্যে চলে এসেছিল।
এই প্রথম জাহ্নবীর সঙ্গে র্যাম্পে হাঁটবেন। আপনাদের ভাই-বোনের সম্পর্ক নিয়ে তো সবসময় আলোচনা হয়।
আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে ব্যস্ত। আমরা মুম্বই থেকে আলাদা ফ্লাইটে কলকাতায় এলাম। আমরা একসঙ্গে থাকি না। তাহলে একটা মজার কথা বলি?
বলুন...
কাল রাতে বাবাকে বললাম যে, আমি কলকাতা যাচ্ছি। তা সেটা শুনে বাবা জানতে চাইলেন আমি কেন যাচ্ছি! তখন কারণটা ওঁকে বললাম। বলতেই বাবা বললেন ‘হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে।’ তাহলে বুঝতেই পারছেন পরিবারের মধ্যেই কেউ খবর রাখে না যে কে কী কাজ করছে। কাজের ক্ষেত্রে আমরা খুবই পেশাদার।
(পাশে রাখা অর্জুনের ফোনে ভেসে উঠল ‘ড্যাড কলিং’। বললেন, ‘বলতে বলতে বাবার ফোন। সাক্ষাৎকারটা শেষ হতেই একবার ওঁকে ফোন করতে হবে।’)
তবে এটা বলব যে ও খুব ভালো কাজ করছে। আমার পরিবার থেকে ফ্যাশনের জন্য তো সাধারণত সোনমকে (কাপুর) বা জাহ্নবীকে বাছা হয়। অনামিকা (খান্না)আমাকে বেছেছেন বলে আমি কৃতজ্ঞ। ভালো লাগছে। আজকে ওর সঙ্গে র্যাম্পে হাঁটা জীবনের অন্যতম সেরা স্মৃতি হতে চলেছে।
একটু আগে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় জাহ্নবী তো মন খুলে আপনার প্রশংসা করলেন।
(মুচকি হেসে) করাই তো উচিত। ওর কাছে আর কোনও অপশন নেই।
আপনার স্টাইল মন্ত্রটা কী?
কমফোর্ট। দেখুন, অভিনেতার জীবনে তার ফ্যাশন বা স্টাইলিং তো সবসময় অন্য কেউ করে দেয়। ব্যক্তিগত জীবনে আমি কোনও ফ্যাশন ট্রেন্ড অনুসরণ করি না। তাছাড়া আমার শরীরটাও পাশ্চাত্য ঘেঁষা নয়।
স্টাইলিং নিয়ে ফ্যানদের জন্য কোনও টিপস দেবেন?
এটাই বলব, ট্রেন্ড আসবে যাবে। কিন্তু মানুষটা একই থাকবে। তাই সবসময় নিজের মনের কথা শুনেই ফ্যাশন সেন্স তৈরি করা উচিত।
এই প্রথম একজন বাঙালি পরিচালকের (দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে কাজ করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
অসাধারণ। দীর্ঘদিন ওঁর সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল। বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, যশরাজের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করার সময় আদি (আদিত্য চোপড়া) যাঁদের ছবিতে আমি কাজ করতে চাই এরকম দশজন পরিচালকের তালিকা তৈরি করতে বলেছিলেন। ওই তালিকায় দিবাকরের নাম ছিল। দিবাকরের সঙ্গে আমার আধ ঘণ্টার মিটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই মিটিং চলেছিল ভোর পাঁচটা পর্যন্ত।
ছবিতে আপনার চরিত্রটা নিয়েও তো আলোচনা হচ্ছে।
ছবিতে (সন্দীপ অউর পিঙ্কি ফারার) আমি গুরগাঁওয়ের পাঞ্জাবি পুলিসের চরিত্রে। তিন মাসের প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। দিবাকর স্যর নিজে আমাকে সংলাপের কোচিং করিয়েছিলেন। আসলে উনি খুব ডিটেলে কাজ করতে পছন্দ করেন। আপনি মনে করিয়ে দিলেন বলে ওঁকে একবার ফোন করতে হবে (হাসি)।
বলিউডে আট বছর সময় কাটালেন...
(হেসে) হ্যাঁ, চুলে পাক ধরেছে।
এখন কী কী মাথায় রেখে চরিত্র নির্বাচন করেন?
কিছুই না। মাথা ফাঁকা রাখতে চাই। কারণ মাথা ফাঁকা থাকলে তাহলেই নতুন আইডিয়াগুলো আসবে। তবে এই অল্প সময়ে আমি যে এত রকমারি স্বাদের চরিত্রে অভিনয় করতে পেরেছি, তার জন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়।
আর বক্স অফিসের সাফল্য বা ব্যর্থতা?
ভালো খারাপের মিশেলেই তো জীবন। এর বেশি কিছু ভাবি না।
এই দীর্ঘ সময়টা কাটানোর পর একজন অভিনেতা হিসেবে নিজের মধ্যে কী কী পরিবর্তন এসেছে?
এই বছর তো আপনি আগের বছরের মতো থাকবেন না। জীবনযাত্রা আপনাকে অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়। পনেরোটা ছবি করে ফেললাম। আগে বুঝতে পারতাম না। এখন অনেকটাই একাগ্রতা বেড়েছে। পরিণত হয়েছি। চার-পাঁচ বছর আগে আমাকে ঘিরে কোনও অনুষ্ঠানে মানুষের পাগলামোটা উপভোগ করতাম। ছবির প্রচার করতে হলে একটু ঘাবড়ে যাই। বরুণের (ধাওয়ান) অবশ্য এখনও কোনও পরিবর্তন আসেনি। ও এখনও সমান এনার্জি নিয়ে ছবির প্রচার করে (হাসি)। আমি বরং অনেকটাই বদলে গিয়েছি। বাড়িতে থাকতেই বেশি ভালো লাগে। জীবনের এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে এখন মনে হয়, নিজে না বলে আমার কাজই আমার হয়ে কথা বলুক।