পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এই বছরটা কেমন কাটল?
অসাধারণ। বুঝতেই পারিনি কীভাবে সময় কেটে গেল। গত বছর ডিসেম্বরে ছুটি নিয়েছিলাম। তারপর থেকে টানা কাজ করছি। চেনা পরিচিত এক ঝাঁক মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলাম। এটা আমার এই বছরের পঞ্চম ছবি। আশা করছি ‘দাবাং ৩’ রিলিজের পর একটু ছুটি পাব। সামনের বছরের জন্য বেশ কিছু বড় চমকও অপেক্ষা করছে। ঠিক সময় জানতে পারবেন।
আপনি সলমনকে এত বছর ধরে চেনেন। ওর সঙ্গে আপনার সম্পর্কটা এখন কীরকম?
১৬ বছর বয়স থেকে ওঁকে চিনি। কারণ আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক খুবই ভালো। সময়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটাও ভালো হয়েছে।
হাতে গোনা মানুষ সলমন খানের সঙ্গে বারবার অভিনয়ের সুযোগ পান। ওঁর থেকে কী কী শিখেছেন?
কাজের প্রতি সৎ থেকেও কীভাবে একইসঙ্গে আকাশ প্রমাণ স্টারডমকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সেটা ওঁর থেকে শেখার জিনিস। হাজার মানুষের ভিড়েও ওঁর ব্যক্তিত্বকে আলাদা করে বোঝা যায়। আর সেইজন্যই তো তিনি সলমন খান। লোকে ওঁকে ‘ব্যাডবয়’ বলেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন ওঁর মতো বড় মনের মানুষ খুব কম পাওয়া যায়। এখনও উনি একইরকম আছেন। সলমন আমাকে কোনও উপদেশ দেন না, কিন্তু শ্যুটিংয়ের মাঝে ওঁর সঙ্গে কথোপকথন চললে অনেক কিছু শিখে নেওয়া যায়। নিজের কেরিয়ারের অভিজ্ঞতাগুলো যখন সলমন সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন, তখন সেটা নতুনদের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে ওঠে।
‘দাবাং’ সিরিজের হাত ধরে আপনি নিজে কতটা বদলেছেন?
আমার মনে হয় না যে খুব বেশি বদলেছি। গত ৯ বছরে ‘দাবাং’ আমার প্রথম ছবি আর আজকে ‘দাবাং ৩’ আমার ২৫তম ছবি হতে চলেছে। তাই অভিনেত্রী হিসেবে পরিণত হয়েছি অনেকটাই। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছি। সহ-অভিনেতাদের সঙ্গেও খুব ভালো সম্পর্ক রাখতে পেরেছি। ব্যস আর কী।
‘দাবাং ৩’ থেকে দর্শক নতুন কী পাবেন?
ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্ষেত্রে সবসময় নতুন কিছু দেখানোর একটা চেষ্টা থাকেই। এই ছবিতে ফ্ল্যাশব্যাকে বলতে পারেন আমরা গল্পের অতীতে পৌঁছে গিয়েছি। সেখানে দর্শকদের জন্য অনেক চমক রয়েছে।
ছবিতে তো চুলবুলের জীবনে অন্য একজন মহিলার উপস্থিতিকে দেখানো হয়েছে। আপনার কোনও ভয় কাজ করেনি?
ওই যে বললাম সবসময় নতুন কিছু দেখানোর চেষ্টা করতে হয়। চুলবুল কীভাবে পুলিস হল আমরা সেটাই দেখানোর চেষ্টা করছি। ওর অতীত জীবনে সেই মেয়েটি রয়েছে। এখানে অনেকগুলো মোচড় লুকিয়ে রয়েছে। এর বেশি বলতে পারব না।
রাজ্জোর সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পান?
একদমই নয়। এখনও বিয়েই করিনি। আমার কোনও সন্তান নেই। চারিত্রিক বৈশিষ্টের ক্ষেত্রে আমি ওর মতোই দাবাং স্বভাবের, মুখ খুলতে ভয় পাই না।
প্রভু দেবার সঙ্গে আপনি আগেও কাজ করেছেন। কেমন অভিজ্ঞতা?
সেই ‘রাউডি রাঠোর’-এর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ‘ওহ মাই গড’-এর ‘গো গো গোবিন্দা’ গানের সময় উনি আমাকে বলেছিলেন স্টেপ ভুল হলেও নাচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য। বলেছিলেন মুখে হাসি বজায় থাকলে দর্শক আর ভুল ধরবেন না। আসলে ওর থেকে ছোট ছোট অনেক জিনিস শিখেছি। আর প্রভু দেবার দাবাং মানে একটা আলাদা অ্যাড্রিনালিনের স্রোত।
আপনাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তো প্রায়শই ট্রোলিং হয়।
আগে হয়তো প্রতিক্রিয়া জানাতাম। এখন আর পাত্তা দিই না। কারণ আমরা কিছু বললেই তো ট্রোলারদের সাময়িক খ্যাতি।
আপনার বাবার সঙ্গে আপনাকে কবে ছবিতে দেখা যাবে?
আমিও অপেক্ষায় রয়েছি। কেউ অসাধারণ বাবা-মেয়ের গল্প লিখলেই আমরা রাজি।
রাজনীতিতে আসতে চান না?
সত্যি বলতে আমার কোনও ইচ্ছা নেই। আমার মতে, যেটা জানি না সেখানে গিয়ে কোনও লাভ নেই। অভিনয় আমার ধ্যান জ্ঞ্যান। এই নিয়েই ভালো আছি।
সলমন খানের প্রযোজনা সংস্থার জন্য আপনি কিন্তু লাকি ম্যাসকট।
আশা করছি। লাকি ম্যাসকট হতে কার না ভালো লাগে। ফ্র্যাঞ্চাইজিতে একটানা থাকলে তখন তো আরও ভালো লাগে।
প্রথম ছবিতে আপনি দেশি গার্লের অবতারে শুরু করেছিলেন। এখন কি আপনার প্রতি ইন্ডাস্ট্রির এই মনোভাবটা বদলেছে?
এখনও আমাকে দেশি গার্ল বলা হয় এবং সেইজন্য আমি গর্বিত। এই ইমেজটার জন্যই তো আজ আমি এই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। সবাই যখন পাশ্চাত্য ঘরানার ড্রেস পরছিল তখন আমি লেহেঙ্গা-চোলি ও শাড়িতে পর্দায় এসেছিলাম। পুরো বিষয়টার মধ্যে একটা নতুনত্ব ছিল। আমি এটাকে মেনে নিয়েছিলাম আর সেটাই আমাকে হিন্দি ছবির সেই তথাকথিত নায়িকার ইমেজে পরিচিতি দিয়েছিল।
এরপর তো ‘ভুজ: দ্য প্রাইড অব ইন্ডিয়া’ মুক্তি পাবে।
হ্যাঁ। শ্যুটিং চলছে। ১৯৭১ এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সত্য ঘটনা অবলম্বনে ছবিটা তৈরি হচ্ছে। আমার চরিত্রের নাম সুন্দরবেন যাঁর নেতৃত্বে মহিলারা ভুজে রানওয়ে তৈরি করেছিলেন। অসাধারণ গল্প এবং আমি এই ছবিটা নিয়ে বেশ উত্তেজিত।
ওয়েব সিরিজ সম্পর্কে আপনার ধারণা কীরকম?
আমি দেখতে পছন্দ করি। ভালো গল্প থাকলে নিজেও ওয়েব সিরিজে অভিনয় করতে পারি।
কিন্তু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ কম। সেখানে সাহসী চরিত্রের বা দৃশ্যের ক্ষেত্রে আপনার আপত্তি থাকবে?
হ্যাঁ, আমার কিছু শর্ত অবশ্যই রয়েছে। দেখুন, ইন্ডাস্ট্রিতে দশ বছরের এই যাত্রায় যে সম্মান অর্জন করেছি, সেটা একটা হঠকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে রাতারাতি নষ্ট করতে পারব না। আমি সবসময়েই বিশ্বাস করি যে একটা নির্দিষ্ট দৃশ্যের তুলনায় আমার ইন্ডাস্ট্রিকে আরও অনেককিছু দেওয়া বাকি আছে। আমি শুরুতেই পরিচালকদের আমার পছন্দ-অপছন্দ জানিয়ে দিই। না পোষালে অন্য কোনও অভিনেত্রীকে নিতে বলি। ভাগ্যক্রমে পরিচালকরা আমাকে সবসময়েই সম্মান করেছেন এবং আমার শর্তগুলোকে মেনে নিয়েছেন।