বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
একটা সময় জনতা এক্সপ্রেস আর কাঞ্চন মল্লিক ছিল প্রায় সমার্থক। সেটাই ছিল আপনার প্রথম সঞ্চালনা। আজ ‘অদল বদল’ করতে এসে কতটা নস্ট্যালজিক লাগছে?
হ্যাঁ, ঠিকই ‘জনতা এক্সপ্রেস’ আর কাঞ্চন মল্লিক সমার্থক। জনতাই আমাকে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে নিয়ে গিয়েছেন। না হলে কিছুই হতো না। আবার সেই প্ল্যাটফর্মে নেমেছি। এবার হয়তো সময়, মানুষ, যন্ত্রপাতি, শোয়ের ফরম্যাট সবই বদলেছে, কিন্তু মনটা একই রয়েছে। সেই দিনগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আর আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে আনন্দ পাই।
তাহলে কি অদল বদলে জনতা এক্সপ্রেসকেই দর্শক ফিরে দেখবে?
না, এটা ঠিক ‘জনতা এক্সপ্রেস’ নয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ হচ্ছে। তবে রাস্তায় খেলা নয়। আমি মানুষের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছি। এখানে পুরস্কার শুধু দিচ্ছি না, নিচ্ছিও। মানে প্রতিযোগীরা পুরোন জিনিসের বদলে নতুন জিনিসের জন্য বাজি ধরবেন। আমার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলে তবেই নতুন জিনিস মিলবে। আর ভুল উত্তর হলে প্রতিযোগীর পুরোন জিনিসটাও আমি নিয়ে নেব। এটাই শোয়ের চমক। ফরম্যাটটা নতুন বলতে পারেন।
শোয়ে আপনাকে কতটা নতুন ভাবে পাওয়া যাবে?
শোটা রিয়েল টাইমে শ্যুট হচ্ছে, ফলে আমাকে নতুন ভাবেই দর্শক পাবেন। আগে থেকে বলে কয়ে হচ্ছে না।
জনতা এক্সপ্রেস, কমন রুম, লাফটার চ্যালেঞ্জ-তারপর অনেকটা সময় পার হয়ে গেল। আবার ছোটপর্দায় কাজ করতে-কেন?
ছোটপর্দায় সঞ্চালনার কাজ আমি মাঝেমধ্যেই করি। তবে অদল বদলে দর্শক আমাকে যেভাবে দেখবেন সেটা অনেকদিন পর। আমি তো টেলিভিশনে মেগা সিরিয়ালই করতাম। কিন্তু একটা সময় ক্লান্তি এল। একঘেয়ে জিনিস আর ভাল লাগছিল না। ছবিতে আমি চরিত্রের শেষ দেখতে পাই। কিন্তু মেগার তো আদি অন্ত থাকে না। অতটা পরিশ্রমও করতে পারছিলাম না। তাই আর সিরিয়ালে অভিনয় করি না।
এখন যদি আবার ছোটপর্দায় ভালো কাজের প্রস্তাব পান করবেন?
ভেবে দেখব।
‘ধারাস্নান’ ‘রাজকাহিনি’, ‘মহালয়া’, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ পরপর বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করলেন। কখনও মনে হয় না আপনাকে নিয়েও ছবির কাহিনী নির্মাণ হতে পারে?
হচ্ছে না কেন সেটা পরিচালক বা প্রযোজকরা ভাল বলতে পারবেন। তবে আমরা এমন রাঁধুনি যে সব রান্নাই রাঁধতে পারি। দায়িত্ব দিক রেঁধে দেখিয়ে দেব।
নতুন কী কী কাজ চলছে?
জিতের সঙ্গে ‘প্যান্থার’ শেষ করলাম। পরমব্রতর ‘বনি’, টেনিদা শেষ। অঞ্জন দত্তর ছবির কাজ শুরু হবে।
কোথাও কি মনে হয় অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক এখনও আন্ডাররেটেড?
এসব ভেবে ডিপ্রেসড হতে চাই না। সবসময় ব্রিসবেনের পিচ পাব না। হারদরাবাদের পিচেও খেলতে হবে। তাই যখন খেলব মন দিয়েই খেলব।
‘অদল বদল’ এর টাইটেল ট্র্যাক আপনার গাওয়া। কীভাবে সম্ভব হল?
হ্যাঁ, এই কাজটা আমি করে ফেলেছি। আমার তিন প্রজন্ম কেউ হারমোনিয়ামে হাত দেয়নি। আমারও বাড়িতে গান গাওয়া বারণ। কারণ আমার গান শুনে অনেক বান্ধবী চলে গিয়েছে। চ্যানেল একপ্রকার জোর করেই দিব্যেন্দুর কম্পোজিশনে টাইটেল ট্র্যাকটা গাইয়ে নিয়েছে।
শোয়ে খেলার বাইরে অন্য কোনও বিষয়ে কথা হচ্ছে?
হ্যাঁ। ভাবের অদল বদল হচ্ছে। নিউক্লিয়ার পরিবারের আরও নিউক্লিয়ার হয়ে যাওয়া,কর্মরত বাবা মায়ের সন্তানদের একা বেড়ে ওঠা, মোবাইলের যুগে পাশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগহীনতা-এইসবই উঠে আসবে শোয়ে।
রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এই মুহুর্তে টলিউড দ্বিধাবিভক্ত। কী মনে হয়-এতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে?
আমার মনে হয় শিল্পীর কোনও দল হয় না। একজন অভিনেতার সব মানুষেরই হওয়া উচিত।
আপনার অনেক সতীর্থই বলিউডে কাজ করছেন। আপনি করে করবেন?
আমি এখানেই ঠিক আছি। ওদের আমাকে দরকার পড়লে ডাকবে, তখন যাব। তাছাড়া যে ভাষায় খুব বেশি সাবলীল নই সেখানে কাজ করাটা বেশ চাপের।
নাটকের কাজ কী চলছে?
‘মীরজাফর’ করছি। পাইকপাড়া ইন্দ্ররঙ্গর জন্য ‘একদিন আলাদিন’ পরিচালনা করলাম। অনেকগুলো শো হয়েছে। চেতনার ‘মাগন রাজার পালা’ করছি। থিয়েটারটা নিয়মিত চলছেই।
এতো কাজ। পরিবারকে সময় দেন কখন?
এইটা একটা অন্যায় করছি। ছেলে বড় হচ্ছে-ওকে কম সময় দিচ্ছি। তাও আমি মেগা করিনা,ছেলের মা মেগা করে। আমার একটা ছবি শেষ হয়ে আর একটা ছবি শুরু হতে যে সময়টা পাই সেটাই ছেলেকে,পরিবারকে দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে আমি সত্যি পরিবার খুব মিস করি।
মানসী নাথ
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়