যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
জগন্নাথের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিত্রী। বয়সে যুবতী। ধর্মদাসের পুত্র কেষ্ট বকলমে জগন্নাথের ব্যবসা সামলায়। সাবিত্রীর দেখাশোনার দায়িত্বও ব্যবসার মতো নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে কেষ্ট। সাবিত্রীর সঙ্গে নানা স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে একদিন বাদাখালির ডন কেষ্ট কীভাবে তলিয়ে যেতে থাকে সেটাই কলকাতার নাটকওয়ালার নিবেদন ‘অতলান্ত’। লিও তলস্তয়ের ‘পাওয়ার অব ডার্কনেস’-এর উপর ভিত্তি করে অনিন্দিতা সেনগুপ্ত ভট্টাচার্যের এই নাটক অনুবাদ ও নির্দেশনা করেছেন শ্যামলকুমার চক্রবর্তী।
এই নাটকে গুরু থেকে শিষ্যের এক পরম্পরা দেখানো হয়েছে। কেষ্ট চরিত্রে সপ্তর্ষি ভৌমিক শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নাটকের মূল সুর ধরে রেখেছেন। মহড়ার কঠিন পরিশ্রম তাঁর অভিনয়ের মধ্যে ফুটে ওঠে। যোগ্য সঙ্গত করেছেন সাবিত্রীর চরিত্রে লাবণ্য সরকার। গ্রামের মানুষের চালচলন থেকে ভাষা— সবেতেই কুশীলবদের পেশাদারিত্ব লক্ষ করা যায়। কেষ্টর মা সরলার ভূমিকায় দেবযানী চক্রবর্তী যথাযথ এবং বাবা বুদ্ধিজীবী ধর্মদাস সাঁতরা (বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়) নিজের ব্যক্তিত্বকে দারুণ ভাবে প্রকাশ করেছেন। জগন্নাথের বড় মেয়ে আহ্লাদীর চরিত্রে আম্রপালি মিত্র নিজের দক্ষতাকে প্রকাশ করেছেন। জগন্নাথ (জীবেশ ভট্টাচার্য) নাটকে অল্প সময়ের জন্য থাকলেও তাঁর অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কেটে যায়।
নৌকা, জাল, তেলের ব্যারেল প্রভৃতি ব্যবহার করে পার্থ মজুমদার মঞ্চকে নাটকের উপযোগী করে তুলেছেন। আলোয় বাদল দাস ও আবহে দিশারী চক্রবর্তী যোগ্য সঙ্গত করেছেন। অর্থ, অহংকারের বশে যাঁরা অবচেতনে কু-কাজ করেন, তাঁদের দিনের শেষে অনুশোচনা হবেই। সেই অনুশোচনার যন্ত্রণায় আত্মদংশন হওয়াই স্বাভাবিক। তখন মুক্তি চাইবে মন। এই নাটক সেই মুক্তির কথাই বলে।