মুনমুন মুখোপাধ্যায়ের সৃষ্টিশীল ভাবনায় সৃষ্টিনগর-এর তৃতীয় বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘এ বসন্ত প্রেমের, এ বসন্ত প্রতিবাদের’ হয়ে গেল শিশির মঞ্চে। ‘অন্তর মম বিকশিত কর’ আবৃত্তি দিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের। মেদিনীপুর শাখার নিবেদন ‘শুধু মুখে নয় বুকে বাংলা’ সমবেত আবৃত্তি বেশ ভালো লাগে। পরবর্তী শ্রুতিনাটক সুকুমার রায়ের ‘হিংসুটে’ ছয়জন ছাত্রীর আন্তরিক নিবেদনে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। দক্ষিণ কলকাতা শাখার নিবেদনে ছিল ‘অন্তরে থাক রবির আলো’— সত্যিই আলোর বার্তা এনে দিল। কবিগুরুর ভাবনায় ‘রাজপুত্তুর’ ছিল একটি মানবিক নিবেদন। নয়জন ছাত্রীর নিবেদিত শ্রুতিনাটক ‘আশ্রয়’ সকলকে মোহিত করে রাখে। পনেরো জন খুদে সদস্য নিবেদিত রবীন্দ্র-নজরুল কবিতার সংকলনে ‘পেতাম যদি ইচ্ছেডানা’ সকলকে বিস্ময়াবিষ্ট করে। দ্বিশতবর্ষে বিদ্যাসাগর শ্রদ্ধাঞ্জলি ‘মেয়েদের বর্ণপরিচয়’ অ থেকে চন্দ্রবিন্দু ছন্দে ছন্দে বলার পরিকল্পনায় নতুনত্ব ছিল। শ্রুতিনাটক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ‘ভাড়াটে চাই’ দশজন ছাত্রীর বলার গুণে প্রাণ পায়। অন্তিম নিবেদন ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনাবলির উল্লেখ সহ কাজি নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্য, শঙ্খ ঘোষের লেখাতে সমৃদ্ধ নিবেদন মনকে ভাবায়।
সম্মাননা জানানো হয় সঞ্চালক বিপ্লব চক্রবর্তী ও ঋতুরাজ প্রামাণিক এবং আবহশিল্পীদ্বয় প্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় ও সুমন্ত মণ্ডলকে। শেষে মুনমুন মুখোপাধ্যায়ের কবিতা পাঠে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ভালোবাসি’ একরাশ ভালোবাসার বার্তা বয়ে আনে।
— সুদেব চট্টোপাধ্যায়