কসবা সুরঞ্জনী সংস্থার প্রযোজনায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ‘মায়ার খেলা’ সম্প্রতি মঞ্চস্থ হল মধুসুদন মঞ্চে। অমর, প্রমদা আর শান্তার প্রেমের কাহিনি নিয়ে রচিত এই নৃত্যনাট্য। প্রেম একটি মায়া, মোহের খেলা। যা তিনটি চরিত্রকে বিভ্রান্ত করে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (ইষ্ট)-এর ৭৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে সম্প্রতি এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টার হলে। তাদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন ভাষাভাষী শিল্পীদের সঙ্গীত নৃত্য ও অঙ্কন প্রদর্শনীতে সাজানো ছিল।
‘মায়াপরী’ এক কল্পলোকের গল্প। নাটকের শুরুতে রোবোটিক পাঁচজন মানুষকে মঞ্চে দেখা যায়। এই পাঁচজন আদপে পাঁচটি ধাতব পুতুল। যারা ভিন্ন পাঁচটি পেশার পেশাদার। শিক্ষক, সৈনিক, চিকিৎসক, ব্যবসাদারের সঙ্গে রয়েছে বিবাহিত এক পুরুষ।
পুরুষোত্তম রামচন্দ্রের শ্রীচরণে মাথা নত করেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু কোনও মানুষের পদবী যদি রাম হয়? তিনি তখন জাতের বিচারে পিছনের সারির মানুষ। একবিংশ শতাব্দীতেও এক নারীকে জাত, ধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের সামাজিক অস্তিত্বের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে।
বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র সম্প্রতি কাসা ব্রডওয়েতে এক বিশেষ সঙ্গীত সন্ধ্যা নিবেদন করেন। ওই সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডেনমার্কের কিছু বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী।
রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল ‘কাহনকথা’ আয়োজিত বসন্ত উৎসব ‘হৃদ কাহন’। হৃদ কাহনের মূল ভাবনা ছিল সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারার সঙ্গে কবিতা, আবৃত্তি ও শ্রুতি অভিনয়ের মেলবন্ধন।
চার্লস ডারউইন যাকে ‘যোগ্যতমের উদবর্তন’ বলতেন, দৈনন্দিন জীবনচর্যায় তাকেই ‘টিকে থাকা’ বলা হয়। যোগ্যতম ছাড়া বাকিদেরও টিকে থাকতে হয়। অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষার জালবন্দি অতীত, পলায়নমুখী বর্তমান এবং সমাধান প্রত্যাশী ভবিষ্যৎ, সকলেই টিকে থাকে।
শান্তিনিকেতন ও ব্রাহ্ম সমাজের গণ্ডির বাইরে রবীন্দ্রসঙ্গীত সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় শুভ গুহ ঠাকুরতা ১৯৪৮ সালে দক্ষিণ কলকাতায় তৈরি করেন ‘দক্ষিণী’ নামক প্রতিষ্ঠানটি। শুধুমাত্র গান শেখানোর জন্য নয় রবীন্দ্রনাথের ভাবধারা, মনন ও শুদ্ধ রবীন্দ্রগান পরিবেশনার শিক্ষা দেশে বিদেশে পৌঁছে দিতেই সৃষ্টি করেন এই প্রতিষ্ঠান।
এক নপুংসক, এক রমণী ও এক বাঘিনী— তিন স্তন্যপায়ী প্রাণীর বেদনাক্লিষ্ট যাপনের আখ্যান নিয়ে তৈরি ‘স্তন্যপায়ী’ নাটকটি। বিনোদ ঘোষালের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত এই নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন রাকেশ ঘোষ।
বর্তমান সময়ের একজন প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পী আরফিন রানা। সঙ্গীতচর্চা করেছেন ছোট থেকেই। এখন গান তাঁর পেশা। ২০১২ সালে জি বাংলার ‘সা রে গা মা পা’তে অংশগ্রহণ করেন তিনি। তারপর একাধিক প্লেব্যাক করেছেন শিল্পী।
শাস্ত্রীয় নৃত্যের মাধ্যমে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচার এবং সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি গিরিশ মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘ভাবতরঙ্গ ৩ শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব’। ‘পুনশ্চ নৃত্যকলা কেন্দ্র’র আয়োজনে এই শাস্ত্রীয় নৃত্যানুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল ইনফোসিস ফাউন্ডেশন (বেঙ্গালুরু), ভারতীয় বিদ্যাভবন (কলকাতা)।
বিশ্বকবিতা দিবসে উপলক্ষ্যে সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারের শিবানন্দ হলে ব্রততী পরম্পরা একটি কবিতাসন্ধ্যার আয়োজন করেছিল। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘পোয়েট্রি বিয়ন্ড বর্ডারস’।
‘নাট্যিক কোলকাতা’ নাট্যগোষ্ঠী সম্প্রতি এক মনোজ্ঞ সান্ধ্যানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সাম্প্রতিক সময়ের কথা মাথায় রেখে আয়োজিত হয় সেমিনার ও একটি নাটক। বর্তমান সময়ে নতুন প্রজন্মের কাছে সুস্থ নাট্যচর্চার জন্য কী কী পরিকাঠামো প্রয়োজন— এই বিষয়কে কেন্দ্র করে আলোচনা হয় সেমিনারে।
‘নাদ’। এমন এক অভিনব শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর যেখানে শ্রোতারা বিরল যুগলবন্দির সুর-তাল-ছন্দে নিজেদের ভরিয়ে তুলতে পারেন। জি ডি বিড়লা সভাঘরে সদ্য সমাপ্ত তিনদিনব্যাপী ‘নাদ’ উৎসবে অন্যান্য বছরের মতো এবছরও শ্রোতারা একই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন।
কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শিল্পীর কল্পলোকে বিরাজ করে নানা বিষয়। কখনও শিল্পী তার রূপ দিতে ব্যবহার করেন রং তুলি, কখনও বা সঙ্গীত আবার কখনও সেই মাধ্যম হয়ে ওঠে নৃত্য। মূল ও যন্ত্রাংশের বিভিন্ন সৃজনশীল সুরের আবহে ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশৈলীর সঙ্গে আধুনিক ও বিদেশি নৃত্যশৈলীর মিশ্রণে এক নতুন সৃজনশীল নৃত্যধারার সৃষ্টি করেছিলেন বিশ্ববরেণ্য নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্কর। যার জনপ্রিয়তা দেশের মাটি ছাড়িয়ে সমাদৃত হয়েছে বিদেশের দরবারেও। সেই নৃত্যধারাকে আজও স্বমহিমায় অক্ষুণ্ণ রেখেছেন তার সুযোগ্যা কন্যা মমতাশঙ্কর। অতি সম্প্রতি মমতাশঙ্করের স্বপ্নের নৃত্যসংস্থা উদয়ন কলাকেন্দ্রের দু’দিন ব্যাপী ৩৩তম বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘প্রয়াস ২০২০’ অনুষ্ঠিত হল সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ‘সূর্য প্রণাম’ দিয়ে। উদয়ন কলাকেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীদের পরিশীলিত নিবেদন অনুষ্ঠানের প্রারম্ভেই দর্শকদের আকর্ষিত করে। যন্ত্রাংশসৃষ্ট অসাধারণ ও অনন্য সুরের সঙ্গে ‘ওশান’ নৃত্য নিবেদনটি দর্শকদের ঋদ্ধ করে। মহাসমুদ্রের তরঙ্গ ও মাঝে মাঝে সামুদ্রিক ঝোড়ো হাওয়ায় তরঙ্গের পারস্পরিক খেলা নিয়ে ছিল এই নিবেদন। অপর একটি উল্লখযোগ্য নিবেদন ছিল ‘সোনা ইন্ধনী রূপা’। ‘গরবা’ নৃত্যশৈলীর সুনিপুণ উপস্থাপনা ছিল এই নিবেদনটির মূল আকর্ষণ। ধ্রুপদী নৈত্যশৈলীতে স্থান পায় ট্রাডিশন্যাল কত্থক ও মণিপুরী নৃত্য। ‘কথাকলি’ নৃত্য নিবেদনটির মাধ্যমে মার্গ নৃত্য ও কথাকলির বেসিক স্টাইলকে উদয়শঙ্করের নৃত্যশৈলীতে এই অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়। যেই স্টাইলটা আমরা ‘কল্পনা’তে দেখতে পেয়েছিলাম। আনন্দশঙ্করের মিউজিক কম্পোজিশনের উপর ‘সেলিব্রেশন’ নিবেদনটিও দর্শকদের নজর কাড়ে। সর্বশেষ নিবেদনে ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত নৃত্যনাট্য কালমৃগয়া। ঋষি কুমারের ভূমিকায় সূচনা বসু আর লীনার ভূমিকায় ছিলেন আয়ুষী ভট্টাচার্য। নিবেদনটি ছিল প্রশংসনীয়। নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন মমতাশঙ্কর। সঙ্গীত পরিকল্পনায় ছিলেন শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানটিকে সুন্দর কথনে গাঁথেন সংস্থার কর্ণধার চন্দ্রোদয় ঘোষ।
— দেবলীনা সমাজপতি ছবি: পরিচয় চক্রবর্তী
