যাঁর কর্ম কীর্তিতে পরিণত হয়, মানুষ চিরকাল তাঁকেই মনে রাখে। ১৯৫৮ সালে সলিল চৌধুরী, সত্যজিৎ রায়, রুমা গুহঠাকুরতার হাত ধরে ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারে’র জন্ম। সৃষ্টির পর বেশ কয়েক দশক কেটে গিয়েছে কিন্তু প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয়তায় এখনও ভাটা পড়েনি। রুমা গুহঠাকুরতা এমনই এক নাম। পণ্ডিত উদয়শঙ্করের কাছে নাচ শেখা, উস্তাদ আবদুল রহমান খানের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চার পাশাপাশি ‘জোয়ারভাঁটা’, ‘মশাল’, ‘গঙ্গা’, ‘ক্ষণিকের অতিথি’, ‘নির্জন সৈকতে’, ‘পলাতক’,‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ প্রভৃতি বহু ছায়াছবিতে তাঁর সাবলীল অভিনয়। এমন এক গুণী ব্যক্তিত্বকে অগণিত মানুষের মনের মণিকোঠায় চিরকাল ধরে রাখতে ‘অমিতকুমার ফ্যান ক্লাব’ ও পরিবারের পক্ষ থেকে শিল্পীর ৮৫তম জন্মদিনে এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছিল উত্তম মঞ্চে। অনুষ্ঠানের নাম ‘তোমার আমার ঠিকানা’। উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, দেবশ্রী রায়, কল্যাণ সেন বরাট সহ বিশিষ্টরা। রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘নমি নমি চরণে’ দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু। কণ্ঠে ছিলেন শ্রমনা চক্রবর্তী এবং নৃত্য পরিবেশনায় ছিলেন পলি গুহ। ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের নিবেদনে ছিল ‘ভারতবর্ষ’, ‘তু জিন্দা’, ‘মম চিত্তে’, ‘বিস্তীর্ণ দুপারে’ গানগুলি। প্রশংসনীয় নিবেদন। কল্যাণ সেন বরাটের পরিচালনায় ক্যালকাটা কয়্যারের নিবেদনে ছিল স্বদেশী ফিউশন ও ‘ধিতাং ধিতাং’ গানটি। এছাড়া শ্রমনা ও সৈকত মিত্রের দ্বৈত কণ্ঠে ‘এই তো হেথায়’, অভিরূপ গুহঠাকুরতার কণ্ঠে ‘সুখের মাঝে’, শ্রীকান্ত আচার্যের কণ্ঠে ‘একখানা মেঘ’, মনোময়ের কণ্ঠে ‘যখন ভাঙল’ গানগুলিও শ্রোতাদের বেশ ভালো লাগে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, সৈকত মিত্র, দেবশ্রী রায় সহ অন্যান্যরা তাদের স্মৃতি থেকে রুমা গুহঠাকুরতার সঙ্গে কাটানো নানা টুকরো টুকরো মুহূর্ত ও অভিজ্ঞতা শ্রোতাদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। সৌমিত্র বলেন, ‘রুমা ও ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারকে মনে রাখাটাই আমাদের অগ্রগতির পথে একটা বড় পদক্ষেপ।’

—দেবলীনা সমাজপতি   

ছবি: ভাস্কর মুখোপাধ্যায়