পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ফেলে আসা কৈশোরের ইস্কুল বেলায় ফিরে যেতে বোধহয় প্রত্যেকেই ভালোবাসেন। স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে খুনসুটি, খেলা, আড্ডা, অভিমান-এসবই জীবনের পরম পাওয়া। জীবনে চলার পথে এই স্মৃতিগুলো সবসময়ই বাড়তি রসদের কাজ করে। সেই রসদটুকু আরও বেশি করে ধরে রাখার জন্যই নিউ আলিপুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রাক্তনীরা ২০০৮ সালে তৈরি করেন নিউ আলিপুর মাল্টিপারপাস স্কুল অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশন (নামসা)। সদ্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংস্থার সদস্যরা তাদের বার্ষিক পুনর্মিলন উৎসব পালন করল।
সারাদিন নানা কর্মসূচির পাশাপাশি পুরনো সহপাঠীদের সঙ্গে দেদার আড্ডা, খেলাধুলো, হরেক মজা, ভূরিভোজ—সবটা মিলিয়ে ছিল উৎসবের প্রেক্ষাপট। সকালে পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। আর দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যায় তার সমাপ্তি ঘটে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন সেই এগারোজন প্রাক্তনী যাঁরা পঞ্চাশ বছর আগে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা শেষ করেছেন। তাঁদের সম্মাননা প্রদান করল সংস্থা। এ ছাড়া স্কুলের বর্তমান ১১জন কৃতী পড়ুয়াকে বিভিন্ন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চেও নামসার সদস্যরা নিজেদের উজ্জ্বল উপস্থিতি ধরে রাখেন। সৌমিত্র মুখোপাধ্যায়, শুভাশিস দে’র যন্ত্রসঙ্গীত, অরুণাভ রায়চৌধুরী, সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়, তিলক গুপ্ত, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় সহ সংস্থার একাধিক সদস্য ও তাঁদের পরিজনরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সমগ্ৰ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আর জে রয় ও রঞ্জন সরকার। বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক নীলাঞ্জন মজুমদার, নামসার সভাপতি দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, সম্পাদক সুবীর রায় সহ সংস্থার প্রায় সকল সদস্যর সক্রিয় অংশগ্রহণ ফেলে আসা স্কুলের স্মৃতি ভাণ্ডারকে আরও একবার উজ্জ্বল করে রাখল।
সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের দয়ানন্দ হলে অনুষ্ঠিত হল ইন্দো–আমেরিকা কালচারাল মিট। আয়োজনে সিয়াটেল রাগা ইনস্টিটিউট। আমেরিকা নিবাসী পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ও পণ্ডিত সুগত নাগের শিষ্য সরোদ শিল্পী ব্র্যান্ডেন ম্যাকিনটস তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সঙ্গীত পর্বের সূচনা হয় ইন্দ্রাণী চৌধুরীর খেয়াল গানের মাধ্যমে। শোনালেন শুদ্ধ কল্যাণ রাগে বিলম্বিত ঝাঁপতাল। তারপর দ্রুত তিনতালে খেয়ালে মুগ্ধ করেন। শিল্পীর সঙ্গে তবলায় ছিলেন রাধারমণ নাথ। পরের অনুষ্ঠানে সরোদ, গিটার, বেহালা এবং পিয়ানোতে রাগ মালা পরিবেশিত হয়। বিভিন্ন রাগের কোলাজে কখনও একক কখনও সমবেত মূর্ছনায় নজর কাড়লেন ব্র্যান্ডেন ম্যাকিনটসের প্রবাসী ছাত্ররা। বিলম্বিত, মধ্যলয় ও দ্রুতলয়ে সবেতেই তাদের সাবলীল গতি মুগ্ধ করে। সঙ্গে দেবাশিস চৌধুরী ও সহ-শিল্পীদের তবলা সঙ্গত বাজনাকে করেছে আরও সুরময়। অনুষ্ঠানের শেষ আকর্ষণ ছিল ব্র্যান্ডেন ম্যাকিনটসের সরোদ ও সুবীর রায়ের বাঁশির যুগলবন্দি। সুরময় উপস্থাপনা। সঙ্গে কুন্তল রায়ের তবলাও যথাযথ।
—নিজস্ব প্রতিনিধি
সাঙ্গীতিক প্রয়াস
সম্প্রতি যাদবপুরের ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়ামে ‘অন্বেষণ’ সংস্থার উদ্যোগে একটি ভিন্ন আঙ্গিকের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সন্ধ্যার সাক্ষী হয়ে রইল সঙ্গীত রসিকজন। তিনটি পর্বে বিন্যস্ত এই সান্ধ্য আসরে কিশোর শিল্পী শুভ্রনীল সরকারের ‘হারমোনিকা’ বাদন শাস্ত্রীয় বাদ্যযন্ত্র রূপে সম্ভবত প্রথমবার মঞ্চে পরিবেশিত হল। ইমন রাগে আলাপ, জোড়, ঝালার পর শিল্পী প্রথমে মধ্যলয় ও পরে একতাল এবং তিনতালে দুটি দ্রুত গৎ বাজিয়ে শোনান। শেষে বহুশ্রুত ‘পায়োজি ম্যায়নে রাম রতন ধন পায়ো’ ভজনটি বাজিয়ে শোনান। তবলায় কিংশুক মুখোপাধ্যায়ের সাহচর্য ও সঙ্গত বিশেষভাবে উল্লেখ্য। যাঁর মাধ্যমে শুভ্রনীলের সফল মঞ্চাভিষেক ঘটে এদিন। ‘উড়োতার’ গোষ্ঠী দ্বিতীয় নিবেদনে ‘আমাদের পাগলা দাশু’ নামে একটি নাটক উপস্থাপন করেন। তৃতীয় তথা শেষ পর্বে সন্ময় গুহ সরোদে মারুবেহাগ রাগে চার তাল কি সাওয়ারিতে গৎ বাজিয়ে শোনান। পিলু রাগে দাদরা ও তিনতাল দ্রুত গতের মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠান শেষ করেন। ইন্দ্রনীল মল্লিকের তবলা সঙ্গত যথারীতি মনে রাখার মতো।
সাহিত্য ও বিজ্ঞান চর্চা
আত্মবিকাশ সাহিত্য পত্রিকার নতুন সংখ্যার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হল লেকটাউনের গান্ধী সেবা সংঘের মাণিক্য মঞ্চে। সংখ্যার বিষয়, ‘বিজ্ঞান চেতনা ও ক্রোড়পত্র ইন্দুভূষণ চট্টোপাধ্যায়।’ স্বাগত ভাষণ দেন পত্রিকার সম্পাদক শিবেন্দুশেখর চক্রবর্তী এবং উপদেষ্টা হিরণ্ময় সাহা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত সৌরবিজ্ঞানী শান্তিপদ গণচৌধুরি, নব্যেন্দু শেখর চট্টোপাধ্যায়, অপরাজিতা বসু, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও ইস্ট ইন্ডিয়া ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রাক্তন উপদেষ্টা অম্বিকাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
শিবেন্দুশেখর চক্রবর্তী বলেন, ‘সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি বিজ্ঞানচর্চাও যাতে সমান গুরুত্ব পায় সেই কথা মাথায় রেখেই এই পত্রিকার পরবর্তী সংখ্যার বিষয়টিতে বিজ্ঞান রাখা হয়েছে।’ তবে, শুধু বিজ্ঞানে উন্নত হলেই হবে না, সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ববোধের মানসিকতাও গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন অপরাজিতা বসু। আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা সমাজকে ক্ষয়িষ্ণু করে দেয় বলেও সাবধানবাণী দেন তিনি। গান ও আবৃত্তিপাঠের মধ্যে দিয়ে এই সুন্দর অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।