সম্প্রতি জি ডি বিড়লা সভাঘরে অনুষ্ঠিত হল আই টি সি সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমি আয়োজিত ‘মল্লার উৎসব’। দুদিন ব্যাপি এই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সন্ধ্যার প্রথম দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয় অ্যাকাডেমির স্কলার মেহের পারলিকারের কণ্ঠসঙ্গীতের মাধ্যমে। শিল্পী মীরাবাঈ মল্লার রাগে বিলম্বিত একতাল ও দ্রুত তিনতাল পরিবেশন করেন। দরবারির সঙ্গে মিয়া কি মল্লার এবং রামদাসী মল্লারের সংমিশ্রনে তৈরি এই আপাতকঠিন রাগটি শিল্পী তাঁর সাধ্যমত চেষ্টায় রূপদান করেন। তবলায় ইন্দ্রনীল ভাদুড়ী ও হারমোনিয়ামে গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গত যথাযত। নবীন সেতারবাদক অয়ন সেনগুপ্ত চয়ন করেন রাগ গৌড়মল্লার। আলাপের পর শিল্পী মধ্যলয় এবং দ্রুত তিনতালে দুটি গৎ বাজিয়ে শোনান। তবলা সঙ্গতে অশোক মুখোপাধ্যায় অনবদ্য। এদিনের অনুষ্ঠানের শেষ শিল্পী ছিলেন জয়পুর অত্রয়োলি ঘরানার বিশিষ্ট কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী ওঙ্কার দাদারকর। প্রথমে সুরদাসী মল্লার রাগে শিল্পী তিনতালে তিনটি (বিলম্বিত,মধ্যলয় ও দ্রুতলয়ে) বন্দিশ পরিবেশন করে শ্রোতাদের মাতিয়ে দেন। উপরি পাওনা হিসেবে দক্ষিণ ভারতীয় রাগ অমৃতবর্ষিণী উত্তরভারতীয় আঙ্গিকে শিল্পী উপস্থাপন করেন। বিলম্বিত রূপক ও দ্রুত একতালের বন্দিশ দুটি চমৎকার। তবলায় বিভাস সাংঘাই এবং সারেঙ্গিতে সারওয়ার হোসেনের সঙ্গত বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
দ্বিতীয়দিনের অনুষ্ঠানের শুরু হয় অ্যাকাডেমির আর এক স্কলার সোহিনী কোলের কণ্ঠসঙ্গীতে রাগ রামদাসী মল্লার দিয়ে। শিল্পীর কণ্ঠ সুরেলা ও বলিষ্ঠ। খাম্বাজ রাগাশ্রিত একটি দাদরা গেয়ে শিল্পী তাঁর অনুষ্ঠান শেষ করেন। তবলায় ইন্দ্রনীল ভাদুড়ী এবং হারমোনিয়ামে রূপশ্রী ভট্টাচার্য যোগ্য সহায়তা করেন। সম্মেলনের শেষ শিল্পীদ্বয় রমাকান্ত গুণ্ডেচা ও উমাকান্ত গুণ্ডেচা ধ্রুপদ পরিবেশন করেন। এদিন এই ভ্রাতৃদ্বয়ের নির্বাচিত প্রথম রাগ ছিল জয়ন্ত মল্লার। ভাবগম্ভীর আলাপ, জোড়ের পর চৌতালে একটি বন্দিশ পরিবেশন করেন। দ্বিতীয় ও শেষ নিবেদন ছিল রাগ মেঘ। অখিলেশ গুণ্ডেচার পাখোয়াজ সঙ্গত মনে রেশ রেখে যায়।
অমিত চক্রবর্তী
ছবি : প্রতিবেদক