ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
আগরতলায় জন্ম। সেখান থেকে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে কীভাবে পৌঁছলেন?
আমার জন্ম আগরতলার রাধানগরে। বাড়িতে প্রথম থেকেই শিল্প-সংস্কৃতির পরিবেশ ছিল। আমার চারপাশ বিশেষ করে ত্রিপুরার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যময় জীবনধারা, সংস্কৃতি— সব মিলিয়েই সৃজনশীলতার একটা আগ্রহ তৈরি হয়। ছোটবেলা থেকে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন সহ অন্যান্যদের সিনেমা দেখতাম। একটা সময় মনে হল সিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করব। তারপরই এসআরএফটিআইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। প্রথম চেষ্টাতেই সুযোগ পেয়েছিলাম।
‘লাপাতা লেডিজ’-এর গল্প লেখার নেপথ্য ভাবনা কী ছিল?
নারী পুরুষের বৈষম্য ছোটবেলা থেকেই আমাকে ভাবাত। মনে হয়েছিল, এগুলোই তো সিনেমার গল্পের বিষয়বস্তু হতে পারে। সিনেমা অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। তাই বেশ কিছু সামাজিক সমস্যা নিয়ে লেখা শুরু করলাম। যার প্রথমটা ‘লাপাতা লেডিজ’।
গল্পটা বাছাই হল কীভাবে?
বছর পাঁচেক আগে ‘গ্লোবাল সার্চ ফর ইন্ডিয়ান স্ক্রিপ্ট রাইটার্স’ নামে একটি প্রতিযোগিতা হয়েছিল। বিচারকদের মধ্যে ছিলেন আমির খান, রাজকুমার হিরানি, জুহি চতুর্বেদি এবং অঞ্জুম রাজাবলি। দেশ-বিদেশ থেকে প্রায় চার হাজার স্ক্রিপ্ট এসেছিল। তার মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছিল আমার চিত্রনাট্য। তারপর আমির খান বাড়িতে আমন্ত্রণ জানালেন। সেখানে কিরণ ও আমির দু’জনেই গল্প শুনে জানালেন, আমির প্রযোজনা করতে চান আর কিরণ করবেন পরিচালনা। আমি অবশ্য ভেবেছিলাম, আমার স্ক্রিপ্ট আমিই পরিচালনা করব। কিন্তু ওঁদের প্রস্তাব এতটাই আন্তরিক ছিল যে, রাজি হয়ে যাই।
প্রথম বড় কাজই আমির-কিরণের সঙ্গে...
ওঁরা দু’জনেই অত্যন্ত দক্ষ, নিষ্ঠাবান, সেন্সিটিভ। ঘটনাচক্রে ওঁদের সঙ্গেই আমার জার্নি শুরু হল। দারুণ অনুভূতি।
সাফল্য আসতে অনেকটা সময় লাগল নাকি?
ইনস্টিটিউট বেরিয়েই হয়তো অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু সেগুলো পছন্দের কাজ হতো না। তাই কিছুটা সময় নিলাম। প্রচুর ব্যর্থতা এবং কষ্টের পরেও পছন্দের কাজের জন্য অপেক্ষা করেছি।
সুপ্রিম কোর্টেও এই সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হয়েছিল। শুনে কেমন অনুভূতি হয়েছিল?
এমন কিছুই চেয়েছিলাম। সিনেমার বিষয়বস্তু লোকে বুঝবে, চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে এবং তার সুফল পাবে সমাজ। শুধুমাত্র সিনেমা বানানোর জন্য গল্প লিখব না। বরং এই ধরনের কিছু লিখব, যা সমাজকে ভাবাবে। এই ভাবনা থেকে কাজ শুরু।
কলকাতা কেমন লেগেছিল?
কলকাতার খাবার খুব ভালো। ডাল, ভাত, আলুভাজা— আলাদাই স্বাদ, আহা! মাঝেমাঝেই বন্ধুদের সঙ্গে চলে যেতাম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। ওখানকার দক্ষিণ ভারতীয় রেস্তরাঁগুলো খুব প্রিয় ছিল।
এই সাফল্যে বাড়িতে সবাই খুশি নিশ্চয়ই?
বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলাম খবরটা। শোনার পর মা শুধু বলেছিল, ‘খুব ভালো হয়েছে’। কিন্তু গলার স্বরে বুঝতে পেরেছিলাম ভীষণ খুশি। বাবা তিন বছর আগে মারা গিয়েছেন। আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছেন তিনিই। তাছাড়া পরিবারের সকলের প্রতিই আমি কৃতজ্ঞ। ওঁরা সারা জীবন আমার কাজ সমর্থন করেছেন। আমি বাড়ির ছোট ছেলে, ছোট হিসেবেই রয়ে গিয়েছি (হাসি)।