বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রাথমিক চার চরিত্রের চারটি আলাদা জায়গা। পরবর্তীতে এই চার ব্যক্তিত্ব একটি বিন্দুতে এসে মিলিত হয়। আদপে সবাই একা। বৈশাখীর বিশ্লেষণ ও প্রয়োগ নৈপুণ্যে নাটকটি তাই চারজন মানুষের আত্মকথন না হয়ে সার্বিক উপলব্ধির স্তরে উন্নীত হয়ে যায়। শিশির ভাদুড়িকে ঘিরে প্রভা, কঙ্কার বিরোধ। তাঁদের মানসিক টানাপোড়েনে বড়বাবুর ব্যক্তিত্ব সংঘাত। আর গল্প বলতে বসে গবেষক সুনয়নার আত্ম আবিষ্কার- ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের নাট্যরূপ টানটান।
সামগ্রিক ভাবনায় সামান্য ভারসাম্য টাল খেলেও অভিনয়ে সে খামতি পুষিয়ে দিয়েছেন বৈশাখী। সংলাপে ও শরীরী ভাষায় শিশির ভাদুড়িকে মনে হয়েছে ব্যক্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছেন। তৎকালীন গ্র্যাজুয়েট, একমাত্র অভিনেত্রী কঙ্কাবতীর কথনে সেই শানিত দাপটের অভাব, প্রভার আচরণে পরিপাট্য থাকলেও অধিকারবোধের জায়গায় অল্প হলেও নিষ্প্রভ। সুনয়নার খোলস থেকে বেরিয়ে প্রভা, কঙ্কা, শিশির সফর শেষ করে ফের একই খোলসে ফিরতে গিয়ে বাচিক অভিনয়ের বিভাজনটা কোথাও কোথাও যেন গুলিয়ে যায়।
মুশকিল হল সেই সময়ের তিনজন সেলিব্রিটির সংবেদনশীল দৈনন্দিনের দলিল পাওয়া দুষ্কর। বিষয়টি ঐতিহাসিক সত্য অথচ অনুমান নির্ভর। বৈশাখী আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন সময় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটকে যতটা সম্ভব বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে। ফলে নাটকটিকে একঘেয়ে মনে হয় না। নীল কৌশিকের মঞ্চ ভাবনা, সাধন পাড়ুইয়ের আলোক পরিকল্পনা ও দীপ্তনীলের আবহ বৈশাখীর ক্যানভাসকে রঙিন করেছে। ফলে নাটকটি শুধুমাত্র একজনের কথা না হয় অনেকের কথা হয়ে উঠেছে।