বিদ্যালাভের পক্ষে দিনটি উত্তম। ব্যবসার উন্নতি, পেশায় সুনাম। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
ছোট থেকে একটা ভালোবাসার আশ্রয়ের প্রতীক্ষায় কেটে গিয়েছে অনেকগুলি বছর। তবু ঘর বলতে কোনটা যে তার আপন, জেনে ওঠা হয়নি প্রতীক্ষার (তাসনিয়া ফারিন)। অরিত্রকে (সাহেব ভট্টাচার্য) বিয়ে করার পর ভেবেছিল, এইবার নিজের মত করে ভালবাসার ঘর বুঝি গড়ে তোলা যাবে। কিন্তু না! বিয়ের তিনমাস পর লন্ডনে গিয়ে অরিত্রর চিহ্নটুকু খুঁজে পেল না সে। তখন শুরু হল আরও এক খোঁজ আর অপেক্ষার লড়াই। অরিত্র তাকে ছেড়ে উধাও হয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ অনেকে দিলেও থেকে যায় প্রতীক্ষা। অরিত্রর থেকে উত্তর না নিয়ে ফিরতে নারাজ সে। যার নামে প্রতীক্ষা, তার অপেক্ষায় ভয় কী?
অতনু ঘোষের দশম ছবি ‘আরো এক পৃথিবী’। কিছু কিছু মানুষ বুঝি জীবনে থিতু হতে পারেন না কোনওদিন। সারাজীবন ছুটে চলা, খুঁজে চলার মধ্যেই অতিবাহিত করে ফেলেন অনেকটা সময়। পরিচালক তাঁর কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘প্রতীক্ষা’কে অনেকটা সেই আদলে গড়েছেন। এই ছবিতে পরিচালক লন্ডনের যে ছবি দর্শকের সামনে তুলে ধরেছেন, তা সচরাচর বড় পর্দায় দেখানো হয় না। এখানে এমন এক শহরের ছবি ফুটে উঠেছে যেখানে আশ্রয় খুঁজে ফেরে ভবঘুরেরা, দিনের পর দিন পরিত্যক্ত নৌকোয় ঘর বাঁধে—আবার কোনওদিন রাতের অন্ধকারে গুলি খেয়ে পড়ে থাকে ফুটপাথে। স্বপ্ন ছিল, নিজের ঘর হবে একটা। বাড়ি না, শুধু একটা ঘর—তাই হয়ে ওঠে অসাধ্য। টামসেন কোর্টনির ‘ফোর ফিট আন্ডার’ বইয়ে লেখক এমন কিছু মানুষের কথা তুলে ধরেছেন, যাঁরা লন্ডনের রাস্তায় থাকেন, মানুষের নিত্য বিরক্তির শিকার—তবু অহং ছাড়তে নারাজ। শ্রীকান্ত মুন্সির (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) ‘আই অ্যাম নট আ বেগার’-এ সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
টলিউডের ছবিতে প্রথম কাজ করলেন তাসনিয়া ফারিন। তিনি নিরাশ করেননি। দৃঢ় প্রতীক্ষার অটুট সাহসের মাঝে মানুষ যে ভেঙেও পড়ে—তা তাঁর অভিনয়ে বড় সুন্দর প্রস্ফুটিত হয়েছে। ভবঘুরে ‘শ্রীকান্ত’র চরিত্রে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় খাপ খেয়ে যান, যদিও তাঁর কিছু কিছু দৃশ্য একঘেয়ে লাগতে পারে। আয়েষা এবং অরিত্রর চরিত্রে অনিন্দিতা বসু ও সাহেব ভট্টাচার্য যথাযথ।
বরাবরই নতুন ছকে গল্প বলতে ভালবাসেন অতনু ঘোষ। এই শিকড়হীন যুগে আশ্রয় খুঁজে ফেরার তাগিদ ঠিক কতটা? সেই পৃথিবীতেই নিজের চরিত্রদের নিয়ে বিচরণ করতে চেয়েছেন তিনি।