যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
তাঁদের সঙ্গে আড্ডায় সন্দীপ রায়চৌধুরী।
ট্রেলার মুক্তির দিন থেকেই তো এই ছবি নিয়ে প্রচুর আলোচনা চলছে...
দেব: কেউ কমেডি ভালোবাসে, কেউ সিরিয়াস ছবি। কেউ বা আবার রিয়েল লাইফ ছবি ভালোবাসে। এই ছবি থেকে সকলেই কিছু না কিছু পাবে। প্রসেনজিৎ আর দেব একসঙ্গে পর্দায়। বুম্বাদার ফ্যান ফলোইং আমার প্লাসপয়েন্ট।
দুই সুপারস্টারের একসঙ্গে আসতে এত সময় লাগল কেন?
দেব: প্রসেনজিৎ-দেব একসঙ্গে, এক ছবিতে। একটা ভালো গল্পের প্রয়োজন ছিল। প্রযোজক হিসেবেও তো দু’জন সুপারস্টারের উপস্থিতি আমাকে জাস্টিফাই করতে হতো। এই ছবি আত্মহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলে। তাই এমন কাউকে চাইছিলাম, যাঁর কথা দর্শক বিশ্বাস করবেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের থেকে ভালো অপশন সত্যিই ছিল না আমার কাছে।
ট্রেলারে বিকাশ রায় ও অনুপকুমার অভিনীত রাজেন তরফদারের বিখ্যাত ছবি ‘জীবন কাহিনি’র (১৯৬৪) ক্লিপিংস। ‘কাছের মানুষ’ কি তবে রিমেক?
দেব: ছবিটা নিয়ে কাজ শুরু করার পর জীবন কাহিনির কথা জানতে পারি। অতদিন আগে এরকম একটা বিষয় নিয়ে ছবি হয়েছে দেখে ভাবলাম ট্রেলারে সেই ছবিটাকে একটা শ্রদ্ধা জানানো উচিত। দুটো ছবি দেখলেই বোঝা যাবে গল্প আলাদা।
প্রসেনজিৎ: ‘অটোগ্রাফ’ মুক্তির আগেও দর্শক ভেবেছিলেন ‘নায়ক’-এর রিমেক। রিলিজের পর ধারণাটা বদলে গিয়েছিল।
পুজোয় আপনারা একসঙ্গে চলে এলে তো উত্তর-দক্ষিণের পুজো টক্করের আমেজটাই থাকল না।
প্রসেনজিৎ: লড়াই –টড়াই পরে হবে। আগে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে হবে। সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। দর্শকদের পছন্দ অনেক বদলে গিয়েছে। তাঁদের ভালো লাগে এরকম কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
দেব: আপনাদের লেখা উচিত— বাংলা ছবির সম্মান বাঁচাতে হাত মেলাল প্রসেনজিৎ এবং দেব। দক্ষিণী ও বলিউডের ছবির গ্রাস থেকে বাংলা ছবিকে বাঁচানোটা অবিলম্বে দরকার। বাজেটে আমরা পারব না। তাই বিষয়বস্তুকেই হাতিয়ার করতে হবে।
এই ছবির বিষয়ের রেশ ধরে জানতে চাই, সাম্প্রতিক অতীতে টলিউড বেশ কয়েকজন শিল্পীর আত্মহননের সাক্ষী। আপনাদের জীবনেও নিশ্চয়ই অবসাদ এসেছে?
প্রসেনজিৎ: একটা সময় দেড় বছর বাড়ির বাইরে পা রাখিনি! হাতে কোনও কাজ ছিল না। পরপর ছবি ফ্লপ।
দেব: আমার মনের জোর অত্যন্ত বেশি। সাংসদ হওয়ার পর সবাই বলেছিল আমার কেরিয়ার শেষ! পরপর ‘যোদ্ধা’, ‘বুনোহাঁস’ ফ্লপ করল। অবসাদে ভোগা স্বাভাবিক। ওজন বেড়ে গিয়েছিল। আর আজ আমার শেষ চারটে ছবিই সিনেমা হলে একশো দিন সম্পূর্ণ করেছে।
সম্প্রতি বলিউডে ছবি বয়কটের ট্রেন্ড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
দেব: যাঁরা নিয়মিত টিকিট কেটে বাংলা ছবি দেখেন, তাহলে অবশ্যই কোনও ছবিকে বয়কট করার অধিকার আছে। অনেকে আবার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। ছবিটা কী জানলই না, বলে দিল বয়কট করুন। এটাই চিন্তার। তবে, আমি আশাবাদী। ছবি ভালো লাগলে একজন দর্শকই আরও ৫০ জনকে হলে আসার বার্তা দেবেন।
প্রসেনজিৎ: সোশ্যাল মিডিয়ার মতামতকে আমি সম্মান করি। তবে শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার কথা ভাবলে তো ছবি কেন, আপনি কোনও কাজই করতে পারবেন না। আমার শেষ ছবি ‘আয় খুকু আয়’ তো বেশ পজিটিভ রিভিউ পেলাম। কিন্তু বক্স অফিসে আশানুরূপ ব্যবসা হল কোথায়?
তাহলে প্রসেনজিৎ-দেব জুটিই বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভের ফর্মুলা?
প্রসেনজিৎ: না, তা নয়। আসলে ফর্মুলা থাকলে তো ‘শোলে’র পর ‘শান’ ছবিটা তৈরি হয় না। মিঠুনদা (চক্রবর্তী) একবার আমাকে বলেছিলেন, ফমুর্লা থাকলে তো বাড়ি বসেই বলে দেওয়া যেত কোনটা হিট আর কোনটা ফ্লপ। এত পরিশ্রমের কী দরকার? (হাসি) দেব: আমার মনে হয় দর্শক এখন এমন গল্প চাইছেন, যার সঙ্গে সহজে রিলেট করতে পারেন। তাঁদের কথা ভেবেই তো কাছের মানুষ তৈরি করলাম। পুজোর পর বোঝা যাবে তাঁদের কাছের মানুষ হয়ে উঠতে পারলাম কি না!