বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
‘লালকুঠি’ ধারাবাহিকের নামভূমিকায় অভিনয় করছেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্যুটিংয়ে যেতে তাঁর কয়েক মিনিট দেরি হয়ে গেল এই কথাগুলো বলতে গিয়ে। ‘কার মনে কী চলে, এ এক আশ্চর্য বিষয়। মনে হয় ফ্রয়েডও পুরোপুরি আবিষ্কার করতে পারেননি। সেখানে আমি কে?’ ‘সোনা রোদের গান’ ধারবাহিকে অভিনয় করছেন পায়েল দে। শট দেওয়ার মাঝে বলছিলেন, ‘শুধুই যে গ্ল্যামার জগতের লোকেরা আত্মহত্যা করছেন এমন নয়। উচ্চশিক্ষিত হয়ে চাকরি না পেয়ে, সংসারের চাপেও তো অনেকে আত্মহত্যা করেন। কিন্তু শুধু গ্ল্যামার জগতের মানুষজনকে নিয়েই বেশি কথা হয়।’
তাহলে কি গ্ল্যামার জগতের মানুষদের উপর প্রত্যাশার চাপ অনেক বেশি থাকে? রাহুল বিষয়টা অন্য আঙ্গিকে ভাবছেন। ‘ধরুন, কেউ আইটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। গত চারদিন বসের কাছে কথা শুনছে বা গত দু’বছর মাইনে বাড়েনি। এটা সেই ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ জানবে না। কিন্তু আমার ছবি হিট হল না ফ্লপ হল, সেটা সকলে জেনে যাবে। ফলে আমাদের পেশায় একটা অতিরিক্ত চাপ থাকে।’ গ্ল্যামার জগতে এই চাপটা সবসময় প্রকাশ্যে থাকে। কেউ চাইলেও তা এড়িয়ে যেতে পারেন না। এই চাপের উপর ভর দিয়েই আশপাশে গজিয়ে ওঠে অনুভূতিমালা। অর্থ-যশ-খ্যাতি-সম্পর্ক। পায়েলের যুক্তি, ‘সব কাজেরই তো চাপ থাকে। কেউ সেটা নিতে পারে, কেউ পারে না। ভেবে নেয়, এখানেই সব শেষ।’
আলোর উত্স কোথাও নেই? রাহুল-পায়েলদের মতো জনপ্রিয় অভিনেতাদের জীবনেও উথাল-পাতাল হয়েছে। সেখান থেকে আলোর সন্ধান নিজের মতো করে খুঁজে নিয়েছেন রাহুল। ‘আমার ক্ষেত্রে পড়াশোনা, লেখালেখি করাটা কাজে দিয়েছে। তাছাড়া আমার মনে হয়, প্রতিটা মানুষের একটা শিকড় থাকা দরকার। ছবি হিট হোক বা ফ্লপ, মা সেই মুখঝামটা দিয়েই খেতে দেবে। এটা খুব দরকার।’ অন্যদিকে, কেরিয়ারের ১৬ বছরের মাথায় প্রথম বড়পর্দায় সুযোগ পেয়েছিলেন পায়েল। ‘এটা তো স্ট্রাগল। মুখোশ করার পর ওয়েব সিরিজ করেছি। আমাকে এতদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। একটু সময় দিতে হয়। অপেক্ষা করতে হয়। ভেঙে পড়লে চলবে না,’ বলে শট দিতে গেলেন পায়েল। এই ভরসা, ভেঙে না পড়ার সাহস রাহুলের কথায় সেই শিকড়ই জোগাবে। নিঃসঙ্গ জীবনে যদি সেই শিকড়ই না থাকে তাহলে একটি গাছ আলোয় দাঁড়াবে কী করে!