বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কেসের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বিরক্ত ডিসিপি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়। ‘ঘরে বাইরে কী বেইজ্জত হতে হচ্ছে তা তুমি নিশ্চয়ই জানো। ...গত দু’মাস ধরে তুমি অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াচ্ছ। কাল পরশু লালবাজার অভিযান হবে। তখন কি ব্যারিকেড লাগিয়ে পাবলিককে প্যাঁদাবে? তাতে ঘুচবে তোমার অপদার্থতা?’ এতক্ষণ মাথা নিচু করে ঊর্ধ্বতন অফিসারের চোটপাট নীরবে হজম করছিলেন বিক্রম। ‘আমি বলছি কী আর দুটো দিন লাগবে...জাস্ট দুটো দিন...তার মধ্যে আমি কেসটা ঠিক সলভ করে ফেলব।’ বিক্রমের আর্জিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে ডিসিপি মনে করিয়ে দিলেন, ‘রোহিত ভার্মার কেসেও তুমি দু’দিন চেয়েছিলে। কী হয়েছিল? পারনি। আসলাম পারভেজ শেষ পর্যন্ত কেসের কিনারা করে পুলিসের মান-সম্মান বাঁচিয়েছিল। ঠিক, না ভুল?’ ‘ভুল’ ডিসিপির চোখে চোখ রেখে এসিপি বিক্রম বললেন, ‘কেসটা আমিই সলভ করেছিলাম। আপনি শেষ মুহূর্তে আমাকে সরিয়ে আসলাম পারভেজের নামটা বসিয়ে দিয়েছিলেন।’ ফেটে পড়লেন দিব্যেন্দু, ‘রাবিশ।’ রীতিমতো শাসানির সুরে বললেন, ‘রিটায়ারমেন্টের আর দু’বছর বাকি আছে। কেরিয়ারে লাল দাগ লাগিও না। মেডিকেল গ্রাউন্ড দেখিয়ে সরে দাঁড়াও।’ ‘যদি না দাঁড়াই’ পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিক্রম। ‘আপনি আমায় সাসপেন্ড করলে, আমিও আপনার চাকরি খেয়ে নেব স্যার।’ ছিটকে নিজের জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ালেন ডিসিপি, ‘হাউ ডেয়ার ইউ!’
কাট...
ছবির নাম ‘মৃত্যুর রং ধূসর’। পরিচালক বিক্রম আদিত্য অর্জুন। এটি তাঁর তৃতীয় ছবি। কাহিনি পরিচালকের নিজের। চিত্রনাট্য লিখেছেন অমল চক্রবর্তী। সেই ছবিরই শেষ পর্বের শ্যুটিং দেখতে এক ভর দুপুরে পুলিসের অন্দরমহলে পা রাখা। তবে, লালবাজারে নয়, বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিন তলায়। অভিনব লোকেশন। ‘জিতের সঙ্গে এখানেই বস ছবির শ্যুটিং করেছিলাম’, সোফায় হেলান দিয়ে বললেন টলিউডের চিরসবুজ নায়ক চিরঞ্জিত। বিক্রম সেজে এতক্ষণ ‘ডিসিপি’ জয় সেনগুপ্তর সঙ্গে টক্কর দিচ্ছিলেন তিনি। একদা অ্যাকশন হিরো ইদানীং সত্যান্বেষণেও সমান দক্ষতা দেখিয়ে চলেছেন। চিরঞ্জিত বললেন, ‘এই ছবিটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। বিক্রমের তদন্ত করার পথ ও পদ্ধতি বেশ আকর্ষণীয়। গল্প আর চিত্রনাট্য খুবই বুদ্ধিদীপ্ত। বিক্রম সৎ, দায়িত্ববান ও দুঃসাহসী। অন্যায় দেখলে কাউকে ছাড়ে না।’
রোমহর্ষক সিরিয়াল কিলিং, খুনের উদ্দেশ্য আর কিনারা নিয়ে পুলিস-প্রশাসনের টানাপোড়েন, সব কিছুর মিশেলে একটি টানটান সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। ‘দীপকদাকে (চিরঞ্জিত) ভেবেই চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে। উনি রাজি না হলে ছবিটা করতামই না,’ বললেন পরিচালক। আগে কখনও বেঙ্গল চেম্বারে পা রাখেননি জয় সেনগুপ্ত। উত্তেজিত অভিনেতা বললেন, ‘জায়গাটা আধুনিক বাংলার অর্থনৈতিক ইতিহাসের গর্ভগৃহ। আমার অনেকদিনের ইচ্ছে পূরণ হল।’ ‘নাইট ম্যানেজার, ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ বা ‘ইনস্পেক্টর অবিনাশ’-এর মতো হিন্দি ওয়েব সিরিজ নিয়ে ব্যস্ত জয় কলকাতায় ছুটে এসেছেন চিরঞ্জিতের সঙ্গে প্রথমবার বড়পর্দায় অভিনয় করবেন বলে। বলছিলেন, ‘এই ছবিতে আমি অতিথি শিল্পী। তবে চরিত্রটি চমৎকার। দীপকদার সঙ্গে অভিনয়ের মুহূর্তগুলো উপভোগ করলাম।’ আইপিএস রুদ্রর ভূমিকায় আছেন কিঞ্জল নন্দ। ‘যে রকম পুলিস অফিসারকে আমরা দেখি বাস্তবে, সেরকমই একজন মানুষ রুদ্র। এই ধরনের চরিত্রে প্রথম অভিনয় করছি,’ বললেন তিনি। এছাড়াও আছেন রণজয় বিষ্ণু, ঐন্দ্রিলা বসু, সৌমিতা চক্রবর্তী প্রমুখ। সুরকার লয়-দীপ। গানে রূপম ইসলাম, উজ্জয়িনী ও দেব-অরিজিৎ। প্রযোজনায় প্রাগ ফিল্ম অ্যান্ড সিনেমিডিয়া।