সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
সমস্ত সামাজিক হিংস্রতা ও অসন্তোষের লাভাস্রোত থেকে এক নাটকীয় কিশোরী চরিত্রকে বাঁচিয়ে রেখে সিনেমা তৈরির স্বপ্ন দেখে পরিচালক অনিন্দ্য (রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়)। আবার এক পরিচিত পুরুষের আত্মহত্যার খবরকে নিজেদের গল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায় লেখক-দম্পতি মৃগাঙ্ক (অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়) ও তার স্ত্রী। কিন্তু সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে দিয়ে বিপ্লব করার সংকল্প ও ঘোষণার মধ্যেই একটা বড়সড় আত্ম-প্রবঞ্চনা ও পলায়নবাদ থেকে যায়। সেই খামতির ফাঁকফোকর ভরাতেই মৃত মানুষেরা জীবিত মানুষদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মত্ত হয়ে ওঠে!
দৃশ্যকল্প রচনা এই ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ। ছবির শুরুতেই অন্ধকারে বিপদগ্রস্ত এক কিশোরীকে অনুসন্ধানরত একজোড়া পুরুষালি পায়ের ক্লোজআপ ভীষণ বাঙ্ময় হয়ে ওঠে। মধ্যবিত্ত বাঙালির জীবনের মতোই সংকীর্ণ ও সীমাবদ্ধ ঘুপচি ঘরের জানালা দিয়ে কখনও কখনও একফালি রোদ্দুর এসে ঘরগুলোর মধ্যে প্রাণসঞ্চার করে। আবার মৃত মানুষের অন্ধ সত্তাকে নগরের রাজপথে লাঠি হাতে নামতে দেখা যায়। ছবির একাধিক দৃশ্যে নির্মীয়মান দুর্গাপ্রতিমা দেখা যায়, যা নির্মীয়মান বিশ্বাস, জীবনবোধ ও বিপ্লবের দ্যোতক।
আত্মঘাতী ঋত্বিকের স্ত্রী তনিমার চরিত্রের স্বপ্ন, যন্ত্রণা ও নিয়ন্ত্রিত আবেগকে যথাযথ পরিমিতিবোধ দিয়ে নির্মাণ করেছেন বিদীপ্তা চক্রবর্তী। প্রয়াত বাদল সরকারের অশরীরী লেখক-সত্তাকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থিত করেছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। সংবেদনশীল বিষয়-ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সৌম্যঋতের মৃদু সঙ্গীত। সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিত্রগ্রহণ ও অনির্বাণ মাইতির সম্পাদনায় প্রতিটি দৃশ্য উত্তর-আধুনিক কাব্য-শরীরের মতো দর্শকমনে গভীর ছায়া বিস্তার করে। তবে, আশরাফ শিশিরের চিত্রনাট্যে সামান্য গতি-মন্থরতা আছে।
সবশেষে একটাই প্রশ্ন, যে ছবি মানুষের ক্ষয়িষ্ণু সত্তাকে বিকল্প জীবনশৈলীর অলঙ্কার উপহার দিতে চায়, তার নামকে ‘শহর’ শব্দটির মাধ্যমে সীমাবদ্ধ করা হল কেন?