মানসী নাথ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের প্রকল্প স্বচ্ছ ভারত অভিযান এবার বাংলা সিনেমায় জায়গা করে নিল। নবীন পরিচালক জিৎ চক্রবর্তীর আগামী ছবি ‘স্বচ্ছ ভারত’। মহাত্মা গান্ধীর ক্লিন নেশনের ভাবনাকে আদর্শ করে ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর গান্ধীজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল-দেশের কোণায় কোণায় স্বচ্ছতার ধারণা সুস্পষ্ট করাই ছিল এই প্রকল্পের লক্ষ্য। শুধুমাত্র প্রকল্পের মাধ্যমে গান্ধীজির ভাবনাকে দেশবাসী কতটা আত্মস্থ করলেন এই ক’বছরে নিজের ছবিতে সেই প্রশ্নই তুলতে চান নবীন পরিচালক।
তবে স্বচ্ছ ভারতের কথা থাকলেও এই ছবি রাজনৈতিক নয় বলেই দাবি করছেন পরিচালক। তাঁর কথায়, ‘ছবিটা একেবারেই রাজনৈতিক নয়। কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে এই ছবিটা কিছুই বলবে না। এটা একেবারেই আজকের সময়ের কিছু সমস্যার কথা বলবে। সেই সমস্যার প্রতিবাদও আমরা করছি না। বরং সেটা কী কারণে হচ্ছে এবং তার সমাধান করতে গিয়ে আরও কী কী সমস্যার সূত্রপাত হচ্ছে সেটাই হাসির মোড়কে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।’ এই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘স্বচ্ছতার ধারণা যিনি আমাদের মনে তৈরি করেছিলেন সেই গান্ধীজিকে, তাঁর ভাবনাকে আজ আর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি কোথায়! তিনি শুধুমাত্র ভারতীয় মুদ্রায় ছবি হয়ে আমাদের পকেটে রয়েছেন। আসলে ছবিটার মাধ্যমে তাঁর ভাবনাকেই আমরা মনে করতে চাইছি।’
পুরো ছবিটাই গান্ধীজির বয়ানে বিবৃত হবে। মুখ্য ভূমিকায় থাকছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ বসু, খরাজ মুখোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র,দর্শনা বণিক প্রমুখ। ছবির কাহিনী আবর্তিত হবে-নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর বন্ধুত্বকে কেন্দ্র করে। তবে ছবিতে কে নেতাজি এবং কেই বা জওহরলাল তা এখন খোলসা করলেন না পরিচালক। গল্পের নায়ক আবগারি দপ্তরের ঘুষ খোর অফিসার। হঠাৎই তার বিবেক জেগে ওঠে এবং তিনি ঘুষ গ্রহণে অসম্মত হন। নিজেকে স্বচ্ছ করে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। আর এরই ফলে শুরু হয় নানা বিপত্তি। ‘ছবিটা যতই মজাদার রূপে পরিবেশন করা হোক না কেন তার মধ্যেই একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে’,বললেন জিৎ। তাঁর টিমের নাম ‘আদার ব্যাপারী’। এই ছবির কাহিনী-চিত্রনাট্য লিখেছে এই টিম। যে ছবির সূত্রধর গান্ধীজি এবং গল্প নেতাজি- জওহরলালের বন্ধুত্ব কেন্দ্রিক তা যে যথেষ্ট আকর্ষণীয় হবে তেমনই মনে করছেন মুখ্য অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। বললেন, ‘ছবির বিষয়ভাবনা ও গল্প আমার বেশ ভালো লেগেছে। পরিচালক নতুন হলেও আমি আশাবাদী জিৎ ওর ভাবনা ঠিকঠাক তুলে ধরতে পারবে।’ জিতের প্রথম ছবির ‘শেষের গল্প’ বিভিন্ন উৎসবে দেখানোর পর গত বছর মুক্তি পেয়েছে। দ্বিতীয় ছবি ‘স্বচ্ছ ভারত’কে অবশ্য এখনই তিনি কোনও উৎসবে পাঠাতে চান না। ‘শেষের গল্প অনেকেই বলেছেন কঠিন ছবি। তাই এবার অন্যরকম একটা ছবি করার চেষ্টা করছি। স্বচ্ছ ভারত মজার, সকলের দেখার মতো ছবি হবে।’ সঙ্গীত পরিচালক জয় সরকার। নতুন প্রযোজনা সংস্থা এল আর পি প্রযোজিত ছবিটির কাজ শুরু হবে এই মাসের ২৫ তারিখ থেকে।