বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
ছবির কাহিনী, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সন্দীপ বললেন,‘ছবির গল্পটা লেখার পর কিরণ চরিত্রটার জন্য খুব শক্তিশালী একজন অভিনেত্রীর প্রয়োজন ছিল। বাংলা ছবি এখন পুরোটাই নায়ক নির্ভর। নারীপ্রধান ছবি খুব কমই দেখা যায়। এই ছবিটা পুরোটাই নারীপ্রধান। সেক্ষেত্রে ঋতুপর্ণাকেই আমার সেরা বলে মনে হয়েছিল। ঋতুপর্ণারও চিত্রনাট্য পড়ে ভালো লাগে। দু’পক্ষের আগ্রহেই চৌধুরী পরিবারে শামিল হলেন ঋতুপর্ণা।’ সন্দীপ আরও বলেন,‘যেহেতু নানা কারণে বাবার সঙ্গে ঋতুপর্ণার কাজ করা হয়নি, তাই উনিও আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন। আমরাও ওঁকে চেয়েছি, এই দুইয়ে মিলে একটা দারুণ ব্যাপার হল বলতে পারেন।’
ঋতুপর্ণার সঙ্গে কাজ করে তৃপ্ত সন্দীপের অভিজ্ঞতা, ‘একদমই ইগো নিয়ে থাকেন না, বেশ কো-অপারেটিভ। দ্রুত প্রোডাকশনের খুঁটিনাটির সঙ্গে মিশে যেতে পারেন। সহযোগিতা করেন। কী করলে আরও ভালো হবে, সেই নিয়ে আলোচনা আমাদের প্রত্যেকটি সিনের আগেই হতো।’
পরিবারের সবাইকে ভালো রাখতে গিয়ে মহিলাদের স্বার্থত্যাগের পরম্পরাটা চিরকালীন। অন্যের দুঃখের ভারটা তারা নিজের কাঁধে তুলে নেন। কষ্টটা মুখ বুজে মেনে নেন। ‘বিদ্রোহিনী’র কিরণ এই ধারার অনুবর্তী নয়। তার কাছে কর্তব্যটা আগে। কিরণ একজন আইপিএস। সমাজের প্রতি তার কর্তব্য আছে। সেটাকে মাথায় রেখেই এগতে চায় সে। বিয়ের আগে হবু বরকে আগাম জানিয়ে রাখে যে, তার কাছে ডিউটি আগে। এটা মেনে নিয়ে যদি সে কিরণকে বিয়ে করতে রাজি থাকে, তবে সেও রাজি। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে তার সংঘাতটা বাঁধে ঠিক এই জায়গাতেই। সংসার আর কর্তব্যে সংঘাতে কিরণ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়। এই লড়াই করার মানসিকতা সবার থেকে কিরণকে আলাদা করে দেয়।
অঞ্জন চৌধুরীর ঘরানার কতটা ছাপ বিদ্রোহিনীতে দেখতে পাওয়া যাবে? ছেলে সন্দীপের জবাব, ‘দেখুন, বাবা যা করেছেন, তা সবই ফ্যামিলি ড্রামা। তাঁর প্রতিটি ছবিতেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থাকত। এই ছবিতেও সেটাই আছে। পারিবারিক গল্প, সবাই মিলে বসে দেখতে পারবেন। দিনের শেষে এই বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, যে লড়াইয়ের পথটা কঠিন হতে পারে, কিন্তু সত্যনিষ্ঠ হলে, জয় অবধারিত।’
পরিচালকের কথাটাই প্রতিধ্বনিত হল ছবির ঋতুপর্ণা কণ্ঠে। বললেন, ‘একজন মেয়ে পুলিস অফিসার। তার পরিবার, সংসার সব আছে। তারও আগে আছে সমাজের প্রতি কর্তব্য। সেটা করত গিয়ে কীভাবে সেই মেয়েটি পরিবারের বিপক্ষে গিয়ে রুখে দাঁড়ায় সেই নিয়ে গল্প।’ শুধুই কি অঞ্জন চৌধুরীর ঘরানা? কিরণ চরিত্রটি বেছে নেওয়ার পিছনে আর কী যুক্তি থাকতে পারে ঋতুপর্ণার? এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর স্বীকারোক্তি, ‘অঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে আমার কোনও দিন কাজ করা হয়নি। ওঁর ছেলের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছিল, নিশ্চয়ই অঞ্জনবাবুর সেই ঘরানাটা পাব এবং পেয়েছিও। আমি খুশি অবশেষে চৌধুরী পরিবারে শামিল হতে পেরে।’ ব্যক্তিগত জীবনে ঋতুপর্ণা কতটা বিদ্রোহিনী? প্রশ্ন শুনে মুখে পরিচিত হাসিটা ছড়িয়ে শীর্ষ নায়িকা বলেন, ‘আমি বিদ্রোহিনী, আমার মতো করে।’ ছবির গীতিকার ও সুরকার অন্বেষা। গেয়েছেনও খান কয়েক গান। এছাড়াও প্লে-ব্যাক করেছেন রূপঙ্কর বাগচি। ছবিটি পুজোর আগেই মুক্তি পাওয়ার কথা।
ছবি সৌজন্য: নির্মল চক্রবর্তী